উঠে যাচ্ছে মার্কশিট? মোদীর মন্তব্যে জোর জল্পনা

কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতির সদর্থক দিক নিয়ে ফের সওয়াল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। দেশের নতুন শিক্ষানীতি পড়ুয়াদের স্বার্থে যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

মোদী বলেছেন, ২০২২ সালেই ভারতে শুরু হবে নতুন শিক্ষানীতি। শুধু যে সিলেবাস আমূল পাল্টে যাবে তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, বদলে যাবে মার্কশিট প্রথাও। বলেছেন, পরীক্ষা, মার্কশিট এই শব্দগুলি পড়ুয়াদের মধ্যে আতঙ্ক নিয়ে আসে। ক্রমেই মার্কশিট যেন পর্যবসিত হয়েছে প্রেশারশিটে।

মানসিক চাপে শিক্ষার্থীরা সহজভাবে শিক্ষাগ্রহণ থেকে পিছিয়ে পড়ছে। এই মার্কশিট প্রথার কারণেই বহু গুণসম্পন্ন ছাত্রছাত্রী পিছিয়ে পড়ে জীবন ও জীবিকার পথে। এই ব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার। মোদী বলেছেন, ‘প্রেশার কমাতে হবে। সেই চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে মার্কশিটের ভয়ই না থাকে।

২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষপূর্তি। সেই বছরই একবিংশ শতকের ভারত পাবে নতুন শিক্ষানীতি।’ শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রক আয়োজিত জাতীয় শিক্ষানীতি সংক্রান্ত অনুষ্ঠান ‘একবিংশ শতকের স্কুলশিক্ষা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এই প্রক্রিয়া বদলের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর ঘোষণার পরই দেশজুড়ে প্রশ্ন ও জল্পনা শুরু হয়েছে, তাহলে কি ২০২২ সাল থেকে মার্কশিট প্রথাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে? সেক্ষেত্রে পরীক্ষা ও তার যাচাই প্রক্রিয়া কীভাবে হবে?

মোদী বলেছেন, ‘চালু হবে একটি সামগ্রিক রিপোর্ট কার্ড। সেই রিপোর্ট কার্ড তৈরি হবে সিলেবাসের পাশাপাশি ব্যক্তিগত নৈপুণ্য, প্রতিভা, নিষ্ঠা, মৌলিক যোগ্যতার নিরিখে।’ মোদির বক্তব্য অনুযায়ী যদি সত্যিই মার্কশিট প্রথা বাতিল হয়ে যায়, তাহলে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েও চরম বিতর্ক হবে।

শিক্ষামন্ত্রকের উদ্যোগে আয়োজিত একটি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘স্কুল এডুকেশন কনক্লেভ’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানে মোদী জানান, কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতি ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থেই তৈরি হয়েছে। পড়ুয়াদের সিলেবাসের চাপ কমবে।

২০২২ সালের মধ্যেই নয়া শিক্ষানীতি যাতে দেশজুড়ে কার্যকর করা যায় সেব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এরই পাশাপাশি এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, দেশ-বিদেশের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের থেকে পরামর্শ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। শীঘ্রই MyGov পোর্টালে সেই সংক্রান্ত সব তথ্য আপলোড করা হবে।

নয়া শিক্ষানীতি নিয়ে বরাবরই আশাবাদী প্রধনমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর আগেও তিনি এপ্রসঙ্গে সওয়াল করে বলেছেন, ‘‘নতুন শিক্ষানীতি চাকরি প্রার্থী তৈরি করবে না। বরং এই নতুন শিক্ষা ব্যবস্থায় চাকরি তৈরি করা ও অন্যদের চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার মতো মানুষ তৈরি করা হবে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকীকরণ না ঘটালে দেশের পড়ুয়ারা আন্তর্জাতিকস্তরে পিছিয়ে পড়বেন। তাঁদের প্রতি দায়বদ্ধ দেশ। সেদিকে নজর রেখেই নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে।’’ ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষার সব স্তরে নতুন শিক্ষানীতি আমূল পরিবর্তন ঘটাবে বলেও আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.