সাংবাদিক মানব গুহর গ্রেপ্তারি নিয়ে কোন সংবাদ মাধ্যম এখনও একটাও খবর করেছে?
কোলকাতাতে তো একটা প্রেস ক্লাবও আছে, তারা কিছু বলেছে? নাকি প্রেস ক্নাব মানে শুধু সন্ধ্যেবেলায় মদ খাওয়ার আড্ডা আর চ্যানেল ধরে কিছু উপরি কামিয়ে নেওয়া?
পুলিশ সাংবাদিক মানব গুহকে গ্রেপ্তারির কারণ হিসাবে দেখিয়েছে দাঙ্গায় উস্কানি। যদিও ঠিক পরিষ্কার নয় সাংবাদিক মানব গুহ ঠিক কিভাবে মোমিনপুরের দাঙ্গায় উস্কানি দিয়েছিলেন।
সাংবাদিক মানব গুহ কি বোমা মেরেছিলেন? তিনি কি সেখানে কোন মব জড়ো করেছিলেন? নাকি তিনি সেখানে কোন উস্কানিমূলক বক্তব্য রেখেছিলেন?
এর কোনটাই সাংবাদিক মানব গুহ করেননি।তিনি শুধুমাত্র নিজের সাংবাদিক সত্ত্বার প্রতি সৎ থেকে ঘটনা তুলে ধরেছিলেন। এবার কোলকাতা পুলিশ কি বলতে চায় যে মানব গুহ যে সমস্ত ভিডিও তার প্রতিবেদনে দেখিয়েছিলেন সেগুলি ভুয়ো? যদি তা নাহয় তাহলে সত্যি দেখানো কবে থেকে অপরাধ হোল?
৪৮ ঘন্টা ধরে ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে থাকা পুলিশ নিজে নিজের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্হা নিয়েছে? কোন বিভাগীয় তদন্ত হয়েছে? কোন শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে?
আর জুবেরের মতো “সাংবাদিকের” জন্য যাদের বুক ফেটে যায়, জুবের দিনের পর দিন হিন্দু ধর্ম নিয়ে নোংরামী করার পরেও তারা আজ কোথায়? এটা কি বাকস্বাধীনতার উপরে আক্রমন নয়? এটা সাংবাদিকের কণ্ঠরোধ নয়?
পুলিশ এবং এই রাজ্যের “লোকাল গার্জেন” সিরিয়াল বুদ্ধিজীবী কাউকেই এখন খুঁজে পাওয়া যাবেনা।কারণ যেহেতু সাংবাদিক মানব গুহ হিন্দুদের উপরে হওয়া অত্যাচারের কথা তুলে ধরেছেন।
মোমিনপুর হিংসা (Mominpur Violence) নিয়ে দুতরফা লড়াই চলছে। একটি লড়াই চলছে বাস্তবের মাটিতে। যার আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে আদালতের এজলাসে। অপরটি লড়া হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে। একাধিক সংবাদ মাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়েছে মোমিনপুর হিংসার খবর। অপরদিকে একাদিক বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যম এবং ইউটিউব চ্যানেলও সরব হয়েছে এই বিষয়ে। অভিযোগ, বেশ কিছু ইউটিউব চ্যানেলের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। এই বিষয়েই এবার সরব হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
এদিন নিজের ফেসবুক একাউন্ট থেকে নন্দীগ্রামের সাংসদ লেখেন, ‘১৩ বছর আগে ২০০৯-এ ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল থানায় হামলা চালায় মাওবাদীরা। কার্যত থানার দখল নেওয়ার পরে দু’জন পুলিশকর্মীকে হত্যা করে তারা, সরকারি অস্ত্রশস্ত্র লুট করে ও অপহরণ করে ওসি অতীন্দ্রনাথ দত্তকে। দু’দিন পর লালগড়ের ভুলাগাড়ার জঙ্গলে তাঁকে ‘যুদ্ধবন্দি’ ঘোষণা করে (ওসির বুকে কাগজ মাড়িয়ে) মুক্তি দেওয়া হয়।
আপনারা ভাবছেন যে হঠাৎ করে এই পুরনো কথা আলোচনা করছি কেন?
এই কারণে করছি কারণ তখন এই বিষয়ে খবর ছাপার জন্যে অথবা ‘যুদ্ধবন্দি’ ওসির ছবি ক্যামেরাবন্দি করার জন্যে কিন্তু সংবাদমাধ্যমের কোনো প্রতিনিধিকে গ্রেফতার হতে হয় নি অথবা কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় নি।’
এরপর, মোমিনপুরের ঘটনা উল্লেখ করে শুভেন্দু লেখেন, ‘সম্প্রতি কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে লক্ষ্মী পুজোর সময় মোমিনপুরে তাণ্ডব চালানোর পরে এক বিশেষ সম্প্রদায়ের দুষ্কৃতীরা (একাংশ, যাদের কুকীর্তির জন্য পুরো সম্প্রদায় কে কালিমালিপ্ত হতে হয় প্রায়শই) প্রত্যন্ত জঙ্গলমহলে নয়, একেবারে খাস কলকাতা শহরের মধ্যস্থলে অবস্থিত একবালপুর থানার দখল নিয়ে নেয়। মেরুদণ্ডহীন মমতা-পুলিস নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে থানা থেকে পালায়।’
তিনি এদিন আরও লেখেন, ‘এই খবরটি জনসমক্ষে তুলে ধরার জন্য ও এই সংক্রান্ত ভিডিও গুলি শেয়ার করার “অপরাধে” গ্রেফতার করা হয় সোশ্যাল মিডিয়া সাংবাদিক মানব গুহ কে।
আমি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, এই বিষয়ে আমার অবস্থান স্পষ্ট করে জানাচ্ছি, যে সকল সোশ্যাল মিডিয়া সাংবাদিক যেমন মানব গুহ অথবা ওনার মতোই অন্যেরা যেমন পৌলমী নাগ, যাঁরা সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, চোখে চোখ রেখে সততার সঙ্গে সাংবাদিকতা করছেন এবং এমন সব খবর জনগণের সামনে উপস্থাপন করছেন যা মূল ধারার সংবাদমাধ্যম করতে সাহস পায় না, তাদের প্রতি আমার সমর্থন সর্বদা বজায় থাকবে। ওনাদের লড়াই কে আমার কুর্নিশ জানাই ও ওনাদের প্রতি আমার সক্রিয় সমর্থন সর্বদা অটুট থাকবে।’