কলকাতা, ১৫ জুন (হি স)। সত্যজিৎ রায় তখনই বুঝেছিলেন ব্যাপারটা। এই মন্তব্য করে নেটানাগরিক উপহার দিয়েছেন ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’-এর সেই বিখ্যাত ছবি। যেখানে গুপি-বাঘার পরস্পরের হাতের ছোঁয়া, সঙ্গে সেই গান— ‘যেখানে খুশি যাইতে পারি’। ৫২ বছর আগের সেই দৃশ্য উঠে এল সামাজিক মাধ্যমের পাতায়। সৌজন্যে ‘কার্যত লকডাউন’-এর বিধি।
১ জুলাই পর্যন্ত রাজ্য বহাল করোনা সংক্রান্ত বিধি নিষেধ। স্টাফ স্পেশাল ট্রেন ছাড়া বন্ধই থাকছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। বন্ধ থাকছে অন্যান্য গণপরিবহন। অথচ, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত খোলা থাকবে ব্যাঙ্ক। লোকে গন্তব্যে যাবে কী করে? নেটিজেনদের ভাবনায় প্রশ্নটা এসেছে নানাভাবে। তারই অন্যতম ‘গুগাবাবা’-র এই ছবি।
১৯৬৯-এ প্রকাশ পেয়েছিল সত্যজিৎ রায়ের এই ছবি। করোনাকালে কোন ছবি দেখানোর কথা আপনার মাথায় আসে? এই প্রশ্নের জবাবে মিনার-বিজলী-ছবিঘর’-এর কর্ণধার সুরঞ্জন পালের জবাব, “তাঁর তুরুপের তাস হতো বিনোদন মূলক ছবি গুলোর উপর। ‘মজার ছবির কোনও বিকল্প নেই। আমার মনে হয় না ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’-এর থেকে বিনোদন মূলক কোনও ছবি হতে পারে না। তাই অবশ্যই ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ চালাতাম।“
আবার এক নেটিজেন ফেসবুকে অভিনেতা প্রসেনজিতের আবেগঘন একটি ছবি পেশ করে তাঁর মুখে বসিয়েছেন, “মা ওরা তো একটা দিন বাস-ট্রেন চালাতে পারতো,তাহলে আমি আমার প্রথম জামাইষষ্ঠিটা খেয়ে আসতে পারতাম।“
পন্ডিতরাও নেমে পড়েছেন রঙ্গরসিকতায়। বিজ্ঞানী ডঃ কল্যাণ কুমার ভট্টাচার্য ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, “আসলে ও’দলের লোকেদের অফিস কারখানা,ব্যবসায় যেতে হয় না। গলির মোড়ে, ক্লাবের সামনে বেঞ্চ, চেয়ার পেতে বসলেই আমদানি। সকালে খালি বোতল সাজানো।“
অপর পোস্টে তিনি লিখেছেন, “মনে হয় ৭৫-২৫% এর মধ্যে তৃণমূলের ৭৫%। তাদের অফিসে যেতে হবে না। কাজেই তাদের যান বাহনের দরকার নেই।“ হাজিরার পরিমাণ ২৫ শতাংশের নির্দেশকে এভাবে দেখেছেন তিনি। তৃতীয় পোস্টে কল্যাণবাবু লিখেছেন, “গণপরিবহন নেই অথচ অফিস খোলা। ডা. শান্তনু সেনের দারুন জবাব। বিধান সভায় “শূণ্য পাওয়া দলের লোকেরা এমনই বলে”। হায়রে যুক্তি!“
বিশ্বখ্যাত একাধিক নামী সংস্থার প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ম্যানেজমেন্ট বিশারদ রূপেন্দ্র নারায়ণ রায় লিখেছেন,
“খাওয়ার রুটি নেই রানীমা ! আঁতোয়ানেত : কেক খাও !! বাস ট্রাম নেই অফিস যাব কেমনে ?
রানীমা : বাইকে যা ! অথবা গাড়ি কেনো !“
কার্তিক মন্ডল লিখেছেন, “আমরা ব্যাংককর্মীরা গত দেড়বছর ধরে এভাবেই যাচ্ছি।“ অর্ণব গাঙ্গুলি লিখেছেন, “দিদির নাম নিয়ে একটা হনুমতীর মত লাফ দিন।“ এক নেটিজেন একটা লম্বা ঝাড়ুর ছবি দিয়ে লিখেছেন, “এই লকডাউনে অফিস, শপিং মল, রেস্তোঁরা যেখানে যাবেন, চেপে বসুন”।
ব্রাহ্ম সমাজ সম্মিলনীর সচিব, একটি নামী সংস্থার প্রাক্তন আধিকারিক অনিরুদ্ধ রক্ষিত আবার ফেসবুকে পেশ করেছেন হাতে হাত ধরা কিছু উড়ন্ত অফিসযাত্রীর ছবি। ক্যাপশন ’১৬ তারিখ থেকে সবাই যেভাবে কাজে যাবে’।
নবনীতা সরকার লিখেছেন, “বার, রেস্টুরেন্ট, শপিংমল খোলা কিন্তু যানবাহন পুরোপুরি বন্ধ, আলাদিনের উড়ন্ত গালিচা আমাজন, ফ্লিপকার্টে পাবো?“
http://bengali.hindusthansamachar.in/NewsDetail?q=d7e66c556d4f37355d48c2bf205becab