হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশনের (এইচএফএফ) একটি নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ইসলামী প্রজাতান্ত্রিক পাকিস্তানে অভূতপূর্বভাবে মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতার অ মবনতি অব্যাহত রয়েছে। হিন্দুস ইন পাকিস্তান: অ্যা সার্ভে অফ হিউম্যান রাইটস (২০২০) অনুযায়ী পাকিস্তানের মানবাধিকার ব্যাপকহারে লঙ্ঘন করা হচ্ছে এবং রাষ্ট্র বহির্ভূত অভিনেতারা এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারটি সহ্য করে চলেছেন।
“বিশেষত সংখ্যালঘু মহিলাদের সাথে এমন আচরণ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের নিয়ম ও মৌলিক মানবিক মর্যাদার প্রতি পাকিস্তানের তীব্র অবজ্ঞার প্রতীক”— এইচএফএফ পরিচালক অধিকর্তা ও এই রিপোর্টের লেখক সমীর কাইরা এটাই মনে করেন। তিনি আরও বলেছেন যে ” প্রতি বছর সরকার অলসভাবে বসে বসে দেখছে কিভাবে কমপক্ষে ১০০০জন হিন্দু ও খ্রিস্টান মেয়েদের তাদের পরিবার থেকে চুরি করে জোর করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করানো হয় এবং তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে করা হয়”।
সংখ্যালঘু মেয়েদের জোর করে অপহরণ এবং তাদের ধর্মান্তরিত করে তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা, শুধু তাই নয়, সংখ্যালঘুদের উপর নির্মম নির্যাতন এবং তাদের উপাসনালয় নষ্ট করার মতো ঘটনা মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরকে বাধ্য করছে পাকিস্তানকে ” নিরবিচ্ছিন্নভাবে নিয়মকরে ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণের” পীঠস্থান বলে পরিগণিত করা হয়েছে।
এই ব্যাপকহারে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের হাত থেকে বাঁচার জন্য বহু হিন্দু,শিখ, খ্রিস্টান এবং আহমেদিয়া মুসলমানরা গত কয়েক বছর ধরে ক্রমবর্ধমান হারে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। পাকিস্তান, আফগানিস্তান এমনকি বাংলাদেশ থেকে বছরে বহুসংখ্যক ধর্মীয় শরনার্থী ভারতে আসতে থাকে। তাদের মানসিক নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচিয়ে ভারতীয় নাগরিকত্ব, ত্রাণ সরবরাহের জন্য ২০১৯সালে ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ করানো হয়।
কালরা বলেছেন যে “ধর্মীয় উগ্ৰবাদ এবং বৈষম্যের ক্ষেত্রে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মারাত্মক সঙ্কটে ফেলেছে”। সাথে তিনি এটাও বলেন যে ” আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের কথা মনে করিয়ে পাকিস্তান ও পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের একটা কড়া বার্তা দেওয়া”।
ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন ছাড়াও, সন্ত্রাস এবং উগ্ৰবাদীদের প্রতি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সমর্থন এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার দমনের ঘটনা নিরবিচ্ছিন্নভাবে অব্যাহত রয়েছে। মানবাধিকার কমিশন ও তাদের কর্মীদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানে চলতে থাকা অপহরণ, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, স্বেচ্ছাসেবকদের আটকে রাখে কাজে বাধা প্রদান করা তাদের রাজনৈতিক ও জাতিগত অধিকার খর্ব করে নির্যাতনের বহু অভিযোগ জমা হয়েছে।