কলকাতার (Kolkata) সাদার্ন এভিন্যু (Southern Avenue) ঘেঁসা কেয়াতলার (Kayatala) এক বাড়ীর একতলায় থাকে প্রৌঢ়া হেমা হারিদাস (Hema Haridas) , আর তার স্বামী। মালায়ালী এবং well connected. এখানকার মালায়ালী IAS, IPS এমন কি কয়েক বছর আগে পশ্চিমবাংলার মালায়ালী রাজপালের স্ত্রীকেও বহুবার হেনার বাড়ীতে আসতে দেখেছি। ওদের মেয়ে Seattle এ থাকে। বছর বছর বাবা, মা US যায়, কয়েক মাস কাটাতে। এসে ছবি দেখায়, Disney, Alaska Cruise। তিমির ভুসস্…
সপ্তাহ খানেক আগে হেমার কিছু অসুবিধে হলো, চার দিন আগে বাড়াবাড়ি হয়ে গেলো। গত ২৭শে, দুপুরের দিকে শুনশান্ পাড়ায় সাইরেন চমকে ambulance এসে দাঁড়ালো কেয়াতলার বাড়ীর সামনে। আর একটা গাড়ীতে এলো হাইকোর্টের এক মালায়ালী উকিল। পারিবারিক বন্ধু, বিপদের সময় পাশে এসেছে। অসুস্থ রোগী হেমা, তার বৃদ্ধ স্বামীকে নিয়ে ambulance, আর সঙ্গে একটা গাড়ীতে হাই কোর্টের উকিল ছয় ঘন্টা ধরে কলকাতার তাবৎ বড় তারপর মেজো private hospital এ চষে বেড়ালো একটা bed এর জন্য। একটু চিকিৎসার জন্য। ছয় ঘন্টা পর তারা Tollygunj এ এক notorious সরকারী হাসপাতালের gate এ পৌঁছালো মূমুর্ষু হেমাকে নিয়ে। আরও ঘন্টা খানেক পর বেড পেলো রোগী।
গত ২৮শে দুপুরে বাড়ীতে একটা ফোন এলো। এবার হেমার হাইকোর্টের উকিল বন্ধু আসতে পারেনি। বললো পিঠে ব্যাথা। বৃদ্ধ উদ্বিগ্ন স্বামী গেলেন তড়িঘড়ি করে। সরকারী হাসপাতাল বললো সাড়ে তিনটের সময় রোগী মারা গেছে। কি ভাবে এখনই বলা যাবেনা। report ‘উপরে’ গেছে। আপনি পরে আসুন। পরের দিন অর্থাৎ ২৮শে সকালে মৃত হেমার বৃদ্ধ স্বামী আবার গেলো। সকাল দুপুর গড়িয়ে যেতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার চালিত সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে জানালো ‘উপর’ থেকে report এখনো আসেনি। মৃত্যূর কারন বা মৃতদেহ কোনটাই দেওয়া যাবেনা। আপনি পরে আসুন।
বাহাত্তর বছরের অসুস্থ বৃদ্ধ সদ্য স্ত্রী হারা হেমার স্বামী গতকাল ২৯শে এপ্রিল আবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিচালিত বাঙ্গুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গেলেন। সারাদিন বসে থাকার পর হাসপাতাল থেকে জানালো। হেমা হারিদাসের death certificate ‘উপর’ থেকে clearance পায়নি। তাই কাগজ বা মৃতদেহ কোনটাই ছাড়া যাবেনা।
আজ ৩০শে এপ্রিল। হেমার স্বামী কেয়াতলার বাড়ীতে সম্পূর্ণ একা বসে তৃতীয় দিন অপেক্ষা করছে। আর হেমা হিম ঘরে শুয়ে আছে তার সৎকারের জন্য। ৩০শে এপ্রিল দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে। পশ্চিমবাংলার উপর মহল এখনো clearance দেয়নি, হেমা কেন মারা গেলো।
অমিতাভ বসু (Amitabh Basu)