নরেন্দ্র মোদীর ডাকা বৈঠকে যাবে না বলে জানিয়ে দিল কংগ্রেস, অকালি দল। পেগাসাস অ্যাপের মাধ্যমে নেতা, মন্ত্রী, সাংবাদিকদের ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ নিয়ে শাসক-বিরোধী সংঘাতের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী মোদী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশের কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে ব্রিফ করবেন বলে খবর ছিল। সোমবারই তিনি সংসদে সব দলের ফ্লোর নেতাদের আজ সন্ধ্যা ৬টার বৈঠকে হাজির থাকার আবেদন করেন। কিন্তু রাজ্যসভায় কংগ্রেসের নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে জানান, কংগ্রেস যাচ্ছে না। তাঁকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থার খবর, শুধু ফ্লোর নেতাদের নয়, আমরা বলেছি, সব সাংসদকে ডাকা হোক সেন্ট্রাল হলে। সবাইকে বলতে হবে। আমরা বলেছিলাম, ২টো ভাগে এটা করা হোক। আমরা ওখানে যাচ্ছি না, প্রত্যেকেরই কোভিড পরিস্থিতি জানা উচিত। আর অকালি প্রধান সুখবীর সিং বাদলকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা বলেছে, আমরা এমন বৈঠকে যাব একমাত্র প্রধানমন্ত্রী কৃষি সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য ডাকলেই। তিনটি কেন্দ্রীয় কৃষি আইন সংসদে পাশ হওয়ার প্রতিবাদে গত বছর বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করেছে পুরানো শরিক অকালি দল।
জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব সন্ধ্যা ৬টার বৈঠকে ভাষণ দেবেন, মহামারী সংক্রান্ত উপস্থাপনা পেশ করবেন, কীভাবে তার মোকাবিলা করা হচ্ছে, বিস্তারিত জানাবেন। তার আগেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মানবিয়া বলেছেন, আমরা যখন তৃতীয় ঢেউয়ের কথা বলি, তখন ১৩০ কোটি জনগণকেই একযোগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, দেশে তৃতীয় ঢেউ হতে দেব না। আমাদের কঠোর মনোভাবে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর দেখানো পথে তৃতীয় ঢেউ থেকে বাঁচতে পারি আমরা।
এদিকে বিজেপি সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী দলীয় এমপিদের বিরোধী শিবিরের প্রচার ভোঁতা করে পাল্টা প্রচারে নামার ডাক দিয়েছেন। কোভিড সমস্যা রাজনৈতিক নয়, মানবিক বিষয় বলে উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, মহামারীর সময় কেউ অভুক্ত থাকবে না, তাঁর সরকার এটা সুনিশ্চিত করেছে।
তাঁকে উদ্ধৃত করে সংসদ বিষয়কমন্ত্রী প্রহ্লাদ পটেল বলেন, এমন মহামারী দুনিয়ায় দীর্ঘদিন পরই আসে। প্রধানমন্ত্রী এও বলেছেন, একজনও পেটে খিদে নিয়ে ঘুমোতে যাবে না, তা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। মহামারী সত্ত্বেও জনসাধারণের একটা বড় অংশ রেশন পেয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। সাংসদদের আরও বলেন, মানুষকে ত্রাণ, সাহায্যের বন্দোবস্ত করা তাঁদের দায়িত্ব, তাঁরা কাউকে দয়া করছেন না।
প্রধানমন্ত্রী বিরোধী শিবিরের, বিশেষতঃ কংগ্রেসের মনোভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ওরা আজও বিশ্বাস করে, ওদের ক্ষমতায় থাকার অধিকার আছে! তিনি বলেন, সরকার উভয় কক্ষেই আলোচনায় বসতে তৈরি, কিন্তু বিরোধীরা সবচেয়ে বেশি দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করছেন। সূত্রের খবর, মোদী বিজেপি সাংসদদের সরকারের কোভিড মোকাবিলার পন্থা, কৌশল ও ভ্যাকসিন সরবরাহ নিয়ে সমালোচনার মোক্ষম জবাব দিতে বলেন। সাংসদদের তিনি বলেন, কোভিড ১৯ এর তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা মাথায় রেখে তাঁদের তৈরি থাকা, ময়দানে নামার প্রস্তুতি নিয়ে রাখা উচিত।
কোভিড ভ্যাকসিনের টিকাকরণ কর্মসূচি প্রসঙ্গেও মোদী জোর দিয়ে বলেন, নিজ নিজ সংসদীয় কেন্দ্রে যাতে কোনও বাধাবিঘ্ন ছাড়াই ভ্যাকসিন দেওয়া যায়, তা সুনিশ্চিত করুন এমপিরা।
বিরোধীরা মোদী সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে অভিযোগ করছে, কোভিড ১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ রুখতে চূড়ান্ত অব্যবস্থার নিদর্শন রেখেছে তারা। সংসদে এ ব্যাপারে সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়েছে বিরোধীরা।