দিল্লি জুড়ে কৃষক বিক্ষোভের মাঝেই দেশের ৯ কোটি কৃষককে বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর স্মৃতির উদ্দ্যেশ্যে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে এই বার্তা দেবেন মোদী। জানা গিয়েছে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৯ কোটি কৃষকের সামনে বক্তব্য রাখবেন তিনি।
দেশের ৬টি রাজ্যের ৯ কোটিরও বেশি কৃষক এই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির পরবর্তী আর্থিক প্যাকেজ বা সহায়তার কথা ঘোষণা করতে পারেন মোদী।
মোদীর এই ভার্চুয়াল সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, নেতা ও সাংসদ। থাকবেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ, সড়ক উন্নয়ন মন্ত্রী নীতীন গডকড়ী, খাদ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল, বস্ত্র মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, জল শক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত, আইন মন্ত্রী রবি শংকর প্রসাদ, জেনারেল ভি কে সিং-এর মতো মন্ত্রীরা।
এনডিটিভির সূত্র জানাচ্ছে, বিভিন্ন এলাকায় যেখানে মোদীর বার্তা সম্প্রচার করার কথা রয়েছে, সেখানে বড় বড় টিভি স্ক্রিন লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার বিডিও অফিস থেকে মোদীর বার্তা সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিষাণ মান্ডিগুলিতেও পৌঁছে দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা। বিলি করা হয়েছে বিশেষ লিফলেট, মোদীর বার্তা স্থানীয় ভাষায় অনুবাদ করে সম্প্রচারিত হবে বলে খবর।
এদিকে, বিক্ষোভ চলছে দিল্লি জুড়ে। সারা দেশ থেকে আসছে সমর্থন। এরই মাঝে সম্প্রীতির সুর বিক্ষোভের মঞ্চে। পঞ্জাবের মালেরকোটলার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ খাবার নিয়ে এসে বিক্ষোভরত কৃষকদের পাশে দাঁড়ালেন। বৃহস্পতিবার দিল্লির সিঙ্ঘু সীমান্তে শিখ সম্প্রদায়ের কৃষকদের জন্য জর্দা পোলাও বানিয়ে সরবরাহ করলেন মুসলিমরা। পঞ্জাবের সাংগ্রুর জেলার মালেরকোটা এলাকা মূলত মুসলিম অধ্যুষিত। সেখান থেকেই একদল মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ নিজের হাতে দিল্লির সিঙ্ঘু সীমান্তের বিক্ষোভরত কৃষকদের খাওয়ালেন। সেই ছবি ভারতের প্রতিটি সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
অন্য ছবিও রয়েছে। প্রতিবাদের রাস্তা যত চওড়া হচ্ছে, কৃষি বিলের সমর্থনেও সুর চড়াচ্ছে বেশ কয়েকটি কৃষক সংগঠন। কেন্দ্রের বিতর্কিত কৃষি বিলের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন পঞ্জাব-হরিয়ানার কৃষকরা। সেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে গলি থেকে রাজপথ।
তবে বিক্ষোভের বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কিষাণ সেনার পক্ষ থেকে ২০ হাজার কৃষক দিল্লি যান। তাঁদের দাবি যাঁরা বিক্ষোভ করছেন, তাঁরা গোটা দেশের কৃষক সমাজের প্রতিনিধি নন। উত্তরপ্রদেশের ব্রজ, মথুরা, আগ্রা, ফিরোজাবাদ, হাথরাসের কৃষকরা এদিন যোগ দেন বিক্ষোভ বিরোধী মিছিলে। কিষাণ সেনার অন্যান্য সংগঠন যেমন মেরঠ ও মুজফফরনগর জেলার কৃষকরাও সামিল হন এদিন।