লকডাউনের মধ্যে একটা মন্দের ভালো খবর বাংলা পক্ষের গর্গ চ্যাটার্জী (Gorg Chatterjee) ও তার এক সহযোদ্ধাকে লালবাজার গ্রেপ্তার করেছে। কারণটা তুচ্ছ। এর আগে সরাসরি ভারত (India) থেকে পশ্চিমবঙ্গকে (West Bengal) বিচ্ছিন্ন করার নানা উস্কানি দিয়েও বহাল তবিয়তে নিজেদের বেপরোয়া বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছিল। বাংলার স্বনিয়োজিত এই শুভ চিন্তকরা একদিকে যেমন পশ্চিমবঙ্গে বাঙালির চাকরিতে অগ্রাধিকার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডোমেসাইল নীতি দ্বারা অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও ভূমিসন্তানদের সুযোগ সুরক্ষিত করা, প্রতিটি দোকানে বাংলা সাইনবোর্ড বাধ্যতামূলক করা, অবাঙালি পশ্চিমবঙ্গবাসীদের রাজ্য সরকারের চাকরি পেতে বাংলা শেখা আবশ্যিক করা ইত্যাদি ইতিবাচক অ্যাজেন্ডার মাধ্যমে এই রাজ্যে বাংলা পক্ষ সংগঠনটি যথেষ্ট জনপ্রিয়তা লাভ করছিল; তেমন একই সঙ্গে প্রবল অবাঙালি বিদ্বেষ ও পশ্চিমবঙ্গকে ভারতের হিন্দিভাষী অংশ থেকে, হিন্দু সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখানোর চেষ্টাও করে গেছে অবাধে। এদের স্লোগান জয় বাংলা যা বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান। এই নারা চয়নের মাধ্যমে নিজের প্রকৃত অভিপ্রায় এক প্রকার বুঝিয়েই দিয়েছেন। গর্গর ফেসবুকের টাইমলাইনে একদা বিরাজ করত বৃহত্তর বাংলাদেশের স্বপ্নের মানচিত্র। তবে পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রী ও যুবসমাজের পড়াশুনো ও কর্মসংস্থানে রাজ্যস্তরে সংরক্ষণ ও সুরক্ষা চেয়ে ও তৎসহ সমস্ত বঙ্গবাসীকে বাংলা শেখায় অনুপ্রেরণা দিয়ে বাংলা ও বাঙালির হিতসাধক হিসাবে নিজেদের বিশ্বস্ততাও বাড়াতে সমর্থ হয়েছে।
নিজেকে তৃণমূলের (Trinamool) সমর্থক ও কর্মী বলে পরিচয় দেয় মাঝেমাঝে যদিও হিন্দু বিদ্বেষে বামপন্থীও ভাবা যায়। যাইহোক, মহতরমার দুধেল গোরু মূলত পাকিস্তানপন্থী বা বাংলাদেশপন্থী হলেও এ রাজ্যের বিশাল সংখ্যক হিন্দু হিন্দিভাষীরাও একটা ভোটব্যাঙ্ক যেখানে গেরুয়া শিবিরের কিছুটা প্রভাব আছে। বাঙালি হিন্দুর মতো বহুধাবিভক্ত নয় এরা। তাই এক টেলিভিশন সাক্ষাত্কারে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল অসৎ মাড়োয়ারি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করবে কিনা জানতে চেয়ে কেন্দ্রীয় দলটি আগমণের বিরোধিতা করে মাননীয়ার প্রিয় হতে গিয়ে হিতে বিপরীত হয়েছে। মানে জাত তুলে কটূক্তি ও মান হানির দায়ে আপাতত হাজতে।
জাত তুলে বিহারীর বাচ্চা, গুটখা খোরের বাচ্চা, ধোকলা খোরের দল, গজ্জুর বাচ্চা ইত্যাদি অসম্মানজনক কথা এমনকি রীতিমতো অশালীন গালাগাল দিয়েও গর্গ চ্যাটার্জী (Gorg Chatterjee) ও তার সহযোদ্ধারা বাংলার হিতসাধনের ব্রত পালন করছিল। ক্ষোভটা তাই জমেই ছিল। এখন মাড়োয়ারি ব্যবসায়ীদের অসৎ বলে বোলতার চাকে ঢিল মেরে ফেলেছে।
তবে যে ধারায় গ্রেফতার তা জামিন অযোগ্য নয়। সুতরাং হাজতবাসের মেয়াদ কত দিন বা ক ঘণ্টা সেটা বোঝা যাচ্ছে দেশ ও রাষ্ট্র বিরোধী কার্যকলাপের জন্য যেভাবে প্রকৃত বাঙ্গালীদের একাংশ ক্ষুব্ধ ছিল, এই গ্রেপ্তার তাদের ঝুমজুমি দিয়ে ভুলিয়ে শান্ত করার কৌশলও হতে পারে।
দর্পণা রায়