কল্যাণচক্রবর্তী
“সেকালে মেয়েদের পায়ের ছোঁয়া লেগে ফুল ধরত অশোকে, মুখমদের ছিটে পেলে বকুল উঠত ফুটে, আমার বাগানে সেই কালিদাসের কাল দিয়েছে ধরা” (মালঞ্চ উপন্যাস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)। ভারতীয় সংস্কৃতিতে অশোক ফুল হচ্ছে প্রেমের প্রতীক , তাই কামদেবের পঞ্চশরের অন্যতম শর অশোক মঞ্জরী, যে বাণে বিদ্ধ করা যায় নারী অথবা পুরুষের প্রেম-মনন। অশোকের ফুলের অনবদ্য রঙ কখন নিজের মনকে রাঙিয়ে দিয়ে যায়,
‘ তোমার অশোকে কিংশুকে
অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার
অকারণের সুখে।’
ফাগুনের বসন্তে অশোকের ফুল ফোটে, তাই ১ লা ফাল্গুন হোক ভারতীয় প্রেমের দিন, অশোকপরশ, Asoca Day।
অশোক ফুলের আদিনিবাস ভারতবর্ষ। এটি ভারতবর্ষের স্বাভাবিক উদ্ভিদ। ভারতের কুসুমোদ্যানে তার অমল উপস্থিতি।
অশোক গাছের উদ্ভিদবিদ্যাগত নাম Saraca asoca , এটি Fabaceae গোত্রের উদ্ভিদ। এরই অন্য নাম হেমাপুষ্প কিংবা মধুপুষ্প । রামায়ণে উল্লেখ্য আছে রাবণ সীতাকে বিবাহ করবার উদ্দেশ্যে হরণ করে অশোক কাননে রেখেছিল, যাতে সীতার হৃদয়ে প্রেমের উদ্রেক ঘটে। হিন্দু বিশ্বাস, অশোক ফুল শোক নাশ করে, তাই এর নাম অশোক। অশোক গুচ্ছ উপহার দিয়েই তাই প্রেমের জোয়ারে ভাসুন, প্রেমের আনন্দের সঙ্গে দূরে যাক যাবতীয় দুঃখ-শোক। প্রেম জয়ী হোক, সফল হোক, চিরস্থায়ী হোক। আর প্রেমসম্ভোগের কারণে আবির্ভূত সন্তানের সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ হোক। তাই তো চৈত্র মাসের শুক্লাষষ্ঠীতে মায়েরা *সন্তানের কল্যাণ কামনা করে অশোক ফুল দিয়ে পূজা করেন, একে অশোকষষ্ঠী বলে। চৈত্রের শুক্লাঅষ্টমীতে পালিত হয় অশোকাষ্টমী। দু’টি দিনই বসন্তের ঋতুতে।