কোভিড রোগীর মৃত্যু যেখানেই হোক, ডেথ সার্টিফিকেটে করোনার উল্লেখ থাকবেই, সুপ্রিম কোর্টে প্রতিশ্রুতি কেন্দ্রের

করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু যেখানেই হোক না কেন, তিনি হাসপাতালে ভর্তি থাকুন বা বাড়িতেই মারা যান, তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে করোনা সংক্রমণ উল্লেখ করতেই হবে। একজনের সার্টিফিকেটেও এর অন্যথা হবে না।

গতকাল, শনিবার মধ্যরাতে সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই প্রতিশ্রুতি দিল কেন্দ্র। এই সংক্রান্ত ১৮৩ পাতার একটি এফিডেভিটও জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।


বিষয়টির সূত্রপাত কয়েকদিন আগে। সংবাদমাধ্যমে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় বারবারই দাবি করা হচ্ছিল, দেশের কোভিড মৃত্যুর পরিসংখ্যানে বড় গড়মিল রয়েছে। দেশের অন্তত ৬টি রাজ্যে করোনায় মৃতদের যে হিসেব দেখানো হচ্ছে, তাতে অসামঞ্জস্য রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও রুজু করা হয়। তার শুনানিতেই কেন্দ্রের তরফে এমন আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

শুধু তাই নয়, ওই মামলায় কেন্দ্র এও জানিয়েছে, যে সমস্ত চিকিৎসকরা এতদিন করোনায় মৃতের শংসাপত্রে করোনা উল্লেখ করেননি, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে সরকার।

বস্তুত, এতদিন পর্যন্ত একমাত্র হাসপাতালে করোনায় মৃতদের শংসাপত্রেই করোনায় মৃত বলে উল্লেখ করা হচ্ছিল। বাড়িতে, কিংবা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে, বা হাসপাতালের কোরিডোরে শুয়ে যাঁরা করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের কোনও নাম করোয়া মৃতদের তালিকায় নথিভুক্ত করা হয়নি। এর ফলে দেশজুড়ে করোনায় মৃতদের পরিসংখ্যানে বড় খামতি থেকে গিয়েছে।

অভিযোগ, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্নাটক ও দিল্লিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা আসলে অনেক বেশি। কেন্দ্রের হিসেব তার ধারেকাছেও নয়। কিছুদিন আগে প্রকাশিত একটি বেসরকারি সংস্থার তথ্যে দেখা গিয়েছে, এই ৫ রাজ্যে শুধু করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪.৮ লক্ষ।

আবার গতকাল বিহারে প্রকাশিত একটি তথ্যে দেখা গিয়েছে, রাজ্যে প্রায় ৭৫ হাজার মৃতের শংসাপত্রে কী কারণে মৃত্যু তা উল্লেখ করা হয়নি। সেগুলি সবই কোভিড বলে দাবিয় ফলে বিহারের সরকারি হিসেব থেকে এই মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় দশগুণ বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টকে আরও জানিয়েছে, কোভিডে মৃত্যু হলে সরকারি সাহায্য করার কথা। তবে প্রত্যেক পরিবারকে সাহায্য করার সামর্থ্য সরকারের নেই। এই সবটা জানিয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা সুপ্রিম কোর্টে যে ১৮৩ পাতার হলফনামা জমা দিয়েছেন, তাতে কেন্দ্রের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ভারতে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ৩ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়বে। সব মিলিয়ে কেন্দ্রের উপর মারাত্মক আর্থিক চাপ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সমস্ত কোভিড মৃত পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া সম্ভব নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.