লক্ষ্য ছিল, বহুদিনের লাল দুর্গে চিড় ধরে ভিত নড়িয়ে দেওয়া। প্রাথমিক ভাবে সেই লক্ষ্য সম্পূর্ণ হয়েছে। এবার যাদবপুরের লাল মাটিতে পদ্ম ফোটাতে সর্বশক্তি দিয়ে যাদবপুরের ছাত্রভোটে লড়াই এবিভিপি এবং এসএফআইয়ের। নিজেদের দুর্গ অক্ষুন্ন রাখতে চেষ্টার কসুর করছে না বামফ্রন্টও।
৩ বছর পর যাদবপুরে হচ্ছে ছাত্রভোট। মঙ্গলবার থেকেই ক্যাম্পাসগুলি ছেয়ে গিয়েছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের পোস্টার ও ব্যানারে। এই প্রথমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনের কেন্দ্রীয় প্যানেলে প্রার্থী দিয়েছে আরএসএসের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। এর আগে কখনও দলীয় প্রতীকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ভোটে সরাসরি লড়াইয়ে নামেনি এবিভিপি। জাতীয়তাবাদী সংগঠনের আড়ালে একটি বা দুটি আসনেই লড়াই সীমাবদ্ধ থেকেছে ভোটযুদ্ধ। লোকসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপির উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে এবার যাদবপুরেও এবার ঢুকে পড়ল গেরুয়া হাওয়া। প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি এবং একাধিক বামপন্থী ছাত্র সংগঠন। প্রার্থী দিয়েছে নকশালপন্থী সংগঠনগুলিও।
কলা, বিজ্ঞান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং, তিনটি ফ্যাকাল্টিতেই একসঙ্গে হচ্ছে নির্বাচন। বুধবার সকাল থেকে নির্বিঘ্নেই চলছে ভোটগ্রহণ। এর মধ্যে সায়েন্স বাদে বাকি দুই ফ্যাকাল্টিতে প্রার্থী দিয়েছে এবিভিপি। ইতিমধ্যেই, পড়ুয়াদের শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। তিনি একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, যাদবপুরের ঐতিহ্য যেন ক্ষুণ্ণ না হয়। শেষবারের ছাত্রভোটে নির্দল হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এবার সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যাচ্ছে এবিভিপি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন জেএনইউ, জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনের মতই গুরুত্বপূর্ণ। নজর রাখবে গোটা দেশ। সম্প্রতি, সিএএ এনআরসি ইস্যুতে প্রতিবাদে সারা দেশের পড়ুয়াদের পাশাপাশি শামিল হয়েছেন যাদবপুরের পড়ুয়ারা। স্বাভাবিক ভাবেই, এইসব ইস্যুও ঢুকে যাবে এবারের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে। সম্পূর্ণ জয়ের আশা নেই এবিভিপিরও। কিন্তু সাধারণত বাম এবং অতিবামপন্থী বা নকশালপন্থীদের গড় হিসেবে পরিচিত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটিতে এবিভিপি কিছু পদ্ম ফোটাতে পারলে পুরভোটের আগে সেটাই হবে বিরাট সাফল্য।