পাকিস্তানি হিন্দুরা ধর্মীয় নীপিড়নের শিকার। এই ঘটনা নতুন না। তবে সমাজের নিচুতলার মানুষের সাথে সাথে শুধুমাত্র হিন্দু বলে পাক ক্রিকেট দলেও হেনস্থার শিকার হতেন পাক ক্রিকেটার কানেরিয়া। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন শোয়েব আখতার। আর শোয়েবের এই মন্তব্য আবারও প্রমাণ করল পাকিস্তানের হিন্দুরা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার।
শোয়েব আখতারের মন্তব্য চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে পাকিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ভালো নেই। একসময় সতীর্থ প্রাক্তন ক্রিকেটার দানিশ কানেরিয়া কিভাবে দলের মধ্যে হেনস্তার শিকার হতেন তা প্রকাশ্যে এনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে রাওলপিন্ডি এক্সপ্রেস।
পাকিস্তানের হয়ে মোট ৬১ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন লেগ স্পিনার দানিশ। তার ঝুলিতে রয়েছে ২৬১ টি উইকেট। পাকিস্তানের জার্সি গায়ে ১৮ টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন তিনি। দানিশ কানেরিয়ার কাঁধে ভর দিয়ে পাকিস্তান বহু টেস্ট ম্যাচ জিতেছে। কিন্তু সেই কানেরিয়াই শুধুমাত্র ধর্মের জন্য দলের মধ্যে কয়েকজন সতীর্থের কাছে ব্রাত্য ছিলেন। অনেকেই তার সঙ্গে এক টেবিলে বসে খেতেও চাইতেন না। নিজের সতীর্থ দানেরিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে এবার সেই বোমা ফাটালেন শোয়েব আখতার।
বৃহস্পতিবার একটি পাক টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে একটি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন শোয়েব। তিনি বলেন “আমার ক্যারিয়ারে কয়েকজনের সঙ্গে আমি লড়াই করেছি। যখন তারা ধর্ম নিয়ে কথা বলতো। কখনো কখনো তারা বলতো কে করাচির, কে লাহোরের, কে পেশোয়ারের? শুনে রাগ হতো। কোন ক্রিকেটার যদি হিন্দু হয় আর সে যদি পাকিস্তানের হয় পারফর্ম করে তাহলে ধর্মের প্রশ্ন ওঠে কিভাবে?”
শোয়েব আখতার আরোও বলেন, “যারা বলতো স্যার ওই ছেলেটা এখান থেকে খাবার নিচ্ছে কেন? অথচ তারা ভাবতো না এই ছেলেটা ইংল্যান্ডে আমাদের টেস্ট জিতিয়েছিল। সবাই আমার নাম করে কিন্তু আমি তো জানি কানেরিয়া দুর্দান্ত বল না করলে আমরা জিততে পারতাম না। অনেকেই ওকে ক্রেডিট দিতে চাইত না।”
এ বিষয়ে কানেরিয়া সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,”শোয়েব আখতার একজন কিংবদন্তি। ওর বল যেমন ক্ষুরধার ওর কথা ও তেমনি ক্ষুরধার। পাকিস্তানের হয়ে যখন খেলতাম তখন প্রকাশ্যে এই কথাগুলি বলার সাহস ছিলনা। কিন্তু শোয়েবের বক্তব্যের পর এবার মুখ খোলার সময় এসেছে। সেই সময় আমার হয়ে লড়েছে ইনজি ভাই,( ইনজামাম উল হক), মহম্মদ ইউসুফ, ইউনুস ভাই। যারা আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করত তাদের নাম এবার জানাবো। তবে এটা বলতে পারি পাকিস্তানের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি সম্মানিত।”