সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান, মাদক পাচার, গোরু পাচার এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ যে মাথাব্যথার কারণ তা দুই দেশের প্রশাসনিক আধিকারিকেরা স্বীকার করেছেন। শনিবার উত্তরবঙ্গের সীমান্ত সংলগ্ন ছয়টি জেলা এবং বাংলাদেশের ন’টি জেলার জেলাশাসক বৈঠক করলেন।
এদিন দুপুর আড়াইটা থেকে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে মালদা প্রশাসনিক ভবনে। তিন ঘণ্টা ধরে চলে বৈঠক। ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন মালদা জেলাশাসক রাজষী মিত্র। বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন জয়পুরহাটের জেলাশাসক তথা ডেপুটি কমিশনার মহম্মদ জাকির হোসেন।
এদিন বাংলাদেশ থেকে আসেন প্রায় ৬০ জনের প্রতিনিধি দল। যাদের মধ্যে (বিজিবি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ), বাংলাদেশ পুলিশ এবং প্রশাসনিক আধিকারিকেরা ছিলেন।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া ওপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, লালমনিহাট এবং কুড়িগ্রাম এই ন’টি জেলার জেলাশাসকেরা বৈঠকের সামিল হয়েছিলেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ছয়টি জেলা তথা কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা, দার্জিলিং ,জলপাইগুড়ি জেলার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারেরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এদিনের বৈঠকে যে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে দুই দেশের সীমানা চিহ্নিত করে তারকাঁটার বেড়া দেওয়া। নদী ভাঙ্গন সমস্যা মেটানো। তাছাড়াও রয়েছে ওপার থেকে বেআইনিভাবে মাদকদ্রব্য, অস্ত্র এবং জালনোট পাচার আটকানো।
পাশাপাশি অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকানো নিয়ে এদিন বিস্তর আলোচনা হয়েছে। ওপারের প্রতিনিধিরা এপার থেকে গোরু পাচার, অস্ত্রপাচারের বিষয়টিও তুলে ধরেছেন। এবং এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি কিভাবে মোকাবিলা করা যায় তারও চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে থাকা শীর্ষ এক আধিকারিক মহম্মদ জাকির হোসেন বলেন, মায়ানমার থেকে বেআইনি মাদক ঢুকছে বাংলাদেশে। তারপর সেখান থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এটা আমরা বুঝতে পারছি। সেটিকে আটকানোর চেষ্টা চলছে।
পাশাপাশি এপার থেকে ফেনসিডিল, গোরু পাচার হচ্ছে। এগুলোকে কিভাবে আটকানো যায় তা নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি। পুলিশ ,বিএসএফ, বিজিবি’র সঙ্গে যাতে আরো সুসম্পর্ক গড়ে তোলা যায় তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা করা হয়েছে। দুই দেশের তরফ থেকে একটি রেজুলেশন নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ভারতের প্রতিনিধি দলের হয়ে মালদার জেলাশাসক রাজষী মিত্র বলেন, ডিসি, ডিএম পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। প্রতিবছর দুই দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক হয়। মালদা জেলার যেসব সমস্যা রয়েছে তা তুলে ধরা হয়েছে। যার মধ্যে হবিবপুরের নদী ভাঙ্গন সমস্যা। দুই দেশেরই তাতে ক্ষতি হচ্ছে। নদী ভাঙ্গন ঠেকাতে সেখানে প্রটেকশন ওয়ার্ক করা দরকার। এছাড়াও চোরাচালান, জালনোট, গোরু পাচারের বিষয়গুলি আলোচনায় তুলে ধরা হয়েছে। এইসব বিষয় নিয়ে বিএসএফ এবং বিজিবি আলাদা করে আলোচনা করেছে।