কেড়ে নেওয়া হতে পারে ইসলাম ধর্মের প্রচারক জাকির নায়েকের স্থায়ী নাগরিকত্ব। সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহাথীর মহম্মদ। ধর্মে উস্কানিমূলক মন্তব্য করায় জাকির নায়েককে জিজ্ঞাসাবাদ করবে মালয়েশিয়ান সরকার।
তদন্তের ভিত্তিতে যদি প্রমাণ হয় যে তাঁর মন্তব্য ও কাজকর্ম দেশের শান্তি-সম্প্রীতি, ঐক্য-উন্নতিতে আঘাত করেছে তাহলে তাঁর নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা হবে। স্থানীয় সংবাদসংস্থা গুলিকে প্রধানমন্ত্রী মহাথীর মহম্মদ জানিয়েছেন এই মুহূর্তে মালেশিয়া সরকার তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায়। কিছুদিন আগে সেই দেশের সংখ্যালঘুদের উদ্দেশ্যে ইসলাম প্রচারক জাকির নায়েক উস্কানিমূলক মন্তব্য করার যে অভিযোগ উঠেছে তা যদি সত্যি প্রমাণিত হয় তাহলে স্থায়ী নাগরিকত্বের স্ট্যাটাস নাকোচ করা হবে। নেওয়া হবে কড়া পদক্ষেপ।
বুধবার জাকির বলেছেন, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের তুলনায় মালয়েশিয়ার হিন্দুরা ১০০ শতাংশ বেশি অধিকার ভোগ করে থাকেন। পাশাপাশি কোটা বারুতে এক সভায় তিনি আরও বলেন, মালয়েশিয়ার হিন্দুরা মহাথীর মহম্মদের তুলনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি বেশি অনুগত। জাকিরের এই মন্তব্যে উঠেছে ঝড়। প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের একাধিক মহল। তাই পুলিশ জেরা করবে জাকির নায়েককে। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন জাতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্য ও মিথ্যে খবর ছড়ানোর জন্য জাকির নায়েককে জেরা করবে পুলিশ।
নায়েকের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে চাপে পড়ে গিয়েছে সে দেশের সরকার। ওই মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁকে দেশ থেকে তাড়ানোর দাবি করেছেন সে দেশের মন্ত্রী থেকে শুরু করে কয়েকটি সংগঠন। প্রধানমন্ত্রী মহাথির মহম্মদ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন যদি এইরকম কাজের বিরুদ্ধে কোন কড়া পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে সাম্প্রদায়িক চাপ বাড়বে। যা দেশের পক্ষে ক্ষতিকর।
অন্যদিকে, জাকির নায়েকের মুখপাত্র সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, মন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে কী বলেছেন তা দেখা হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় জাতিগত বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল জায়গা। প্রসঙ্গত মালয়েশিয়ায় ৬০ শতাংশ মানুষ মালয়েশিয়া, বাকিরা চিনা ও ভারতীয় হিন্দু। এরকম এক জনবিন্যাসের দেশে ওই মন্তব্য করে দেশের আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন জাকির নাইক। তবে গোটা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।
জাতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জাকির নায়েককে দু’দিন কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। নায়েক গত তিন বছর ধরে স্থায়ী নাগরিকত্ব নিয়ে মালয়েশিয়ায় থাকছেন। একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে যেখানে দেখা গেছে তিনি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এই জাতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্যটি করেছেন। যা তৈরি করেছে নতুন বিতর্ক।