রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের অখিল ভারতীয় প্রচার প্রমুখ অরূণ কুমারজী জানালেন, বর্তমান নবীন প্রজন্ম প্রবল উৎসাহের সঙ্গে যোগদান করছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘে। সঙ্ঘ পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন ছয় রকম গতিবিধির সূচনা করেছে। পরিবেশ, গ্রামোন্নতি, গোসংরক্ষণ, সামাজিক সমতা এবং আত্মিক সম্পর্কের উন্নতির জন্য কুটুম্ব প্রবোধনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। গ্রামীণ সমাজের বিভিন্ন দুর্বলতা দূর করবার জন্য গ্রামের মানুষের সার্বিক শক্তির জাগরণ প্রয়োজন। অম্বাবার এস আর ইঞ্জিনীয়ারিং কলেজে অনুষ্ঠিত যোজক বর্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় অখিল ভারতীয় প্রচার প্রমুখ অরুণ কুমারজী মন্তব্য করেন।
উনি আরো বলেছেন ২০১০ সাল থেকে সঙ্ঘের কাজ ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঙ্ঘের কার্যের প্রতি সামাজিক স্বীকৃতি ও অনুকূল পরিবেশের বিস্তারই এর কারণ বলে উনি জানান। ২০১০ সালে সঙ্ঘের চল্লিশ হাজার শাখা চালু ছিল, ২০১৯ সালে শাখার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ষাট হাজার হওয়া এর অন্যতম কারণ। মানুষের মধ্যে সঙ্ঘকে জানার ও যোগদান করবার প্রবল উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২০১২ থেকে ২০১৯ এর জুন মাস অবধি ছয় লক্ষ মানুষ ‘Join RSS’ এর মাধ্যমে সঙ্ঘে যোগদান করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। এর মধ্যে ২০১৮ সালে দেড় লক্ষ ও ২০১৯ এ এখনো অবধি ৬৭ হাজার মানুষ সঙ্ঘে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। সমস্ত শাখার মধ্যে ছয় হাজার শাখায় ২০-৪০ বছর বয়স্কেরা নিয়মিত আসেন, আর ৩৭০০০ শাখায় স্কুল ও কলেজের ছাত্ররা আসেন।
উনি বলেন, সঙ্ঘে নতুন প্রজন্ম প্রবল উৎসাহের সঙ্গে যোগদান করছেন। সারা দেশে সঙ্ঘ সহস্র সংখ্যক প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করে। যেখানে সাত দিনের প্রাথমিক শিক্ষা বর্গের ১ লক্ষ ২৫ হাজার স্বয়ংসেবক শিক্ষাগ্রহণ করেন। এই জন্যই সমস্ত শ্রেণীর মানুষের কাছে পৌঁছে সমাজ ক্ষতিকর দিকগুলির দূরীকরণের জন্য সমাজ সঙ্ঘের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকে। দেশের প্রকৃতিক পরিবেশের অবনতির কথা মাথায় রেখেই সঙ্ঘ জল-সংরক্ষণ, বৃক্ষরোপণ ও প্লাস্টিকের সীমিত ব্যবহারের লক্ষ্যে কাজ করবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এছাড়াও, গ্রামোন্নতির দিকে লক্ষ্য রেখে গোসেবা ও গোসংরক্ষণের প্রতিও সঙ্ঘের আগ্রহ ক্রমশঃ বৃদ্ধি হয়েছে। সামাজিক সমতা গঠনের লক্ষ্যে ধার্মিক, সামাজিক সমস্ত সংগঠনকে সাথে নিয়ে সামাজিক সদভাব তৈরীর জন্য সঙ্ঘ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। উনি আরো বলেন পরিবারই আমাদের শক্তি, এই জন্য সঙ্ঘ পারিবারিক সম্পর্কের উন্নতির লক্ষ্যে কুটুম্ব প্রবোধনের কাজও শুরু করেছে। সঙ্ঘের কার্যবৃদ্ধির সাথে সাথে সঙ্ঘের প্রতি সমাজের প্রত্যাশাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এর জন্য সঙ্ঘ পাঁচ বছর আগে থেকেই প্রশিক্ষণের কাজ করছে, যাতে কার্যকর্তাদের ক্ষমতার উন্নতি ও সদগুণাবলীর বিকাশ বৃদ্ধি হয়। কারণ কার্যকর্তারাই সঙ্ঘের কর্মের আধার।
সঙ্ঘ এখনো অবধি ৩০০ বিভাগের ৮০০ জেলার সংগঠন গড়ে তুলতে সমর্থ হয়েছেল জেলা স্তরের ৯ হাজার এবং ক্ষেত্র বা প্রান্ত স্তরের ১ হাজার কার্যকর্তাকে গত পাঁচ বছরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ঝাঁসির এই যোজক বর্গে সারা দেশের ১৪০ জন কার্যকর্তা অংশগ্রহণ করছেন। এক প্রশ্নের উত্তরে অরুণ কুমারজী বলেন সমাজে সমতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা।
সঙ্ঘের অখিল ভারতীয় সহ প্রচার প্রমুখ নরেন্দ্র কুমার ঠাকুর ও সহ প্রান্ত কার্যবাহ ইঞ্জিনীয়ার অনিল শ্রীবাস্তব জী উপস্থিত ছিলেন এই আলোচনায়।