অযোধ্যায় রাম মন্দিরের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পবিত্র জল আনা হচ্ছে। ইতিমধ্য়েই বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন পবিত্র জলধারা থেকে পবিত্র জল এসে পৌঁছেছে অযোধ্যায়। এবার জল এল আফগানিস্তান থেকে। আফগানিস্তানের এক তরুণী, কাবুল নদী থেকে জল পাঠিয়েছেন অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের জন্য। আজ সেই জল নিয়ে অযোধ্যায় যান উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কাবুল নদীর পবিত্র জল দিয়ে জলাভিষেক করলেন রামের।
আজ ওই আফগান তরুণীর পাঠানো কাবুল নদীর জলের সঙ্গে গঙ্গাজল মেশানো হয় এবং তারপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশ মতো ওই জল ঢালা হয় রাম মন্দির নির্মাণ প্রকল্পে।
এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে, আকবর রোডে রাজনাথ সিংয়ের বাসভবনে বিশ্বের ১১৫ টি দেশের বিভিন্ন নদী, ঝর্না, মহাসাগর থেকে পবিত্র জল এসে পৌঁছেছিল। শুধু হিন্দুরাই নন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান, ইহুদি, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ এই মহতি কাজে হাত লাগিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ধর্মের মানুষ জল সংগ্রহ করে পাঠিয়েছেন। ১১৫ টি ছোট ছোট পাত্রে সংশ্লিষ্ট দেশের নাম লিখে পবিত্র জল পাঠানো হয়েছে। সেই সময় রাজনাথ সিংয়ের বাসভবনে উপস্থিত ছিলেন শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্রের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাই এবং ডেনমার্ক, ফিজি, নাইজেরিয়া সহ একাধিক দেশের রাষ্ট্রদূতরা।
এই জল আসার পর তিনি বলেছিলেন, “বিশ্বের সব দেশ থেকে জল সংগ্রহ করা ভারতের ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ চিন্তাধারাকে প্রতিফলন করে। ১১৫ টি দেশ থেকে জল আনা সত্যিই এক অসাধারণ সাফল্য। চমৎকার কাজ। আমি আশা করি মন্দিরের নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই বাকি ৭৭ টি দেশের জলও সংগ্রহ করা হবে। আমরা সেই পবিত্র জল দিয়ে ভগবান রামের জলভিষেক করব।” তিনি আরও বলেন, রাম মন্দির নির্মাণ প্রত্যেকের জন্য একটি গর্বের বিষয়। ভারতীয় সংস্কৃতি অনেক উদার। এখানে কোনও জাতি, ধর্ম, বর্ণের নামে বৈষম্য করা হয় না।
উল্লেখ্য, রাম মন্দিরের ভিত ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। এবার মূল মন্দির তৈরির কাজ শুরু হবে। কংক্রিটের ভিতের উপর আরও একটি স্তর থাকবে। সেটি তৈরি হবে গ্রানাইট ও বেলেপাথর দিয়ে। তার উপরে থাকবে মূল মন্দির। এর জন্য কর্নাটক থেকে গ্রানাইট আনা হচ্ছে। মির্জাপুর থেক আসছে বেলেপাথর। আর মার্বেল আসছে রাজস্থান থেকে।
গত বছরের ৫ অগস্ট থেকে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে অযোধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মন্দিরের শিলান্যাস করেন। ২০২৩-এর ডিসেম্বরের মধ্যে মন্দির নির্মাণ শেষ হবে বলে জানা গিয়েছে। ১৮ হাজার ৫০০ বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে ভিত। ১২ মিটার গভীর পর্যন্ত খোঁড়া হয়েছে। সেই গভীরতা পূরণ করা হয়েছে কংক্রিটে। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে এ ভাবেই মজবুত জরা হচ্ছে রাম মন্দিরের ভিত। সেই কাজ শেষ করা হয়েছে রেকর্ড সময়ে।