রবিবার ষষ্ঠ দফার ভোটের দিনই জম্মু ও কাশ্মীরের সোপিয়ানের সতীপোরা এলাকায় সেনার গুলিতে দুই লস্কর জঙ্গি খতম হয়েছে। আর তারপরেই উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনী প্রচারে এসে এই বিষয়কে তুলে আনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কটাক্ষের সুরে মোদী বলেন, বিরোধীরা আবার বলতে পারেন, ভোটের দিনই কেন জঙ্গি মারা হলো। আমি প্রশ্ন করি, সামনে যদি সশস্ত্র জঙ্গি দাঁড়িয়ে থাকে, তাহলে কি সেনা নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করবে।
রবিবার উত্তরপ্রদেশের কুশিনগরে নির্বাচনী প্রচারে যান মোদী। সেখানে তিনি বলেন, “জঙ্গিরা বোমা ও বন্দুক নিয়ে সেনার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। তখন কি আমার জওয়ানরা গুলি করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে অনুমতি নেবে? যে দিন থেকে আমরা ক্ষমতায় এসেছি, দু-তিনদিন অন্তর কাশ্মীরে সাফাই অভিযান চলছে। এটা আমার সাফাই অভিযান।” এ ছাড়াও বিরোধীদের নিয়েও কটাক্ষ করেন তিনি। বালাকোটে বিমান-হামলার পর বিরোধীদের অনেকেই কেন্দ্রের কাছে এই হামলার প্রমাণ চেয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ তুলে এনে এ দিন মোদী বলেন, বিরোধীরা হয়তো বলতে পারেন ভোটের দিনেই কেন মোদীর সেনা জঙ্গি মারল?
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একটা অংশের মতে দেশভক্তি ও জাতীয়তাবাদের প্রসঙ্গে বিরোধীদের কটাক্ষ করা বিজেপির নতুন নয়। উনিশের লোকসভায় বিজেপির প্রচারের অন্যতম বড় হাতিয়ারও এই জাতীয়তাবাদের প্রসঙ্গ। বারবার বিভিন্ন সভায় মোদী বলেছেন, তাঁদের সরকার কোনও রকমের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বরদাস্ত করবে না। সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা হলে জঙ্গিদের ঘরে ঢুকে তাদের মেরে আসবে ভারতীয় সেনা। এ ছাড়াও অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথরা বারবার ভারতীয় সেনাকে ‘মোদী-কি-সেনা’ বলে উল্লেখ করেছেন। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিরোধী দল এই নিয়ে বিজেপির বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু নিজেদের রাস্তা থেকে সরে আসেনি বিজেপি। এ দিন এই প্রসঙ্গ তুলে ফের সেই জাতীয়তাবাদের পালে হাওয়া দেওয়ার চেষ্টা করলেন মোদী, এমনটাই বক্তব্য পর্যবেক্ষকদের।
গত কয়েক দিন ধরেই ঘনঘন এনকাউন্টার চলছে উপত্যকায়। খতম হয়েছে বেশ কয়েক জন জঙ্গি। গত সপ্তাহেই এই সোপিয়ানেই এনকাউন্টারে তিন জঙ্গিকে খতম করে নিরাপত্তা বাহিনী। রবিবার সাতসকালে গুলির শব্দে ঘুম ভাঙে উপত্যকাবাসীর৷ আগাম খবর পেয়ে জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি অভিযানে নেমেছিল নিরাপত্তা বাহিনী৷ আচমকা শুরু হয় দু’পক্ষের গোলাগুলি৷ খতম দুই জঙ্গির কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর অস্ত্র ও অর্থ৷ নিহত দুই জঙ্গির নাম বাশারাত আহমেদ ও তারিক আহমেদ। তারা খাসিপোরার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে তারিক পুলিশে কাজ করত। পুলিশ থেকে জঙ্গি হয়েছে সে। গত বছর পাখেরপোরায় পোস্টেড থাকাকালীন সার্ভিস রাইফেল নিয়ে পালিয়েছিল সে। নাম লিখিয়েছিল লস্করে।