বুধ সন্ধ্যায় ঠিক ৬টা ৪মিনিটে ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদে অবতরণ করল। কেন বিক্রমের অবতরণের জন্য বুধ সন্ধ্যাকেই বাছলো ইসরো? চাঁদের এক মাস পূর্ণ হয় পৃথিবীর হিসাবে ২৮ দিনে। ১ চান্দ্রমাসে টানা ১৪ দিন রাত আর ১৪ দিন দিন থাকে। চন্দ্রযান নেমে সোলার প্যানেলের শক্তিতে সাহায্য কাজ করবে। সেই হিসেবে বুধ সন্ধ্যাতেই চাঁদের দক্ষিণ সূর্যের আলোতে আসবে। আজ থেকে ১৪ দিন ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চাঁদের দক্ষিণে দিন থাকবে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর তাপমাত্রা মাইনাস ২৩০ ডিগ্রি পর্যন্ত নামে। হিমাঙ্কের এত নীচে তাপমাত্রায় দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান চলবে না। বিক্রমের পেলোডার, চন্দ্র কাছাকাছি পৃষ্ঠের প্লাজমা (আয়ন ও ইলেকট্রন) ঘনত্ব পরিমাপ ও সময়ের সাথে পরিবর্তন নজরে রাখবে। মেরু অঞ্চলের কাছাকাছি চন্দ্রপৃষ্ঠে তাপীয় বৈশিষ্ট্য পরিমাপ করবে। চন্দ্রের ভূত্বক ও আবরণের গঠন থেকে চারপাশে ভূমিকম্প সম্পর্কে তথ্য দেবে। আর প্রজ্ঞানের পেলোডার চন্দ্রের পৃষ্ঠতলে রাসায়নিক ও খনিজ নিয়ে আমাদের আরও উন্নত তথ্য দেবে। চন্দ্রে অবতরণ তলের মাটি ও চন্দ্রের চারপাশে পাথর নিয়ে তথ্য জানাবে। পালকের মত রোভারটি চন্দ্রপৃষ্ঠে নামে। রোভারটি ঘুরে বেড়ানোর সময় চান্দ্রপৃষ্ঠে ভারতের পতাকা ও ইসরোর লোগোর ছাপ ফেলতে ফেলতে যাবে। ২০০৮ সালে চন্দ্রায়ন-১, ২০১৯ সালে চন্দ্রায়ন-২ আর ২০২৩ সালে চন্দ্রায়ন-৩ ভারতের। প্রথম আমেরিকা, রাশিয়া, জাপান ও ইউরোপের পর ২০০৮-এ নভেম্বর মাসে পঞ্চম স্থানে চন্দ্রযান পাঠিয়েছিল ভারত। ভারতের চন্দ্রযান-১ চাঁদে জলের অস্তিত্ব প্রথম খুঁজে পেয়ে ইতিহাস তৈরি করেছিল বিশ্বে। তবে সেবার ল্যান্ডিং নয় বরং ‘ক্র্যাশ মুডেই’ চাঁদের বুকে পাঠানো হয়েছিল ভারতের চন্দ্রযান-১কে। ৪ বছর আগে ২০১৯ সালে সফ্‌ট ল্যান্ডিংয়ের সময়ই ভারতের চাঁদ ছোঁয়ার স্বপ্ন অধরা থেকে গিয়েছিল এবার তা পূর্ণ হল।
ধন্যবাদ ইসরো। ধন্যবাদ ভারত।
জয়হিন্দ।। বন্দেমাতরম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.