দুর্গাপুজো কেন ‘মহাপুজো’, জেনে নিন পুরাণের বর্ণনা ও যুক্তি

‘মার্কণ্ডেয় পুরাণ’ অনুযায়ী, ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর ও অন্যান্য দেবতাদের তেজরাশি থেকে যে দেবীর উৎপত্তি তিনিই মহাশক্তি। ‘বামন পুরাণ’ যদিও অন্য কথা বলে। এই পুরাণে রয়েছে, ব্রহ্মা বিষ্ণু এবং মহেশ্বরের তেজরাশি থেকে যে দেবীর উৎপত্তি তিনিই মহাশক্তি। তিনি আবার মহামায়া। যিনি জীবকে ভববন্ধনে আবদ্ধ করেন, আবার তিনিই তাকে মুক্তি দান করে থাকেন। ‘শ্রী ভগবতী গীতা’য় দেবী স্বয়ং বলেছেন—‘‘দুর্বৃত্তদের শাসন করবার জন্য আমিই মহাশক্তি রূপ ধারণ করে জগৎ পালন করি।’’ এই মহাশক্তিই দেবী দুর্গা।

শরৎকালীন দুর্গাপুজো মহাপুজো। যে পূজায় মহাস্নান, পুজো, হোম ও বলিদান— এই চারটি পর্ব রয়েছে তার নাম ‘মহাপূজা’।

‘দেবী ভাগবত’-এ দেবী স্বয়ং বলেছেন, “শরৎকালে মহাপূজা কর্তব্যা মমসর্বদা” অর্থাৎ ‘‘প্রতিবছর শরৎকালে ভক্তিপূর্ণ সহকারে আমার মহাপুজো করবে’’। ‘লিঙ্গপুরাণ’-এও বলা হয়েছে, “শারদীয়া মহাপূজা চতুঃকর্মময়ী শুভা” অর্থাৎ শরৎকালের মহাপুজোতে অঙ্গস্বরূপ চারটি কর্ম রয়েছে, যা অন্য কোনও পুজোতে নেই।

দুর্গাপুজো যে মহাপুজো, সে প্রমাণ রয়েছে ‘মার্কণ্ডেয় পুরাণ’-এও। সেখানে রয়েছে “শরৎকালে মহাপূজা ক্রিয়তে যা চ বার্ষিকী”। ‘দেবী পুরাণ’-এ আবার বলা হয়েছে আশ্বিনমাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী ও নবমীতে মহাশব্দ লোকের প্রসিদ্ধি লাভ করবে অর্থাৎ দেবীর পুজোতে অষ্টমী ও নবমী তিথি ‘মহাষ্টমী’ ও‘মহানবমী’ বলে প্রসিদ্ধ হবে।

এই মহাপুজোতেই রয়েছে দেবীর বোধন। অকালের পুজো, তাই বিশেষ ব্যবস্থা বিশেষ আয়োজন। এই মহাপুজোয় প্রতিটি দিনের পুজো করলে নানান ফলপ্রাপ্তির সম্ভাবনা। অন্য কোনও পুজোয় এত বৈচিত্রও মেলে না।

অনির্বাণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.