কোভিড (COVID-19) পরিস্থিতিতেও জনসাধারণের জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রকল্প ‘আয়ুষ্মান ভারত যোজনা’ চালু করা হয়নি কেন? প্রশ্ন তুলে পশ্চিমবঙ্গ-সহ চার রাজ্যকে নোটিস পাঠাল শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। দিল্লি, তেলেঙ্গানা ও ওড়িশার কাছে কারণ জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃতত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ। এ নিয়ে পরবর্তী শুনানি সপ্তাহ দুয়েক পর।
জনস্বাস্থ্য পরিষেবায় কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প ‘আয়ুষ্মান ভারত যোজনা’। এই প্রকল্পে দেশের নিম্নবিত্ত ৫০কোটি মানুষের জন্য বার্ষিক ৬৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। এই প্রকল্পের আওতায় সাম্প্রতিক মহামারী সংকট অর্থাৎ কোভিড সংক্রান্ত পরীক্ষা থেকে চিকিৎসা – সব পরিষেবাই পাওয়া যাবে। কিন্তু বেশ কয়েকটি রাজ্যে এই প্রকল্প চালু হয়নি। যার মধ্যে অন্যতম পশ্চিমবঙ্গ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) প্রশাসনের দাবি, এখানকার ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর তুলনায় অনেক বেশি কার্যকরী। এছাড়া এ রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পান আমজনতা – উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত, সকলেই। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, এ রাজ্যে ‘আয়ুষ্মান ভারত যোজনা’ চালু করার কোনও যৌক্তিকতা নেই। বারবারই তিনি এই দাবি করেছেন।
একইভাবে ‘আয়ুষ্মান ভারত যোজনা’ নিজেদের রাজ্যে চালু করেনি তেলেঙ্গানার কেসিআর প্রশাসন, দিল্লির কেজরিওয়াল প্রশাসন এবং ওড়িশার নবীন পট্টনায়েক প্রশাসন। প্রসঙ্গত, এই চার রাজ্যই বিরোধীদের দখলে। এ নিয়ে পেরালা শেখর রাও নামে জনৈক ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। শুনানিতে আবেদনকারীর আইনজীবী হিতেন্দ্র রথ অভিযোগ করে বলেন, ”এই প্রকল্পের সুবিধা না থাকায় এবং সরকারি হাসপাতালগুলোয় উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে মধ্যবিত্ত মানুষজন কোভিড চিকিৎসার জন্য প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে প্রচুর ব্যয় করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই আবেদনকারী চান, আয়ুষ্মান ভারত এমনভাবে চালু হোক, যাতে প্রয়োজনে মানুষ এর সুবিধা নিতে পারেন।”
এরপরই প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের (SA Bobde) নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গ-সহ এই চার রাজ্যকে নোটিস পাঠায়। জানতে চাওয়া হয় কেন এই সংকটকালেও এই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রকল্প চালু করা হল না। দু’সপ্তাহ পর ফের এ নিয়ে শুনানি। তার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে জবাব দিতে হবে পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, তেলেঙ্গানা, ওড়িশা প্রশাসনকে।