ইস্কন কটু কথা বলছে রামকৃষ্ণ মিশনকে। রামকৃষ্ণ মিশন সমালোচনা করছে ইস্কনের। অনুকূল ঠাকুরের শিষ্যরা আবার কাউকেই মানতে পারে না।
যে নিরামিষাশী সে পশুবলির বিরোধিতা করছে। আবার যে বলির কচি পাঠার নলি হার থেকে সুরুৎ করে ভেতরকার সুস্বাদু ঝোল-রস টেনে খাচ্ছে সে গালি দেয় নিরামিষাশীদের।
কেউ বলে রাধা বলে কিছু নেই, রাধা আসলে প্রকৃতি, প্রকৃতি আর পুরুষের প্রেমকে রাধা-কৃষ্ণ কল্পনা করা হয়। আবার কারোর মতে, রাধা যদি না থাকে তবে কৃষ্ণ বলেও কিছু নেই, কারণ আমরা রাধা-কৃষ্ণ বলি, কৃষ্ণের আগেই রাধার নাম।
এখন তো আবার ডিজিটাল যুগ, হাজার হাজার সনাতনী গ্রুপ। এক গ্রুপ অন্য গ্রুপের মতকে প্রক্ষিপ্ত বলে বিষাদগার করছে, মতের মিল না হলেই প্রক্ষিপ্ত। সবার গুরু সবার কাছে অবতার।
মোটামুটি এই হলো হিন্দু তথা সনাতনীদের অবস্থা। কবির ভাষায় বলতে গেলে, আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে, নইলে মোদের রাজার সনে মিলবো কি স্বত্বে?!
তো সমস্যা হলো আমাদের হিন্দুদের সবাই রাজা, সবার নিজস্ব-নিজস্ব মতবাদ, আর নিজে বাদে বাকিরা সবাই ভুল। ঐতিহাসিক কাল থেকেই আমাদের যত মত তত পথ।
আর এই ভিন্ন পথের বাসিন্দা হয়ে কালে কালে আমাদের সাম্রাজ্য গেছে, মা-বোনের সম্ভ্রম গেছে, দেশ গেছে, কিন্তু আমরা তোতাপাখির মত বুলি আওড়েছি, “ভিন্নতাই সনাতনীদের শক্তি।” কত শক্তি যে আমাদের দাদু-ঠাকুরদারা পরনের ধূতি নিয়েও পালাতে পারেনি যুগে যুগে, আমরাও না। এক হিন্দু অন্য হিন্দুর মূল্যায়নে ব্যর্থ।
ধন্যবাদ আমাদের মুsলিম ভাইদের। তারা হিন্দুদের মধ্যে নূন্যতম ভেদাভেদ করে না।
তুমি ইস্কনের অনুসারী হও কি রামকৃষ্ণ মিশনের, অনুকূল ঠাকুরের হও কি শঙ্করাচার্য্যের, ব্রাহ্মণ হও কি শুদ্র, সবার জন্যে সমান মার বরাদ্দ। সবার পরিচয় একটাই “কা’ফের”, ব্রাহ্মণ জন্যে কেউ দুটো মার কম খাবে না, আবার শুদ্র জন্যে কেউ দুটো মার বেশি না। একদম সমান বন্টন। ইস্কন হও কি রামকৃষ্ণ, কেউ খাবে কেউ খাবে না, তা হবে না তা হবে না।
হিন্দু সমাজে ইস্কন হোক কি রামকৃষ্ণ মিশন, অনুকূল ঠাকুর হোক কি শঙ্করাচার্য্য সবার কিন্তু অবদান আছে। বিবেকানন্দ আমেরিকার বুকে হিন্দু ধর্মকে রিপ্রেজেন্ট করেছিল। আবার এই যে জগন্নাথ দেবের পা সারা বিশ্বে পড়ছে তার জন্যে শুধুমাত্র ইস্কন। তো আমাদের সমাজে প্রতিটা হিন্দু সংস্থার নিজ নিজ ভূমিকা আছে। এখানে কেন বিরোধ বা নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়ি থাকবে? আমার যা ভালো লাগবে তা গ্রহণ করবো, যা পোষাবে না তা ইগ্নোর করবো। সেখানে কেন সংঘাত? যাদের এই নূন্যতম জ্ঞান নেই তারা চালায় কিনা সনাতনী প্রতিষ্ঠান!
যাইহোক, অমোঘ লীলা প্রভু তার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন আপাতত এটাই ভালো খবর।
(