মমতার বাড়ির কাছেই লুকিয়ে ছিলেন রাজীব? উঠছে প্রশ্ন

মমতার বাড়ির কাছেই লুকিয়ে ছিলেন রাজীব? রাজীব কুমারকে (Rajiv Kumar) নিয়ে এমনই প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে! প্রায় পৌনে দুই মাস অন্তরালে থাকার পর বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতে নিজের জামিন সংক্রান্ত বিষয়ে আইনি কাজকর্মের জন্য এসেছিলেন তিনি। তারপর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সিবিআইয়ের থেকে এতদিন আত্মগোপন করে তিনি কোথায় ছিলেন? কারণ, ওই দিন সকালে যে নাটকীয় ভাবে তাঁর আগমন, এবং কোনও কিছু বোঝার আগেই যেভাবে তিনি আদালত চত্বর ছেড়ে চলে গেলেন, তাঁকে সিনেমার চিত্রনাট্য ছাড়া কিছুই বলা যায় না।

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, আলিপুরে রাজ্য পুলিশের কোনও গোপন ডেরায় আত্মগোপন করেছিলেন তিনি। আলিপুরে রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের একাধিক আবাসন রয়েছে। যেখানে রাজ্যে কর্মরত একাধিক আইপিএস অফিসারদের বসবাস। মূলত কলকাতা পুরসভার ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে আইপিএস অফিসারদের এই আবাসনগুলি। আর ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুর বিধানসভার অংশ। তাই পুলিশি আবাসন গুলিতেই তাঁর থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না ওয়াকিবহাল মহল।

পুলিশ কলকাতা প্রাক্তন কমিশনারকে খুঁজে পেতে পুজালী থেকে কোলাঘাট তল্লাশি চালিয়ে ছিল। তল্লাশি চালিয়ে ছিল কলকাতার বিভিন্ন নামজাদা হোটেলেও। তাতেও সিবিআইয়ের নাগালে আসেননি রাজীব কুমার। তাই নবান্নে (Nabanna) রাজ্যের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে চিঠি দিয়ে তাঁর হদিশ জানতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। অবাক হলেও সত্যি যে এই তিন প্রশাসনিক কর্তা সিবিআইকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল রাজীব কুমার প্রসঙ্গে বিন্দুবিসর্গ জানেন না তারা।

কিন্তু সেই সময় প্রশ্ন উঠেছিল, খাতায়-কলমে রাজীব কুমার ছুটিতে গিয়েছেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কোনও আইপিএস পুলিশ কর্তা ছুটিতে গেলে তিনি কোথায় যাচ্ছেন তা রাজ্য প্রশাসনকে জানিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক। তাই রাজ্য প্রশাসন কিভাবে রাজীব কুমারের বেপাত্তা থাকার বিষয়টি প্রকাশ্যে জানাতে পারে। প্রশ্ন উঠেছিল, রাজ্য প্রশাসনের দায়িত্বজ্ঞান নিয়েও।

রাজীব কুমারের আলিপুর আদালত চত্বরে আসা এবং সেখান থেকেই আবার নিজের গন্তব্যে রওনা হয়ে যাওয়ায় রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। রাজ্য পুলিশের ডিজি সিআইডি অবশ্য নিজের বেপাত্তা থাকা প্রসঙ্গে কিছুই জানাননি। তিনি এ বিষয়ে মৌন থাকলেও জল্পনা চলছে রাজনৈতিক মহলে। বিষয়টি নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেস।

নীল রায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.