“যে CAA নিয়ে এত হইচই করা হচ্ছিল, কোথায় গেল সে আইন? ” কেন তা অপরিহার্য বাংলাদেশের হিন্দু নিধন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো

বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় দূর্গা পুজোর সময় থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত হিন্দুদের ওপর একের পর এক হামলার জেরে ভারতে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আসার পক্ষে দাবি আরো জোরদার হলো বলা চলে।

মোদী সরকার প্রথম থেকেই এই আইন বাস্তবায়নের কথা বললেও পরে পিছিয়ে এসেছে, এখন বিরোধী দলগুলোর অনেক প্রথম সারির নেতাও বলছেন সংশোধিত এই আইনটির পরিধি বাড়িয়ে বাংলাদেশের নির্যাতিত হিন্দুদের সুরক্ষা ও পুনর্বাসনের জন্যও ব্যবস্থা করা দরকার।

পাশাপাশি, ভারতের এই নাগরিকত্ব আইন যে বাংলাদেশ বা আফগানিস্তানের সংখ্যালঘুদের বিপদে কোনও কাজে আসেনি, সে কথাও বিরোধীরা মনে করিয়ে দিচ্ছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ভারতের পার্লামেন্টে পাস হয়েছিল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ – যাতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে আসা হিন্দু-শিখ-খ্রীষ্টান-বৌদ্ধদের এ দেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়।

এই আইনটিকে মুসলিম-বিরোধী ও অসাংবিধানিক বলে বর্ণনা করে এরপর গোটা দেশ জুড়ে যে তীব্র বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হয়, তা যে ভুল ছিল বাংলাদেশে বাস্তব অবস্থার বিচারে তাই প্রতিপন্ন হলো।

কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা মিলিন্দ দেওরা সম্প্রতি বলেছেন, “সাধারণত দেখা যায় একটা বিল আইনে পরিণত হওয়ার ছমাসের মধ্যেই সেটির বাস্তবায়নের নিয়মকানুনগুলো চূড়ান্ত করা হয়।”

“কিন্তু এক্ষেত্রে সিএএ পাস হওয়ার দুবছর পরেও সেগুলো কিছুই করা হয়নি।”

“ওদিকে আমরা দেখছি বাংলাদেশ, আফগানিস্তান-সহ উপমহাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হয়েই চলেছেন … তাহলে কি সিএএ শুধুই একটা রাজনৈতিক গিমিক ছিল?”

এর আগেই দেওরা বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে বর্ণনা করে একটি টুইট করেন।যাতে তিনি লিখেছিলেন যারা এখন ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশ থেকে চলে আসতে চাইবেন, তাদেরকেও সিএএ-র আওতায় আনতে আইনটি সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্পষ্টতই এই মুহুর্তে আইনটিতে যে ২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতে আসার ডেডলাইন নির্ধারিত আছে – তিনি সেই সময়সীমার মেয়াদ বাড়ানোর কথাই বলেছেন এবং ওই টুইট নিয়ে জল্পনাও হচ্ছে বিস্তর।

মাসদুয়েক আগে কংগ্রেসের আরেকজন নেতা ও মুখপাত্র জয়বীর শেরগিলও দলীয় লাইনের বিরুদ্ধে গিয়ে সিএএ-র আওতায় আফগানিস্তান থেকে শিখ ও হিন্দুদের ভারতে নিয়ে আসার দাবি তুলেছিলেন।

এদিকে শিবসেনা দলের মুখপাত্র ও এমপি প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীও টুইট করেছেন, “বাংলাদেশে দুর্গাপুজোর মন্ডপ, ইস্কনের মন্দির ও হিন্দুদের ঘরবাড়ি আক্রান্ত হলেও ভারত সরকার তার নিন্দা করে একটি কথাও বলছে না।”

তিনি সেই সঙ্গেই প্রশ্ন তুলেছেন, “যে সিএএ নিয়ে এত হইচই করা হচ্ছিল, কোথায় গেল সে আইন?”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.