নীতি আয়োগের উন্নয়ন তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান— কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

কলকাতা, ৫ জুন (হি স)। নীতি আয়োগের সদ্যপ্রকাশিত দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন তালিকায় (এসডিজি) পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান যথেষ্ঠ আশাব্যঞ্জক নয় বলে মনে করছেন অনেকে।

২০১৮-তে প্রথমবার এ ধরনের সূচক প্রকাশের পর থেকেই দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্য পূরণের ক্ষেত্রে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির ক্রমাগত অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ বছর তৃতীয় পর্যায়ের সূচকেও দেশে দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্যগুলি পূরণে শুরু থেকেই ধার্য বিভিন্ন মাপকাঠির অগ্রগতিতে নজর রাখা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে ধার্য মাপকাঠি অনুযায়ী অগ্রগতির লক্ষ্য পূরণে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব গড়ে উঠেছে। দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্য পূরণে সূচক তৈরি করার ক্ষেত্রে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পাশাপাশি ভারতে রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিভিন্ন এজেন্সি, কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি রূপায়ণ মন্ত্রক সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকগুলির সঙ্গে শলা-পরামর্শ করা হয়েছে।

সার্বিক লক্ষ্যপূরণের মাপকাঠিতে প্রতিটি রাজ্যকে ১০০-র মধ্যে নম্বর দেওয়া হয়েছে। ১০০-তে ৭৫ পেয়ে গতবারের মতই প্রথম হয়েছে কেরল। ৭৪ পেয়েছে হিমাচল প্রদেশ ও তামিলনাডু। ৭২ পেয়ে তৃতীয় স্থানে চার রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ, গোয়া, কর্নাটক ও উত্তরাখন্ড। ৭১ পেয়ে চতুর্থ স্থান সিকিম। ৭০ পেয়ে পঞ্চম স্থানে মহারাষ্ট্র। ৫২ পেয়ে তালিকায় গতবারের মতই শেষ স্থান পেয়েছে বিহার। দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের পশ্চিমবঙ্গ দেশে ১৮ নম্বরে। গতবারের তুলনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে মিজোরাম ও হরিয়ানা। গতবারের তুলনায় সব রাজ্যই উন্নতি করেছে। গতবার পশ্চিমবঙ্গ পেয়েছিল ৬০। এবারে ৬২ পেয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের দিকে তাকিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ ২০৩০ সালের জন্য বেশকিছু লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে। তার ভিত্তিতেই ২০২০ সালের রিপোর্ট প্রকাশ করেছে নীতি আয়োগ।

পশ্চিমবঙ্গের সমস্যাটা কোথায়? ভারতের কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্কের (নাবার্ড) প্রাক্তন আধিকারিক বিদ্যুৎ বসু ‘হিন্দুস্থান সমাচার’-কে বলেন, “নীতি আয়োগের সদ্য প্রকাশ করা এসডিজি ২০২১ থেকে দেখা যাচ্ছে যে পশ্চিমবঙ্গ গতবারের তুলনায় ভালো করেছে। আগের বারের অবস্থান থেকে ২ ঘর ওপরে উঠেছে। তাতে ২৮ টি রাজ্যের মধ্যে স্থান হয়েছে ১৮। একটু তলিয়ে দেখলে দেখা যাচ্ছে যে অন্যান্য রাজ্য আরও ভালো ফল করে পশ্চিমবঙ্গের ওপরে চলে গেছে। এমনকি ত্রিপুরা, মধ্য প্রদেশ, অন্ধ্র, তেলেঙ্গানা। এত প্রাকৃতিক বিপর্যয় সত্ত্বেও উত্তরাখন্ড সপ্তম স্থানে। যে ১৬টি লক্ষ্য নিয়ে এই সূচক হয়েছিল তার কোনওটাতেই পশ্চিমবঙ্গ প্রথম দুইয়ের মধ্যে আসতে পারেনি। নীতি আয়োগের সূচকগুলো লক্ষ্য করলেই বোঝা যায়, পশ্চিমবঙ্গের সম্ভাবনা থাকলেও অন্যান্য রাজ্য আরও ভালো করেছে। বিশেষ করে শিল্প, পরিকাঠামো, স্বাস্থ্য, শান্তি, অর্থনৈতিক বৃদ্ধি প্রভৃতিতে।“

দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে একধাপ এগিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। নীতি আয়োগের রিপোর্ট অনুযায়ী, এ রাজ্যে প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়াদের ভর্তির হার যেমন বেড়েছে তেমনই কমেছে মাধ্যমিকের পর স্কুলছুটের হারও। বেড়েছে কৃষকের আয়। পানীয় জল, জ্বালানি, নগরোন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যক্ষেত্রে গত বছর উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। তবে শিল্প, উদ্ভাবন ও পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে অবনতি হয়েছে। আর্থিক উন্নতিও ধাক্কা খেয়েছে বলে রিপোর্টে প্রকাশ করেছে নীতি আয়োগ।

নীতি আয়োগের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালে দারিদ্র দূরীকরণে পশ্চিমবঙ্গের তথ্য ভাল। অন্যান্য মাপকাঠিতে বিশেষ তারতম্য না হলেও একশো দিনের কাজে চাহিদা মতো কাজের জোগানের নিরিখে ২০১৯-এর তুলনায় অবনতি ঘটেছে। তবে এই এক বছরে কৃষিতে মাথা পিছু আয় বেড়েছে রাজ্যে। পশ্চিমবঙ্গের হাসপাতালে প্রসব, পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের মৃত্যুর হারও কমেছে। এইচআইভি সংক্রমণ রোধে রাজ্যে উন্নতি হলেও মায়েদের প্রসবকালীন মৃত্যুর হার সামান্য বেড়েছে। অন্যদিকে, রাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ কমেছে। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের জন্মহার বেড়েছে। কিন্তু নারী-পুরুষের গড় বেতনে অসাম্য বেড়েছে।

প্রেসিডেন্সির অর্থনীতির প্রাক্তনী প্রাক্তন চিফ পোস্ট মাষ্টার জেনারেল গৌতম ভট্টাচার্য এই প্রতিবেদককে জানান, “বিশাল রিপোর্ট, পড়ে ঠিক ভাবে কিছু মন্তব্য করতে সময লাগবে। কিছু প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ নীচে দিলাম:
(১) সামগ্রীকভাবে দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তর ভারতের রাজ্যগুলি এগিয়ে, মধ্য ও পূর্বভারতের রাজ্যেরা পিছিয়ে।
(২)পশ্চিমবঙ্গ পিছিয়ে আছে দক্ষিণ বা পশ্চিম ভারতের তুলনায়। এর কারণ:
(ক) ঐতিহাসিক কারণে, পশ্চিমবঙ্গের জনঘনত্ব (১০২৯) সমগ্র ভারতের গড় জনঘনত্বের (প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৩৮২) ২.৭ গুন। অর্থাৎ মাথাপিছু প্রাকৃতিক সম্পদের (ধরা যাক জমির পরিমান) সেই অনুপাতে কম।- পশ্চিমবঙ্গের এই প্রাকৃতিক সমস্যা দূর করার জন্য সচেতন চেষ্টা কেন্দ্রের তরফে কখনও দেখা যায় নি।
(২) তৃণমূল স্তরে প্রতিযোগিতার রাজনীতির সংঘর্ষে রাজ্যের কর্মসংস্কৃতি সত্তরের দশক থেকেই অবনতি হচ্ছে। এই অবস্থাকে বদল করার কোনও চেষ্টা পরিলক্ষিত হয় নি।“

পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে পরিস্রুত পানীয় জলের উন্নতি হয়েছে কিছুটা। রাষ্ট্রপুঞ্জের পক্ষ থেকে এই ধরনের একটি তালিকা প্রতি বছর প্রকাশ করা হয়। ২০৩০ সালের মধ্যে ১৭টি ক্ষেত্রে উন্নয়নের শর্তপূরণ করার সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। দেশের উন্নয়নের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ এবং উন্নয়নের দিকে নজর রাখার লক্ষ্যে ২০১৮ সাল থেকে নীতি আয়োগও এই তালিকা প্রকাশ করে আসছে।

এবারের সূচক প্রকাশের ক্ষেত্রে ১৬টি বিষয় সহ ১১৫টি ক্ষেত্রে উন্নয়নের অগ্রগতির নিরিখে মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়। এ থেকেই উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি নির্ধারণের বিষয়গুলিতে আমাদের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টার প্রতিফলন ঘটে।
নীতি আয়োগ জাতীয় স্তরের এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্যগুলি পূরণে নজরদারির পাশাপাশি অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে উপযুক্ত কর্মপন্থা গ্রহণে তদারকি করে। সেইসঙ্গে, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে সহযোগিতামূলক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় পারস্পরিক প্রতিযোগিতার ব্যাপারে উৎসাহিত করে।
প্রকাশিত সূচক অনুযায়ী সুস্থায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্য পূরণে সার্বিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে এবার ২০১৯-এর ৬০ পয়েন্ট থেকে ৬ বেড়ে ৬৬ পয়েন্ট হয়েছে।

জাতীয় স্তরে বিখ্যাত অর্থনীতির অধ্যাপক ডঃ অজিতাভ রায়চৌধুরী এই প্রতিবেদককে জানান, “১। যে রাজ‍্যগুলি গড়ের থেকে পিছিয়ে, তার সিংহভাগ পূর্ব আর উঃ পূঃ ভারত থেকে। কেন? কোন জায়গায় সমস‍্যা? বাংলা কি এই রাজ‍্যগুলির থেকে চরিত্রগত দিক থেকে আলাদা? না কি এখানে কিছু কাঠামোগত সমস‍্যাও বিদ‍্যমান?
২। সূচক গঠনে কিছু সমস‍্যা আছে- যেমন পঃ বঙ্গ স্বাস্থ‍্য ক্ষেত্রে কেরালা বা হরিয়ানার উপরে আবার ক্ষুধার সূচকে বা গরিবির সূচকে পিছিয়ে প্রধানত স্বাস্থ‍্য সংক্রান্ত কারণেই- একটু স্ববিরোধী লাগছে না কি?
৩। শিক্ষায় দেখছি ১৮-২৩ বছরে লিঙ্গ বৈষম‍্য পঃ বঙ্গে বেশ বেশী (ছেলেদের অনুপাতে মেয়েরা)- তাহলে বহু প্রশংসিত ‘কন‍্যাশ্রী’ কি কাজই করেনি? আর উচ্চশিক্ষায় নাম লেখানোর ক্ষেত্রে তো আমরা শেষের শ্রেণীতে- তাহলে এত নতুন কলেজ বিশ্ববিদ‍্যালয়ের কি কোনই প্রভাব প‍ড়েনি?
৪। পরিশ্রুত জল আর স‍্যানিটেশনের ক্ষেত্রে তো পঃ বঙ্গ বড় রাজ‍্যগুলির পেছনে। সবচেয়ে সমস‍্যা গ্রামে পাইপের মাধ‍্যমে পরিশ্রূত জল সরবরাহে- অথচ এখানে তো সরকার যথেষ্ট বিনিয়োগ করেছে বাজেট মোতাবেক।
৫। সবশেষে, কাজ ও উন্নয়নে বাংলা বহু পেছনে। এখানে সবচেয়ে খারাপ সূচক ব‍্যবসা করার সুবিধার সূচকে- সরকার তো এ ব‍্যাপারে সচেষ্ট। তাহলে কি স্থানীয় ভাবে ঘুষ বা দাদাগিরি ব‍্যবসা করার অন্তরায় হচ্ছে। ভাববার বিষয়। আর ব‍্যাংকের অপ্রতুলতার জন‍্যে দায় কার?“

উন্নয়নের অগ্রগতির নিরিখে সবথেকে ভালো ফল করেছে মিজোরাম, হরিয়ানা ও উত্তরাখণ্ড। এই তিনটি রাজ্যে ২০১৯-এর তুলনায় ২০২০-২১-এ উন্নয়নের নিরিখে পয়েন্ট বেড়েছে যথাক্রমে ১২, ১০ ও ৮। ২০১৯-এ উন্নয়নের নিরিখে যে ১০টি রাজ্য একেবারে সামনের সারিতে ছিল তাদের সঙ্গে এবার আরও ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল যুক্ত হয়েছে। লক্ষ্যণীয়ভাবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ এবারের সূচকে ভালো ফলাফল করে সামনের সারিতে উঠে এসেছে।

অর্থনীতিবিদ তথা নয়াদিল্লির গবেষণা-প্রতিষ্ঠান আরআইএস-এর অধ্যাপক ডঃ প্রবীর দে এই প্রতিবেদককে জানান, “এই রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান ২০১৮ সালে ছিল ১৬, সেটা ২০২১ সালে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৭। এক ধাপ অবনমন হয়েছে। যেটা লক্ষ্য করার বিষয় সেটা হলো পশ্চিমবঙ্গ ১৬টা সূচকের কোনওটাতেই প্রথম হয় নি। তালিকায় বিন্যাস অনুযায়ী কেরালা প্রথম রাজ্য। পৃথক সূচনাগুলোর মধ্যে, কেরালা ‘ক্ষুধার শূন্যতা’ আর ‘উৎকর্ষ শিক্ষা’ সূচকে প্রথম। পশ্চিমবঙ্গের পাশের রাজ্য ওড়িশা ‘লাইফ বিলো ওয়াটার’ এবং ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন’ সূচকে দেশে প্রথম। ত্রিপুরার মতো ছোট্ট রাজ্য যেখানে মানুষের জীবন খুব কষ্টের মধ্যে দিয়ে যায় বলে অনেকে মনে করেন, সেই রাজ্য
‘রেসপনসিবল কনজাম্পশন অ্যান্ড প্রোডাকশন’ সূচকে রাজ্যগুলোর মধ্যে প্রথম হয়েছে। সেই তুলনায়, পশ্চিমবঙ্গ আজ অনেক ভাবেই লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে আছে। উল্লেখিত সূচকগুলোয় পশ্চিমবঙ্গ অনেকটাই পিছিয়ে। অন্য গুলোতে পশ্চিমবঙ্গ মাঝের দিকে নতুবা প্রথম দিকে। ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ অনেক পিছিয়ে ছিল এই তালিকার কিছু মাপকাঠিতে। লিঙ্গসমতা (জেন্ডার ইকুয়ালিটি) আর সাসটেনেবল সিটিজ অ্যান্ড কমিউনিটিজ’-এ পশ্চিমবঙ্গ এখনোও অনেকটা পিছিয়ে আছে, যা ২০১৮ সালেও ছিল।“

এই সূচক প্রকাশ করে নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারপার্সন ডঃ রাজীব কুমার বলেন, “আমাদের দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণে অগ্রগতির সূচক এবং সংশ্লিষ্ট তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করার মাধ্যমে সুস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণের ওপর নিয়মিত নজর রাখা হচ্ছে। এই কারণেই নীতি আয়োগের এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক স্তরেও বিভিন্ন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং প্রশংসিত হয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির উন্নয়নে অগ্রগতির নিরিখে তথ্যনির্ভর এই সূচক প্রকাশ নিঃসন্দেহে এক জটিল কাজ। তবে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী যে আমাদের এই প্রয়াস রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব বাড়ানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরেও প্রশংসিত হবে।”

২০৩০ সালের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্য পূরণে আমাদের যাত্রাপথে এবারের সূচকে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নের মাপকাঠির নিরিখে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশের ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নীতি আয়োগের কার্যনির্বাহী আধিকারিক অমিতাভ কান্ত। তিনি বলেন, এবারের সূচকে দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্যগুলি পূরণে আমাদের যাবতীয় প্রচেষ্টার মধ্যে সুসমন্বয়ের বিষয়গুলি প্রতিফলিত হয়েছে।

অধ্যাপক প্রবীর দে-র কথায়, “পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এই সূচকের সাথে একমত নাও হতে পারেন। কিন্তু আপনারা একমত হবেন আমার সাথে যে পশ্চিমবঙ্গের লিঙ্গ সমতা এবং ‘সাসটেনেবল সিটিজ অ্যান্ড কমিউনিটিজ’- বিষয় গুলোতে অনেক কাজ বাকি আছে। সর্বত্র মহিলাদের অধিকার আমাদের দিতেই হবে। রাজ্যের শহরগুলোকে সুন্দর ভাবে বাঁচার মতো পরিবেশের সাথে ভারসাম্য রেখে তৈরি করতে হবে। তার সাথে শহর আর গ্রামের মধ্যের অর্থ-সামাজিক দূরত্ব কমাতে হবে দ্রুততার সাথে। তার সাথে সর্ব প্রকার পরিকাঠামোর উন্নতি দরকার। শিল্পের সাথে সাথে দরকার নতুনত্ব, যা আমাদের রাজ্যে আধরা।

উন্নয়নের নিরিখে একটা সময় ভারতবর্ষ বলতে পশ্চিমবঙ্গকেই বোঝাতে। কেরালা রাজ্য থেকে শেখা উচিত। কেরালা আর পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে একটা বিশেষ তফাত সেটা হলো পশ্চিমবঙ্গ আজও পার্শ্ববর্তী রাজ্য আর দেশ থেকে মানুষজনের ভার বয়ে চলেছে, যা কেরালাতে কম। শেষে বলি পশ্চিমবঙ্গের জেলাভিত্তিক নিজস্ব এসডিজি রিপোর্ট থাকা উচিত। কিন্তু কেউ কি আছে সেই মহৎ কাজটা করার জন্য?“

অশোক সেনগুপ্ত

Foto, link
হিন্দুস্থান সমাচার/ অশোক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.