প্লাস্টিক বর্জন অনিবার্য, নয়তো সামনে সমূহ বিপদ, জানালো রাষ্ট্রসংঘ

হাতে আছে আর মাত্র ১০ বছর! এই সময়ের মধ্যে সারা বিশ্বকে প্লাস্টিক শূন্য করার চ্যালেঞ্জ জানাল রাষ্ট্রসঙ্ঘ। সম্প্রতি রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফে আয়োজিত, পরিবেশ সংক্রান্ত বিভাগের ৫ দিনের ব্যাপী সম্মেলন থেকে এই আর্জি রাখা হয়েছে বিভিন্ন দেশের কাছে।

জানানো হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে প্লাস্টিকের ব্যবহার ন্যূনতম করতে হবে৷ না করলে বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না পরিবেশকে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সভাপতি সিম কিসলাম এই সম্মেলনে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, আর কোনও তথ্য-পরিসংখ্যান বা আলোচনা-সমালোচনা নয়। প্লাস্টিক বর্জন নিয়ে এবার সরাসরি পদক্ষেপ চাইছেন তাঁরা৷
নাইরোবিতে আয়োজিত হয়েছিল এই পরিবেশ-সম্মেলন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সব ক’টি দেশই যোগ দিয়েছিল তাতে। সেখানেই পরিবেশের ক্ষতিকারক সামগ্রী নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায়, পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে প্লাস্টিককে৷ জানানো হয়েছে, উন্নত বিশ্বের দেশগুলিকে দ্রুত প্লাস্টিক বর্জনের কড়া পদক্ষেপ করতে হবে৷

তবে সেই সঙ্গেই রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফে এ-ও জানানো হয়েছে, কেবল আর্জি করলেই যে সমস্ত দেশ প্লাস্টিক বাতিল করতে একই রকম ব্যবস্থা নেবে, এমনটা ভেবে নেওয়া খুব ভুল হবে৷ কারণ, এমনটা কোনও দিনই বাস্তবে সম্ভব নয়৷ তবে যেটা সম্ভব, সেটা হল, প্রতিটা মানুষ যদি আলাদা ভাবে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমান, তা হলে তা কাজে দিতে পারে৷ প্লাস্টিকমুক্ত পৃথিবী তৈরিতে প্রতিটা মানুষের চেষ্টা জরুরি।


এই সম্মেলনে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য দিয়ে জানানা হয়, সারা বছরে কত প্লাস্টিক ব্যবহার করে তারা৷ বিশ্বখ্যাত পানীয় সংস্থার একটি ব্র্যান্ড জানিয়েছে, বছরের তারা অন্তত ৩০ লক্ষ টন প্লাস্টিক ব্যবহার করে৷ গবেষণা বলছে, এর ফলে সব চেয়ে বেশি দূষিত হয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় সমুদ্র উপকূল৷ বিপদে পড়ে জলের প্রাণীরা।


নাইরোবির ওই সম্মেলনে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় হাজার পাঁচেক মানুষ যোগ দেন। ছিলেন নানা দেশের পরিবেশ মন্ত্রী, বিজ্ঞানী এবং বাণিজ্য জগতের প্রতিনিধিরা৷ সকলেই প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো নিয়ে একমত হয়েছেন৷ ঠিক হয়েছে, রাষ্ট্রসঙ্ঘের নির্দেশ মেনে যে যার মতো করে পরিবেশ সুরক্ষার জন্য কাজ করবে৷ কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০৷ তার মধ্যেই কাজের প্রভাব হাতেনাতে পেশ করতে হবে৷
এ ছাড়া এই পাঁচ দিনের সম্মেলনে আরও দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর পাশাপাশি খাবার নষ্ট করাও রুখতে হবে৷ সেই সঙ্গে, কোথাও কোনও রকম উন্নয়নমূলক কাজের পরিকল্পনা করা হলে, তা ওই দেশের প্রাচীন ও স্থানীয় জনজাতির সঙ্গে আলোচনা করেই করতে হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.