প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিদেশ সফরে গেলেই সেদেশে বসবাসরত প্রবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকেন। আমেরিকা থেকে জার্মানি, বারবার এই দৃশ্য উঠে এসেছে। এই আবহে ইউরোপ সফরের দ্বিতীয় দিন ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী সেখানকার প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী সেখানে বলেন যে বিশ্বকে আরও উন্নত করতে ভারত এবং ডেনমার্কের অংশীদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ুর ক্ষতির ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকা খুবই নগণ্য বলেও এদিন দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘পৃথিবী ধ্বংসে ভারতীয়দের কোনও ভূমিকা নেই।’ প্রধানমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, ‘আমরা পৃথিবীকে বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। ২০৭০ সাল নাগাদ আমরা নেট জিরো লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি… ভারত তার জলবায়ু সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনে সক্ষম হয়েছে কারণ, অন্য দেশগুলি পৃথিবীকে বাঁচানোর সমস্ত দায়িত্ব বহুপাক্ষিক সংস্থার উপর চাপালেও আমরা এটিকে প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব হিসাবে দেখি। তাই প্রতিটি নাগরিক পৃথিবীকে বাঁচাতে তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন।’
প্রধানমন্ত্রী মোদীর কথা শোনার জন্য কোপেনহেগেনের অডিটোরিয়ামে বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন গতকাল। বার্লিনের মতো সেখানেও মোদী-মোদী স্লোগান ওঠে মঙ্গলবার। বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডরিকসনকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় চাহিদা, LIFE- অর্থাৎ লাইফস্টাইল ফর এনভায়রনমেন্টের প্রচার।’ তার কথায়, এ জন্য ‘ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার’ মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, ‘ভারতীয়দের জীবনে গতির পাশাপাশি ‘শেয়ার অ্যান্ড কেয়ারের’ মূল্যবোধ রয়েছে। তাই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভারতের সক্ষমতায় বিনিয়োগ করা সমগ্র বিশ্বের স্বার্থে।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘একজন ভারতীয় বিশ্বের যেখানেই যান না কেন, তিনি তাঁর কাজ দিয়ে সেই দেশের জন্য আন্তরিকভাবে অবদান রাখেন। অনেকবার যখন আমি বিশ্ব নেতাদের সাথে দেখা করি, তাঁরা গর্ব করে আমাকে তাঁদের দেশে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের অর্জনের কথা বলেন।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারত আজ যা কিছু অর্জন করছে, সে অর্জন শুধু ভারতের নয়, এটি গোটা মানবতার ২০ শতাংশের অর্জন। ভাবুন তো ভারতে আমরা যদি প্রতিটি পরিবারে টিকা পৌঁছে দিতে না পারি, তাহলে বিশ্বে কী প্রভাব পড়বে?’ প্রধানমন্ত্রী এরপর বলেন, ‘কোভিডের সময় সবার জীবনে ভার্চুয়াল ছোঁয়া লেগেছে। ডিজিটাল ভারতের সঙ্গে আরও অনেক মানুষ নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন। নতুন যে ব্যবহারকারীরা আজ যোগ দিচ্ছেন, তারা প্রত্যেকে ভারতের গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দা। এটা শুধুমাত্র ভারতের গ্রাম ও দরিদ্রদের ক্ষমতায়ন করেনি, এটি একটি খুব বড় ডিজিটাল বাজারের দরজা খুলে দিয়েছে। এটাই নতুন ভারতের আসল গল্প। স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেমে ভারতকে সেভাবে ধরা হয়নি প্রাথমিকভাবে; তবে এখন এটি বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।’