গোটা দেশের ১৭ রাজ্যের ৫১টি সিটে উপনির্বাচন হয়েছে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পণ্ডিচেরি সারপ্রাইজ দিয়েছে মূলত, বিজেপি শাসিত বিহার এবং গুজরাত। তবে উত্তর প্রদেশে উঠেছে গেরুয়া ঝড়। বিজেপি এবং জোট বেঁধে শক্তি বাড়িয়েছে বেশ অনেকটা।
উত্তর প্রদেশে মোট ১১টি সিটে উপনির্বাচন হয়েছে। বিজেপি এই রাজ্যে আঞ্চলিক পার্টি ‘আপনা দলে’র সঙ্গে জোট বেঁধেছিল তাঁদের বিস্তারের জন্য। বিজেপি একা এবং জোট মিলিয়ে মোট আট’টি সিট পেয়েছে। অন্যদিকে সমাজবাদী পার্টি তিনটি সিট পেয়েছে। মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি একটি সিটে এগিয়ে থাকলেও তা বেশিক্ষন থাকেনি। মোট ১১টি সিটের বিজেপির সাতটি সিট এবং প্রতাপগড়ের সিটটিতে আপনা দলের সঙ্গে জোট করেছে বিজেপি।
বিজেপির জয়ে উচ্ছ্বসিত উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জানিয়েছেন, “বিজেপি একা এবং তাঁদের জোট জয় পেয়েছে। আমি সকল জয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানাই, প্রধানমন্ত্রী মোদীর সবকা সাথ, সবকা বিকাশের মন্ত্র গোটা দেশে রাজনীতির ভাষা বদলে দিয়েছে।”
অন্যদিকে, উত্তর প্রদেশের কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদরা বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ এনেছেন। তিনি স্পষ্ট বলেন, বিজেপি মানুষের মতামতকে প্রভাবিত করতে চাইছে। তবে তিনি কংগ্রেসকে তাঁদের অভিনন্দিত করেছেন তাঁদের পারফরম্যান্সে উন্নতি দেখে। রাজ্য কংগ্রেসকেও এগিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা চলে গিয়েছে সেই কবে, তারপর ত্রিপুরাতেও পর্যুদস্ত হয়েছে বামেরা। লাল পতাকার শেষ আশা হয়ে জেগে রয়েছে কেরালা। আর সেই আশা যে খুব একটা অবাস্তব নয়, তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল। বুধবার হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের মধ্যে কিছুটা চাপাই পড়ে গেল কেরালার ৫টি কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল। সিপিএম এবং কংগ্রেস কেরালায় ২টি করে আসনে জয়ী হল। একটি আসন পেল ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ (আইইউএমএল)।
উল্লেখ্য, গত নির্বাচনে কংগ্রেসের দখলে থাকা কোনি, ভাত্তিয়ুরকাভু বিধানসভায় জয়লাভ করে সিপিএম। অন্য দিকে আরুর, এর্নাকুলাম দখল নিয়েছে কংগ্রেস। ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ নিজেদের পুরনো মঞ্জেশ্বর আসনটি দখলেই রেখেছে। ভোট শতাংশের নিরিখেও সবার আগে রয়েছে সিপিএম। ৩২ শতাংশ ভোট মিলেছে লালদের। কংগ্রেস ২৮ শতাংশ এবং বিজেপি ২৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে।
এই ফলাফলে আবারও প্রমাণিত হল অন্যান্য রাজ্যে যতই গেরুয়া ঝড় উঠুক, কেরালায় এখনও দাঁত ফোঁটাতে ব্যর্থ মোদী-অমিত শাহরা। লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ৩৩ হাজার ভোটে পিছিয়ে পড়লেও রাজ্য জুড়ে সেই ভরাডুবির ধাক্কা কাটিয়ে গত মাসেই কেরলের পালা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী হয় সিপিএমের নেতৃত্বাধীন এলডিএফ। এরপরই এই উপনির্বাচনে ভাত্তিয়ুরকাভু এবং কোনি আসনে জয়, ফের লড়াইয়ের মঞ্চে বামশক্তির ফিরে আসার ইঙ্গিতবাহক, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।