এয়ার স্ট্রাইকে জঙ্গি নিধনের প্রমাণ চাইলে পাকিস্তানে গিয়ে মৃতদেহ গুনে আসুন। এমনই নিদান দিলেন উত্তরপ্রদেশের কৃষিমন্ত্রী সূর্যপ্রতাপ শাহী।
মঙ্গলবার আলিগড়ে কৃষক মেলার উদ্বোধন করতে এসেছিলেন এই মন্ত্রী। সেখানেই তিনি বলেন, দেশের বিরোধী নেতারা তাঁদের নিজের দেশের মৃতদেহ নিয়ে আদৌ চিন্তিত নন। তবে পাকিস্তানের মানুষের মৃত্যু নিয়ে তাঁরা বিশেষ ভাবে চিন্তিত। তাই কত জন মারা গিয়েছেন, এই নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। প্রমাণ চাওয়ার শেষ নেই।
সূর্যপ্রতাপের কথায়, “আমাদের সেনা প্রধানও বলে দিয়েছেন, লক্ষ্যেই আঘাত হানা হয়েছে। তবে মৃতদেহ গোনা তাঁদের কাজ নয়। তবু কিছু মানুষের মাথাব্যথা কমছে না।”
তবে এমন মন্তব্য এই প্রথম নয়। মঙ্গলবার অসমের এক জনসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ-ও বলেন, “কংগ্রেস ও অন্যান্য যারা এয়ার স্ট্রাইকের প্রমাণ চাইছেন, তাঁরা পাকিস্তানে চলে যান। আর লাশের সংখ্যা গুনুন।” এতেই অবশ্য থেমে থাকেননি তিনি। প্রশ্ন তোলেন, বায়ু সেনা কি আক্রমণের পর লাশ গুনতে শুরু করবে? এটা কী ধরনের নাটক করছে বিরোধীরা?
গত মাসের ১৪ তারিখে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান ৪৪ জন সেনা। ঘটনায় দায় স্বীকার করে জইশ-ই-মহম্মদ। এর ১২ দিন পরে, ২৬ তারিখ কাকভোরে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইক চালিয়ে জঙ্গিঘাঁটি নিকেশ করে ভারতীয় বায়ুসেনা।
এর পরেই পাকিস্তানে ওই বিমান হানার বিস্তারিত তথ্য জানানোর দাবি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরে একই দাবিতে সরব হতে থাকে অন্য বিরোধী দলগুলিও।
বিমান হানায় কত জন সন্ত্রাসবাদীকে খতম করা গিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন জাগে বিভিন্ন মহলে। কোথাও কোনও সঠিক তথ্য না মেলায় বাড়ে সন্দেহ। এক দিকে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ দাবি করেন ভারতীয় প্রত্যাঘাতে ২৫০ সন্ত্রাসবাদীর মৃত্যু হয়েছে। আবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দাবি করেন ৪০০ সন্ত্রাসবাদীর মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তান দাবি করে, কিছুই হয়নি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলিও জানায়, ঘটনাস্থলে বিপর্যয়ের ছাপ স্পষ্ট নয়।
সব মিলিয়ে প্রত্যাঘাতের সাফল্য ঘিরে একাধিক প্রশ্ন ওঠে। এর মধ্যেই বায়ুসেনা প্রধান জানিয়ে দেন, হামলা করলেও মৃতদেহ গোনা তাঁদের কাজ নয়। এর মধ্যেই মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সামনে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেন, “বিদেশ সচিব এ বিষয়ে যা জানিয়েছেন, সেটাই সরকারের বক্তব্য।”