ঋণে জর্জরিত সুপার পাওয়ার! দেশ চালাতে ভারতের থেকে ২১৬ বিলিয়ন ডলার ধার নিয়েছে আমেরিকা

করোনার কারণে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি চরম প্রভাবিত হয়েছে। বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী দেশ আমেরিকাও এর থেকে রেহাই পায়নি। আমেরিকার অর্থনীতি ভারতের তুলনায় ৭ গুণ বড়। আমেরিকার অর্থনীতি ২১ ট্রিলিয়ন ডলারের। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের সবথেকে বড় অর্থনীতির দেশে ঋণের বোঝা ২৯ ট্রিলিয়ন ডলার (২৯ লক্ষ কোটি ডলার) হয়ে গিয়েছে। ভারতীয় অর্থনীতির থেকে এই ঋণ প্রায় ১০ গুণ বেশি। আমেরিকা ভারতের থেকে ২১৬ বিলিয়ন ডলার (১৫ লক্ষ কোটি টাকা) ঋণ নিয়েছে। ২০২০ সালে আমেরিকার মোট ঋণ ২৩.৪ ট্রিলিয়ন ডলার ছিল। সেই হিসেবে আমেরিকার প্রতি ব্যক্তির উপর ৭২৩০৯ ডলার (৫২ লক্ষ টাকার) এর ঋণ ছিল।

নতুন এই রিপোর্টে এই সময় আমেরিকার প্রতি ব্যক্তি পিছু ৮৪ হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৬০ লক্ষ টাকা) এর ঋণ আছে। আমেরিকান কংগ্রেস অ্যালেক্স মুনি বলেন, আমেরিকা সবথেকে বেশি চীন আর জাপানের থেকে ঋণ নিয়েছে, আর এঁরা আমেরিকা বন্ধুও না। অ্যালেক্স বলেন, আমেরিকার কাছে চীন সবসময় প্রতিযোগী হিসেবে ছিল। আমেরিকা চীন আর জাপান দুই দেশের থেকেই ১ ট্রিলিয়ন ডলারের ঋণ নিয়ে রেখেছে। আর এত টাকার ঋণের বোঝা দেখে অ্যালেক্স ১.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের নতুন আর্থিক প্যাকেজের বিরোধিতা করেছেন।

আমেরিকা ব্রাজিলের থেকেও ২৫৮ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নিয়েছে। ২০০০ সালে আমেরিকার মাথায় ৬ ট্রিলিয়ন ডলারের ঋণ ছিল, যা বারাক ওবামার শাসনকালে দ্বিগুণ হয়ে যায়।

অ্যালেক্স জানান, ওবামা আট বছর দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন আর ওনার শাসনকালে দেশের মাথায় ঋণের বোঝা দ্রুত গতিতে বেড়ে যায়। অ্যালেক্স আমেরিকান কংগ্রেসের অন্য সদস্যদের নতুন এই আর্থিক প্যাকেজকে মঞ্জুরি দেওয়ার আগে বিস্তারিত চিন্তা ভাবনা করার আবেদন জানিয়েছেন। উনি এও বলেছেন যে, Congressional Budget Office এর অনুযায়ী ২০৫০ সালের মধ্যে আমেরিকা আরও ১০৪ ট্রিলিয়ন ডলারের ঋণ নেবে। এই পরিসংখ্যান আশঙ্কাজনক বলে জানান তিনি।

ভারতের কথা বললে, সরকার ২০২০-২১ এর আর্থিক বছরের বাজেটের জন্য মার্কেট থেকে ১২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন সরকারের উপর মোট ঋণ ১৪৭ লক্ষ কোটি টাকা। নতুন আর্থিক বছরে ঋণ নেওয়ার ঘোষণার পর এই ঋণের পরিমাণ বেড়ে ১৫৯ লক্ষ কোটি টাকা হয়ে যাবে। চলতি অর্থবছরে অর্থনীতি 7.৩ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বলে রাখি, ২০২০-২১ এর চলতি আর্থিক বছরে সরকার রাজস্ব ঘাটতির অনুমান GDP-এর ৯.৩ শতাংশ ধরে রেখেছে। আগামী আর্থিক বছর ২০২১-২২ এর জন্য এই ঘাটতির অনুমান GDP-এর ৬.৮ শতাংশ ধরা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.