মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশ করল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা

নির্বাচনের ফল প্রকাশের তিন সপ্তাহ পরেও কোনও দলই সরকার গড়তে না পারায় মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সুপারিশ করল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। আগেই এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে অনুরোধ করেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারি। রাজ্যপালের সুপারিশপত্র পাওয়ার পরে দিল্লিতে দ্রুত শুরু হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। বৈঠকের শেষে রাজ্যপালের সুপারিশেই তারা মোহর লাগিয়ে দেয় বলে সূত্রের খবর।

সরকার গড়ার জন্য বাড়তি সময় চেয়েও তা না পাওয়ায়, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে যাচ্ছে মহারাষ্ট্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল শিবসেনা।

কংগ্রেস এবং এনসিপি মনে করছে, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়ে গেলেও শিবসেনার নেতৃত্বাধীন সরকার গড়া সম্ভব হবে। সেক্ষেত্রেও মহারাষ্ট্রে বিজেপিকে বাইরে রেখে সরকার গড়া হলে ক্ষমতার বিভাজন কী ভাবে হবে, তা এখনও স্থির করে উঠতে পারেনি শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস।

শরদ পওয়ার মঙ্গলবার তাঁর দলের ৫৪জন বিজয়ী প্রার্থীকে নিয়ে বৈঠক করেন। মহারাষ্ট্রে সরকার গড়া নিয়ে সোমবার দুই পর্যায়ে দীর্ঘ বৈঠক করেছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। বিজেপিকে বাইরে রেখে সরকার গড়ার ব্যাপারে তাদের মনোভাব ইতিবাচকই। তবে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত তারা সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি বলে শিবসেনাও সরকার গড়ার প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড় করতে পারেনি।

সরকার গড়ার জন্য আরও ৪৮ ঘণ্টা সময় চেয়েছিল শিবসেনা। তবে তা নাকচ করে দিয়ে মহারাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম দল ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টিকে (এনসিপি) সরকার গড়তে ডাকেন রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারি। মহারাষ্ট্রে যা পরিস্থিতি, তাতে এনসিপিকেও সমর্থন জোগাড় করতে হবে সেই কংগ্রেস ও শিবসেনার থেকেই। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশ করে দেন রাজ্যপাল।

বিজেপিকে বাদ দিয়েই যখন সরকার গড়া সম্ভব হচ্ছিল, তখনও কেন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগল কংগ্রেস, এই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। কংগ্রেসের সমস্যা অন্য জায়গায়। কেরলের কয়েকজন নেতা মনে করছেন, হিন্দুত্ববাদী শিবসেনাকে সমর্থন করলে ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে।

বিজেপির সঙ্গে তিন দশকের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে শিবসেনা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন তাঁদের দলের অরবিন্দ সাওয়ান্ত। তবে তাতেও তাদের সমর্থন করার ব্যাপারে দ্বিধা কাটছে না কংগ্রেসের।

২৮৮ আসন বিশিষ্ট মহারাষ্ট্রে কোনও দল সরকার গড়ার দাবি না জানানোয় প্রথমে বৃহত্তম দল হিসাবে বিজেপিকে (১০৫টি আসন) ডেকেছিলেন রাজ্যপাল। বিজেপি সরকার গড়বে না বলে জানিয়ে দেওয়ার পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসাবে শিবসেনাকে (৫৬) ডাকেন রাজ্যপাল, কিন্তু বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে শিবসেনাও সরকার গড়তে পারেনি। এই অবস্থায় ডাক পড়ে তৃতীয় বৃহত্তম দল এনসিপির (৫৪)। কিন্তু প্রয়োজনীয় সমর্থন জোগাড় করে রাজ্যপালের কাছে তা পেশ করতে পারেনি কোনও দলই।

শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের ছেলে আদিত্য ঠাকরে সোমবার জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ নতুন জোটে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বোঝাপড়া হতে কিছুটা সময় লাগেই। সে জন্যই আমরা রাজ্যপালের কাছ থেকে সময় চেয়েছিলাম, কিন্তু উনি সেই সময় দিতে রাজি হননি। তাতেই ক্ষুব্ধ শিবসেনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.