ভক্তরা চিরকাল অশিক্ষিতই থাকবে, বামেরাই অবশ্য শিক্ষার সব মাপকাঠি নিয়ে বসে আছে।
গত বছর কোভিড শুরু হওয়ার পর থেকে কিছু ঘটনা যদি বিবেচনা করা যায় তাহলে হয়তো “শিক্ষার মাপকাঠি” না বদলালেও বামেদের মুখোশ খোলা যেতে পারে ।
প্রথম, ২০ লাখ কোটির প্যাকেজ!
এই টাকা মূলত যে যে খাতে খরচ করা হয়েছে তার মধ্যে সব থেকে অন্যতম হল ৮০ কোটি মানুষকে দেওয়া বিনামূল্যে রেশন, যার জন্য প্রায় 2 লাখ কোটি বরাদ্দ হয়েছিল।
এরপর এই প্যাকেজের সিংহভাগ ছিল বাজারে লিকুইডিটি বাড়ানোর জন্য, প্রায় ৮ লাখ কোটির একটু বেশি। বিভিন্ন MSME গুলোকে লিকুইড প্রোভাইড করা যে MSME গুলো দেশের ১১ কোটি মানুষকে রোজগার দেয়, দেশের GDP এর ২৯% কভার করে। অর্থাৎ এই কাজটি করে হয়তো ফিন্যান্স মিনিস্টার খারাপই করেছেন( সুডো সেকুলার ও লেফ্ট লিবারাল দের মতে) ।
এর সাথে বিভিন্ন NBFC গুলোকে ফান্ড প্রোভাইড করেছে,যাতে সাধারণ মানুষের হাতে আবার টাকা আসে আর সেই টাকা কাজে লাগিয়ে আনার নিজেকে পুনঃস্থাপন কেরতে পারে ।
২ লক্ষ কোটি টাকা কিষান ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে গরীব কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ৫০ লক্ষ স্ট্রিট ভেন্ডরদের জন্য আছে ৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া মহিলাদের খাতায় ৩ মাস ধরে ৫০০ করে টাকা ডিরেক্ট দেওয়া। উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে ফ্রিতে গ্যাস দেওয়ার মত বিভিন্ন প্রকল্প রয়েছেই।
যদিও এগুলো সব আমরা অশিক্ষিত বলেই দেখতে পাই, শিক্ষিত লোকেরা হয়ত পায়না।
দ্বিতীয়, CMIE এর রিপোর্টে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে গত বছরের এপ্রিলে বেকারত্ব ছিল পিক ২৩.৫ শতাংশে যেটা এ ২০২১ এর ফেব্রুয়ারিতে হয়েছে ৬.৯% । লেবার মিনিস্ট্রির ডাটা দেখলে বজায় যায় আত্মনির্ভর ভারত রোজগার যোজনার মাধ্যমে ১৬.৫ লাখ সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়েছেন। অবশ্য এই ডাটা গুলোও আমরা অশিক্ষিত ভক্তরা দেখতে পাই।
তৃতীয়,
করোনাকালে প্রায় ৫২ হাজার নুতন কোম্পানি খুলেছে, যা বন্ধ হয়ে যাওয়া কোম্পানিগুলোর সংখ্যার(১০১১৩) তুলনায় অনেক অনেক গুন বেশি।
চতুর্থ, দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক দুর্দশা থেকে তুলে নিয়ে আসা অর্থনীতিবিদ ও দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাননীয় মনমোহন সিং UPA সরকার চালানোকালীন বলেছিলেন “ওe are a coalition government, and that limits our options in some ways. Privatization happens to be one such area”. অর্থাৎ উনিও জানেন প্রাইভেটাইজেশনের গুরুত্ব । তবে শুধু উনি না, বিভিন্ন উন্নত দেশগুলোর নীতি দেখলে বোঝা যাবে যে সরকারের বিজনেসে যাওয়া ঠিক না , সরকার বিজনেসকারীদেরকে রেগুলেট করার জন্য সঠিক। এমনকি রিসেন্ট অর্থনীতিতে নোবেল পাওয়া অভিজিৎ ব্যানার্জীও বলেছেন যে লসে চলা পাবলিক সেক্টরগুলির প্রাইভেটাইজেশন দরকার।
পঞ্চম, ২০২০-২১ এর প্রথম কোয়াটরে ২৩.৯% নেগেটিভ গ্রোথ দেখার পরও থার্ড কোয়াটারে সেটা 1% পজিটিভ গ্রোথ দেখাতে সক্ষম হয়েছে । এখানে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতির প্রশংসা বোধহয় আমরা “অশিক্ষিত” বলেই করতে পারি।
IMF, Oxford, Moody সহ বিভিন্ন সংস্থা ২০২১-২২ এ ভারতের জিডিপি গ্রোথ রেট প্রেডিক্ট করেছে ১০% বা তার বেশি। করোনা থেকে শক্তিশালী ভাবে বেরিয়ে আসা অর্থনীতিগুলোর মধ্যে ভারত অন্যতম। ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে রেকর্ড গ্রোথ, FDI এ বিশ্বে সর্বোচ্চ স্থান পাওয়া, এগুলো সব ওই “অশিক্ষিতদের সরকারের” জন্যই সম্ভব হয়েছে। আজ টেসলা, স্যামসাং থেকে অ্যাপেল সবাই ভারতে ইনভেস্ট করছে, নুতন ম্যানুফ্যাকচারিং ফার্ম করছে। এগুলোও সব কেন্দ্রীয় সরকারের জন্যই।
ষষ্ঠ, ভ্যাকসিন ৫% ও অন্যান্য মেডিকেল কমার্শিয়াল সাপ্লাইএ ১২% জিএসটি বন্ধ করলে প্রস্তুতকারকরা তার ইনপুট অফসেট করতে পারবে না যার ভার গিয়ে পরবে সাধারণ ক্রেতাদের উপর। তখন তারা মূল্যবৃদ্ধি করবে এই জিনিসগুলোর। তাছাড়াও এই জিএসটির ১০০% এর মধ্যে সব মিলে ৭০% এরও বেশি যায় রাজ্যের কাছে, তাহলে তারা সেই ট্যাক্স না নিয়ে সেটা মুকুব করছে না কেন?! কারণ একটাই, সরকারেরও ট্যাক্স কালেকশন দরকার, যে ট্যাক্স দিয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প, বিভিন্ন যোজনা চালাতে পারবে। আজ আমরা সব কিছুতেই ট্যাক্স না দিয়ে যদি বলি আমাদের ফ্রিতে রেশন চাই তাহলে সেটা মামারবাড়ির আবদারের থেকেও বড় কিছু চাওয়া হবে ।
PM Cares ফান্ড থেকে বিভিন্ন রাজ্যকে অক্সিজেন প্লান্ট বসাতে টাকা দেওয়া হয়েছে, দেওয়া হয়েছে হাজার হাজার ভেন্টিলেটর । অবশ্য এখানে রাজ্যের গাফিলতির ফল পাচ্ছে সাধারণ মানুষ, অক্সিজেন প্লান্টের টাকা পাওয়া সত্ত্বেও আজও পর্যন্ত সেই অক্সিজেন প্লান্ট না বসানোয় । দিল্লি থেকে পশ্চিমবঙ্গ সবাই এতে ব্যর্থ ।
এবার হিংসা ও দাঙ্গা তে আসা যাক। সরকারি বা বেসরকারি যেকোন রিপোর্ট দেখে নিন, সেখানে স্পষ্ট দেখতে পাবেন, মুসলিম জনসংখ্যা যেখানে যত বেশি হয়েছে হিন্দুদের তুলনায় সেখানে তত দাঙ্গা হয়েছে আর এর সাম্প্রতিক উদাহরণ দিল্লি দাঙ্গা । বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে এসে আজ যারা বলেন হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই তারা অলিজ আরেকবার বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে থেকে দেখান, আরেকবার যোগেন মন্ডলকে জিজ্ঞেস করুন কেন সে পালিয়ে এসেছিল স্বাধীন পাকিস্তানের আইনমন্ত্রী হওয়ার পরও ।
পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার কলকারখানা বন্ধ করে ওরা যখন ইন্ডাস্ট্রির কথা বলে তখন ব্যাপারটা হাস্যকর ছাড়া আর কিছু হয়না।
বামেদের কাছে দেশভক্তির লেকচার নেওয়াটা অনেকটা মেসির কাছে ক্রিকেটের লেকচার নেওয়ার মতোই। যারা কিউবা, ভেনিজুয়েলা, চীনকে সর্বপরি নিজেদের পিতা ধরে বসে থাকে । চীনের উইগুড় মুসলিমদের উপর অত্যাচার দেখতে পাইনা, দেখতে পাইনা কেরলের, পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু মেয়েদের উপর মুসলিমদের অত্যাচার। সবার সামনে গোমাংস খাওয়াকে সাপোর্ট করতে দেখেছি “অবিকাশকে” কিন্তু কখনো সেলিমকে দেখিনি শুয়ারের মাংশ সর্বসমক্ষে ভক্ষণ করতে। দেখিনি মাধ্যমিক দেওয়া হিন্দু ছেলেটার জন্য আজানের মাইক বন্ধ করতে, দেখিনি হালাল ছাড়া মাংস প্রমোট করতে , সিঁদুর পরা, শাঁখা পরাকে কুসংস্কার বলা বামেদের মুখে দেখিনি বোরখার, বহুবিবাহের বিরোধিতা করতে, রাম নবমীর বিরোধিতা করা বামেদের মুখে দেখিনি মহরমের জুলুসের বিরোধিতা করতে।
বিএসসি ইন ইকোনমি গ্রিড স্পেশালিস্টরা যতই হিন্দুদেরকে চশমা পরিয়ে রাখতে চাক হিন্দুরা সেই চশমার ফাঁক দিয়ে তোষণ দেখতে পাচ্ছে তাই আজ শুন্য বিধায়ক উপহার দিয়েছে বামেদেরকে।
হ্যাজ না ছড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশনীতির প্রশংসা করুন যে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে এতগুলো উন্নত দেশ আজ ভারতের পাশে, আজ আমরা এতটা আত্মনির্ভর,আজ আমারা চীনকে জায়গা ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে আসিনি, আজ ৩৭০ তোলার দম দেখিয়েছি, আজ দেশে রেকর্ড স্তরে হাইওয়ে তৈরি হচ্ছে, আজ দেশে রেলে পুরোপুরি ইলেকট্রিক হওয়ার দোরগোড়ায়, আজ আমরা ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হতে চলেছি, আজ ইসরো এতটা পরিমান সফল, আজ দেশে ডিফেন্স সেক্টরের সিংহভাগ ম্যানুফ্যাকচারিং ভারতেই হয়। আজ লেহ দেশের অন্য ভাগের সাথে সারাবছর যুক্ত থাকবে তার পথ খুলছে। এরকম হাজারো কাজ আছে যার জন্য আমরা অশিক্ষিত মোদি ভক্ত ছিলাম আর থাকব ।
বাপ্পাদিত্য