দু দুটো মিডিয়ার গাড়ি ভাঙল, সাংবাদিকরা বার বার আক্রান্ত হলেন, একবারও সে দৃশ্য দেখালেন ? টানা ইঁট, জলের বোতলের নিক্ষেপকরীদের আড়াল করতে বারবার বলেই চললেন কেন্দ্রীয় বাহিনী আগে লাঠি চালিয়েছে

দুঃখটা কার বেশী হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসের না এ বি পি আনন্দের ?

রাতে যখন ফিরহাদ, শোভন, সুব্রত এবং মদন মিত্রর জামিন স্থগিতের জন্য সি বি আই হাইকোর্টে লড়ছে তখন খবরটা প্রথম ফ্ল্যাশ করল টিভি নাইন । তারপর কিছুক্ষনের মধ্যেই রিপাবলিক এবং সি এন সেটা ব্রেকিং নিউজ করতে শুরু করল । বারংবার নব ঘুরিয়ে এ বি পি আনন্দ চেক করেও সে সংবাদ তখন পেলাম না । শুধু ববি কন্যার বক্তব্য ফ্ল্যাশ করা হচ্ছিল – ‘জামিনের পরেও বাবাদের ছাড়া বিলম্বিত করা হচ্ছে’ ।
ওদিকে টি ভি নাইন তখনও দেখিয়ে যাচ্ছে – হাইকোর্ট-এ শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত চারজনকে ছাড়া যাবে না এমনই নির্দেশ উচ্চ আদালতের । তাহলে ? এ বি পি আনন্দ কি খবরটা পায়নি ? মন মানতে চাইছিল না ।

এ বি পি র একটা নিজস্ব এজেন্ডা আছে সেটা সবাই আমরা জানি । “মমতাই তৃণমূল, মমতাই কংগ্রেস, মমতাই বাম এবং মমতাই প্রগতিশীল” – মনে করে এ বি পি গোষ্ঠী । তাই বলে একটা আস্ত ঘটনাকে বেমালুম এভাবে চেপে যাবে ? একবারও ভাববে না ধরা পড়লে সেটা নিজের credibility তেও কতটা টান মারে !!

এদিন কিছুটা পরে সবাই যখন হাইকোর্টের রায়টা জনসমক্ষে ব্রেকিং নিউজ করল এ বি পি আনন্দ ঠিক তখনই নেমে পড়ল । তারপর অবশ্য পেছনে তাকায়নি । তখন দৌড়টা দেখার মত । যেন এরাই আগে ব্রেক করেছে । তাতে কি আর লজ্জা ঢাকে ?

করে লাভ কি হল এ বি পি গ্রুপের ? একবারও এরা ভাবেনা যুগটা ডিজিটাল । প্রতি মুহূর্তে মানুষ স্পিডে নবটা ঘোরাতে শিখে গেছে !
হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ আসার বেশ কিছুক্ষন পরে
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেছিল এ বি পি আনন্দ । বিমর্ষ কল্যাণ গড় গড় করে বলে গেলেন এক্স পার্টি সিদ্ধান্ত হয়েছে আদালতে । অর্থাৎ অভিযুক্তদের কোন কথা বলার সুযোগ দেয়নি । তার কিছুক্ষনের মধ্যেই এ বি পি আনন্দের সৌভিক মজুমদার অন এয়ার হাটে হাঁড়িটা ভেঙে বললেন – ‘কিশোর দত্তরা ছিলেন এই শুনানিতে’ ।
শুনতে ভুল করিনি মনে হয় । রিপোর্ট যদি তাই হয় তাহলে এই প্রশ্নটা দিয়েই কল্যাণকে কাউন্টার করলেন না কেন ?

কোন বাধা আছে ? সংকোচ ? দ্বিধা ? নাকি নিজস্ব এজেন্ডা ?

আজ সারা দিনে এ বি পি আনন্দের সম্প্রচার দেখে বারবার মনে হচ্ছিল কেউ নিজেদের credibility কে এতটা টেনে নিজেরাই নীচে নামাতে পারে ? ববি কন্যা প্রিয়দর্শিনীকে দিয়ে বার বার বলানোর চেষ্টা করে কি পেলেন ? দু দুটো মিডিয়ার গাড়ি ভাঙল, সাংবাদিকরা বার বার আক্রান্ত হলেন, একবারও সে দৃশ্য দেখালেন ? টানা ইঁট, জলের বোতলের নিক্ষেপকরীদের আড়াল করতে বারবার বলেই চললেন কেন্দ্রীয় বাহিনী আগে লাঠি চালিয়েছে ।

এত কিছু চেষ্টার পর যদি এ রাতে ববিদের বাড়ি ফেরানো না যায়, তাহলে কষ্টটা হয় বৈকি !! বুঝি যন্ত্রণা আপনাদের । কিন্তু কি আর করা যাবে !
একটা পজিটিভ দিকও তো আছে যা নিয়ে একটা ভালো স্টোরি করতে পারেন –
কলকাতার মহানগরীর তিন প্রাক্তন মহানাগরিক কাল রাতে প্রেসিডেন্সি জেলে একসঙ্গে ঘুমোলেন । তাদের ঘুম হয়েছে কি না, তার সঙ্গে সকালে ব্রেকফাস্টে কি খেলেন, মুখ ধুলেন কি না, দাঁত মাজলেন কি না …..জাতীয় কিছু স্টোরি ।

নেবে পাবলিক বিশ্বাস করুন ।। তলানিতে যাওয়া বিশ্বাসযোগ্যতাটা কিছুটা হলেও ফিরলেও ফিরতে পারে ।

ভেবে দেখবেন ।

সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.