দুই ভারতীয় কূটনীতিককে আটকে রেখে হেনস্থার ঘটনায় কূটনৈতিক উত্তাপ ছড়াল ভারত পাকিস্তানের মধ্যে৷ লাহোরের এক গুরুদোয়ারায় এই ঘটনা ঘটে ১৭ই এপ্রিল৷ গোটা ঘটনা নয়াদিল্লিকে জানায় পাকিস্তানের ভারতীয় হাই কমিশন৷
এই দুই ভারতীয় কূটনীতিক ওই গুরুদোয়ারায় ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন৷ সেখানেই তাঁদের হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ৷ এই কূটনীতিকদের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ৷ পাশাপাশি, তাদের ওই এলাকা আর না আসারও হুমকি দেওয়া হয়৷
এই ঘটনায় নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত৷ গোটা ঘটনার তদন্ত দাবি করা হয়েছে৷ এই ইস্যুতে মৌখিক একটি বার্তাও পাঠানো হয় নয়াদিল্লির তরফে৷ ভারতের তরফে খবর, প্রায় কুড়ি মিনিট ধরে ওই দুই ভারতীয় কূটনীতিককে গুরুদোয়ারার একটি ঘরে আটকে রাখা হয়৷ হেনস্থাও করা হয়৷ সাচা সৌদা গুরুদোয়ারায় এই ঘটনা ঘটে৷ ১৫জন পাকিস্তানি গোয়েন্দা তাদের ভুয়ো তথ্যের ভিত্তিতে আটকে রাখে বলে খবর৷ ভারতীয় কূটনীতিকদের ব্যাগে তল্লাশি চলে৷ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়৷
গত বছরও ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে গুরুদ্বারে ঢুকতে দেয়নি পাকিস্তান৷ ২০১৮ সালের জুন মাসের ২৩ তারিখ এই ঘটনা ঘটেছিল৷ রাওলপিন্ডির হাসান আবদালের পঞ্জা সাহি গুরুদ্বারে সস্ত্রীক যান রাষ্ট্রদূত অজয় বিসারিয়া৷ কিন্তু ঢোকার মুখেই তাঁদের বাধা দেয় পাক পুলিশ৷ পর পর ২ বার ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে বাধা দেওয়ায় তীব্র নিন্দার মুখে পাকিস্তান৷ ঘটনার কড়া সমালোচনায় দিল্লি৷ প্রতিবাদের ঝড় ইসলামাবাদেও৷ পাকিস্তানের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে ভারতের হাই কমিশন৷
রাওলপিন্ডির গুরুদ্বারে ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে যান বিসারিয়া৷ জানান, তীর্থযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেই বেরিয়ে আসবেন৷ পদস্থ রাষ্ট্রদূতকে সেই ছাড়পত্র দেয়নি পাকিস্তান বলে অভিযোগ৷ বাধ্য হয়ে বিসারিয়া ইসলামাবাদে ফিরে আসেন৷ গোটা ঘটনায় চরম অপমানিত বিসারিয়া ও তাঁর স্ত্রী৷ অভিযোগ, সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজ ও নথি থাকা সত্ত্বেও বিসারিয়াকে গুরদ্বারে প্রবেশে বাধা দেয় পাকিস্তান৷
এই ঘটনা নতুন নয়৷ ১২ এপ্রিল ওয়াঘা রেল স্টেশনে ভারতীয় পর্যটকদের সঙ্গে দেখা করতে যান বিসারিয়া৷ তখনও তাঁকে বাধা দেওয়া হয়৷ গোটা ঘটনায় ক্ষুদ্ধ সাউথ ব্লক৷ পাক বিদেশমন্ত্রক৷
নিয়ম অনুসারে, দুই দেশের কূটনীতিকরাই নিজের দেশের পর্যটকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন৷ সংশ্লিষ্ট কোনও কারণ না থাকলে তাদের বাধা দেওয়া যাবে না৷ বার বারই কূটনৈতিক আইন লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান৷
১৯৭৪-এর নিয়ম অনুসারে, ২ দেশের তীর্থযাত্রীরা অবাধে দু দেশের তীর্থস্থানে যেতে পারবেন৷ যোগ দিতে পারবেন বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে৷ পাকিস্তানের তরফে জানানো হয়েছিল, ২০১৮ সালে রাজা রঞ্জিত সিংয়ের মৃত্যু দিবসে মোট ৩০০ ভারতীয় তীর্থযাত্রীকে পাকিস্তানে আসার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে৷