মহাজাগতিক ঘটনাগুলি আপাতদৃষ্টিতে দেখলে কিন্তু বেশ মজাদারই লাগে। এই যেমন চাঁদের ব্যাপারটা। গোল চাঁদ ধীরে ধীরে ছোটো হতে হতে অমাবস্যার দিন সম্পূর্ণ গায়েব হয়ে যায়। আবার তা আস্তে আস্তে নিজের পূর্ণ রূপ পায় পূর্ণিমার দিন। চাঁদের পূর্ণ রূপ পেতে সময় লাগে পাক্কা ১৫ দিন। তাই একটা মাসে একবার পূর্ণিমা ও একবার অমাবস্যা হয়। কিন্তু হঠাৎ করেই যদি একই মাসে দু’বার গোল পূর্ণ চাঁদ দেখা যায়, তাহলে? ভাবতে বেশ মজা লাগছে তো? হ্যাঁ, এই চলতি মাসে ঘটতে চলেছে এমনই মহাজাগতিক ঘটনা। মুম্বইয়ের নেহরু প্ল্যানেটোরিয়ামের পক্ষ থেকে এই কথাই জানালেন অরবিন্দ পরাঞ্জপে।
আকাশে একই মাসে যখন দুটি পূর্ণ চাঁদ দেখা যায়, তখন দ্বিতীয় চাঁদটিকে ‘ব্লু মুন’ বলা হয়। এই ‘ব্লু মুন’ কথাটি ক্যালেন্ডারের পরিভাষিক শব্দ। একই মাসে ব্লু মুন দেখতে পাওয়া সহজ ঘটনা নয়। এর থেকেই ইংরেজিতে একটি প্রবাদ বাক্য এসেছে, ‘ওয়ান্স ইন আ ব্লু মুন’ অর্থাৎ যা কদাচিৎ হয়। কিন্তু তা বলে এই নয় যে আকাশে নীল রঙের চাঁদ দেখতে পাওয়া যাবে।
এ মাসে প্রথম ফুল মুন বা পূর্ণ চাঁদ দেখা গিয়েছিল পয়লা অক্টোবরে, আবার এ মাসে পূর্ণ চাঁদ বা ব্লু মুন দেখতে পাওয়া যাবে ৩১শে অক্টোবর। আজ থেকে প্রায় তেরো বছর আগে অর্থাৎ ২০০৭ সালে জুন মাসে ব্লু মুন দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এই বছরের ব্লু মুন যদি আপনি মিস করে যান, তাহলে কিন্তু আবার অনেক বছর অপেক্ষা করতে হবে। কারণ এরপর আবার ব্লু মুন দেখা যাবে ২০৫০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে।
এই বিষয় নিয়ে বিজ্ঞান গবেষক টি ভেঙ্কটেশ্বরণ বলেছেন যে, একই মাসে বা তিরিশ দিনের ব্যবধানে দুটি পূর্ণ চাঁদ দেখার জটিল বিজ্ঞান গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের উপর ভিত্তি করেই হয়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাও এই ক্যালেন্ডারই ব্যবহার করেন। কিন্তু ইসলামিক বা তিব্বতি ক্যালেন্ডারে এ রকম কোনও হিসেব পাওয়া যাবে না। চাঁদের গতিবিধির উপর নির্ভর করে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে যে ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা হয়, সেখানেও এরকম কোনও হিসেব দেখা যাবে বলেই জানিয়েছেন বিজ্ঞানী টি ভেঙ্কটেশ্বরণ।