ভারত সরকারের নোটিশ অনুযায়ী কয়েকটি অ্যাকাউন্ট ব্লক করল টুইটার, বলল বাক স্বাধীনতার কথাও

কৃষক আন্দোলন নিয়ে ভুল তথ্য দেওয়া ও সাধারণ মানুষকে উস্কানি। এই দু’টি অভিযোগে মোট ১১৭৮ টি অ্যাকাউন্ট ব্লক করতে বলা হয়েছিল টুইটারকে। টুইটার বুধবার জানিয়ে দিল, ভারত সরকারের নোটিশে যে অ্যাকাউন্টগুলির কথা বলা হয়েছিল, তাদের মধ্যে কয়েকটি বন্ধ করা হয়েছে। তবে কেবল ভারতেই ওই অ্যাকাউন্টগুলি দেখা যাবে না। একইসঙ্গে আমেরিকার ওই সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি জানিয়েছে, তারা সাংবাদিক, সমাজকর্মী বা রাজনীতিকদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করবে না। কারণ সেক্ষেত্রে বাকস্বাধীনতা লঙ্ঘন করা হবে।

টুইটারের দাবি, অবাধ ইন্টারনেট ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপরে বিশ্ব জুড়েই আক্রমণ আসছে।

সরকারের বক্তব্য, পাকিস্তানি ও খলিস্তানিদের কয়েকটি টুইটার অ্যাকাউন্ট গত নভেম্বর মাস থেকেই কৃষক আন্দোলন নিয়ে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। টুইটার এক ব্লগে বলেছে, তারা ভারতের মধ্যে কয়েকটি অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিয়েছে বটে কিন্তু বিদেশে সেগুলি দেখা যাবে। টুইটারের ধারণা, যেভাবে তাঁদের কয়েকটি অ্যাকাউন্ট ব্লক করতে বলা হয়েছে, তা ভারতের আইনের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ নয়। সেজন্যই সাংবাদিক, সমাজকর্মী ও রাজনীতিকদের অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়নি। কারণ তা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করে। ভারতের আইনে বাকস্বাধীনতা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে।

মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটার জানিয়েছে, যাদের কথা আগে কেউ জানতে পারেনি, তারা যাতে নিজেদের কথা বলতে পারে, সেজন্য সোশ্যাল নিডিয়া চেষ্টা করবে। প্রত্যেকে যাতে আরও উন্নত পরিষেবা পায়, সেদিকেও নজর থাকবে তাদের।

টুইটারের ব্লগে বলা হয়েছে, “আমরা বাকস্বাধীনতার পক্ষে কাজ করে যাব। টুইটারে যদি কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, আমরা তাতে বাধা দেব না।” টুইটার জানিয়েছে, বৈদ্যুতিন এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক থেকে তাদের কয়েক দফায় হাজারের বেশি অ্যাকাউন্ট ব্লক করতে বলা হয়েছে।

কিছুদিন আগে টুইটারকে ‘চিনা পাপেট’ বলে বিদ্রুপ করেন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। তাঁর একটি টুইট ডিলিট করে দেওয়া হয়। তার পরেই টুইট করে কঙ্গনা লেখেন, “চিনা পাপেট টুইটার আবারও আমার অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করার হুমকি দিল। এবারে আমি কোনও নিয়ম ভাঙিনি তাও। যেই দেশে আমি যাব, তোমাকে সঙ্গে নিয়ে যাব। চাইনিজ টিকটকের মতোই তোমায় ব্যানড করে ছাড়ব…”

টুইটারের সঙ্গে যখন ভারত সরকারের মন কষাকষি চলছে তখনই টুইটারের ভারতীয় শাখার নীতি নির্ধারক অধিকর্তার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান মহিমা কল। যদিও টুইটার জানায়, মহিমার পদত্যাগের পিছনে আলাদা কোনও কারণ নেই। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারণেই তিনি কিছু সময়ের জন্য বিশ্রাম চেয়েছেন। যদিও পর্যবেক্ষকদের মতে, টুইটার নিয়ে অশান্তির মাঝেই ভারতীয় শাখার নীতি নির্ধারকের সরে দাঁড়ানোর ঘটনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.