বিনে পয়সায় মিলেছিল বিশাল সংখ্যক পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরান। কিন্তু বিনে পয়সায় পাওয়া সেই ধর্মগ্রন্থ শুল্ক দফতর থেকে ছাড়াতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ হয়েছিল দাবিদারদের। বলে কী? কোরান ছাড়ানোর জন্য শুল্ক হিসেবে দিতে হবে ৮ লক্ষ টাকা! শেষ পর্যন্ত সেই পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ছাড়ানোর কথা দ্বিতীয়বার ভাবেননি দাবিদাররা। ফলে গত ছয়মাস ধরে বন্দরে মালিকানাহীন অবস্থায় পড়েছিল ওই বিশাল ওজনের কোরান। অবশেষে আগামী ২১ জানুয়ারি ওই পবিত্র ধর্মগ্রন্থ নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন্দরের শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা।
শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। কোচি বন্দরের শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে সৌদি আরব থেকে ২২,৬৮০ কেজি ওজনের কোরান এসে পৌঁছেছিল বন্দরে। মালাপ্পুরম জেলার বাজহক্কড়ের দারুল উলুম আরবি কলেজের নামে ওই কনসাইনমেন্ট পাঠানো হয়েছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষ কোরান ছাড়াতেও এসেছিল। কিন্তু ৮ লক্ষ টাকা শুল্ক লাগবে শুনেই পিছিয়ে যায়। কোরান ছাড়ানোর ক্ষেত্রে নিজেদের অপারগতার কথা জানিয়ে দেন কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল সালাম।
তিনি ওই কোরান ফের সৌদিতে পাঠিয়ে দেওয়ার অনুরোধও জানিয়েছিলেন। কিন্তু শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা জানিয়ে দেন, কোরান সৌদিতে পাঠানোর জন্য খরচ গুনতে হবে কলেজ কর্তৃপক্ষকেই। কিন্তু সেই ব্যয়ভার বহণের ক্ষমতা না থাকায় ওই প্রস্তাবে সাড়া দেননি কলেজের অধ্যক্ষ। ফলে গত ছয় মাস ধরে মালিকানাহীন অবস্থায় কোচি বন্দরের আন্তর্জাতিক টার্মিনালে কন্টেনার বন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে ওই বিশাল সংখ্যক কোরান।
দিনের পর দিন বন্দরের টার্মিনালে জায়গা নিয়ে পড়ে থাকা কোরানগুলি নিয়ে মহা বিপদে পড়ে যান শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা। শেষ পর্যন্ত নিলামের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। শুল্ক দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘স্বচ্ছতা বজায় রাখতে অনলাইনেই কোরানের নিলাম হবে। নিলামের বেস প্রাইস অর্থাৎ নিম্নতম মূল্য ধার্য হয়েছে ১ লক্ষ টাকা। আগামী ২১ জানুয়ারি শুরু হবে।’
তাঁরই অনুরোধ মেনে বিনামূল্যে সৌদি আরব থেকে পাঠানো সেই কোরান নিলামে উঠতে চলেছে শুনে কষ্ট চেপে রাখতে পারেননি বাজহক্কড়ের দারুল উলুম আরবি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল সালাম। হতাশকণ্ঠে বললেন, ‘যদি সাধ্যের মধ্যে থাকে তাহলে নিলামে ওই কোরান কেনার একটা চেষ্টা চালাব।’