চাপে পড়তে পারেন মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেসি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কমল নাথ। সূত্রের খবর, ১৯৮৪-র শিখ হিংসার ফাইল নতুন করে খুলতে চাইছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
মাস দেড়েক আগেই অগুস্তা-ওয়েস্ট ল্যান্ড ভিভিআইপি চপার কেলেঙ্কারি মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি এনফোর্স ডিরেক্টরেট গ্রেফতার করেছে কমল নাথের ভাইপো রাতুল পুরীকে। এর মধ্যেই আইএনএক্স মিডিয়া দুর্নীতি মামলায় তিহাড় জেলে রয়েছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। এরপর কমলনাথকেও যদি ৩৫ বছর আগের মামলায় নতুন করে বিপাকে পড়তে হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে চাপে পড়ে যাবে কংগ্রেসও।
সোমবার সকালেই জানা গিয়েছিল, অন্তর্বর্তী কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ডেকে পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ এবং মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে। অনেকের মতে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই পদক্ষেপের খবর পেয়েই হয়তো পরবর্তী কৌশল ঠিক করতে সনিয়া ডেকেছেন কমলনাথ এবং জ্যোতিরাদিত্যকে।
১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তারপর দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের একাধিক জায়গায় শিখ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হিংসার অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ওই হিংসায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন কমলনাথ। অভিযোগ, মধ্য দিল্লির রাকাব গঞ্জ এলেকায় একটি গুরুদ্বারে হামলা চালায় একদল উন্মত্ত জনতা। দু’জন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষকে হত্যা করা। সেখানে নাকি কমল নাথ শহরীরে উপস্থিত ছিলেন। ওই ঘটনায় গঠিত নানাবতী কমিশন দু’জনের সাক্ষ্য নেয়। তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিক সঞ্জয় সুরি। তিনি কমিশনে জানিয়েছিলেন, কমলনাথ উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। ‘বেনিফিট অফ ডাউট’-এ কমলনাথকে ছাড় দেয় নানবতী কমিশন।
ওই মামলার রায়ে গত বছরই দিল্লি হাইকোর্ট ৮৮ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। রায় ঘোষণা করে আদালত বলেছিল ‘মাইলফলক রায়।’ দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল দিল্লির একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ কংগ্রেস নেতা জগদীশ টাইলার এবং সজ্জন কুমারকেও। এর মধ্যেই শিরোমণি আকালি দলের মতো পাঞ্জাবের দলগুলি কংগ্রেসের উপর চাপ তৈরি করতে শুরু করেছে। শিরোমণি আকালি দলের দিল্লি এক বিধায়ক দাবি জানিয়েছেন, সনিয়া গান্ধী নির্দেশ দিন কমলনাথকে এক্ষুণি মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি ছাড়তে। এখন দেখার ৩৫ বছর আগের মামলা নিয়ে কমলনাথের বিরুদ্ধে সত্যি সত্যি কোন পথে এগোয় অমিত শাহের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।