লাদাখে ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা মেটাতে আরও এক ধাপ। বেজিংয়ের ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিসরির সঙ্গে বৈঠক চিনের ভাইস ফরেন মিনিস্টারের। লাদাখে ভারত-চিন সীমান্তে যাতে নতুন করে আর কোনও অশান্তি না ছড়ায় সেব্যাপারে দু’দেশই পদক্ষেপ করছে। কূটনৈতিকস্তরের এই আলোচনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে কূটনীতিবিদরা।
উল্লেখ্য, লাদাখে প্যাংগং লেকের উত্তর ও দক্ষিণ দিক থেকে ভারত ও চিন উভয়ই সেনা সরিয়েছে। ওই এলাকা থেকে সরে গিয়ে দুই দেশের সেনাই নির্দিষ্ট একটি দূরত্বে দাঁড়াতে রাজি হয়েছে। এলএসি-তে সেনাও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার বেজিংয়ে চিনে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিসরি চিনের ভাইস ফরেন মিনিস্টার লুও ঝাউহুইকে বলেছেন, ‘‘কেবলমাত্র প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) এবং পূর্ব লাদাখের অবশিষ্ট এলাকাগুলিতে সৈন্যদের অবস্থান বদলের জেরে সমস্যা মিটবে৷ এর ফলে সীমান্তে শান্তির পরিবেশ ফিরবে। ভারত ও চিনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেরও উন্নতি হবে।’’
চিনে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিসরি শুক্রবার চিনের উপ-বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে আরও জানিয়েছেন, লাদাখে ভারত-চিন সীমান্তে শান্তি ও শান্তির পরিবেশ বজায় রাখা সবসময় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নের ভিত্তি। একইসঙ্গে সেখানকার অন্য অঞ্চলগুলিতেও শান্তি ও স্বাভাবিক পরিবেশ ফেরালে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অগ্রগতি আসবে। উল্লেখ্য, লাদাখে সীমান্তে চিনা সেনার আগ্রাসনের জেরে বিপত্তির সূত্রপাত। দুই দেশের লম্পর্ক তালিনেত ঠেকে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়ে।
লাদাখের গালওয়ান উপত্যাক চিনা আগ্রাসনের জেরে গত বছর ভারতীয় সেনারা শহিদ হন। তারপর থেকেই দু’দেশের সম্পর্কে অবনতি হতে শুরু করে। জট কাটাতে সামরিকস্তরে দফায়-দফায় বৈঠক হয়। কূটনৈতিকস্তরেও পরপর আলোচনা চলে।
কিন্তু একের পর এক বৈঠকেও সমাধান সূত্র মেলেনি। শেষমেশ সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে দফায়-দফায় বৈঠকে আপাতত শান্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্যাংগং লেক অঞ্চল থেকে সেনা সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করে ভারত ও চিন। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বরাবরই সীমান্ত বিবাদ মেটাতে সদর্থক ভূমিকায় জোর দিচ্ছিলেন। একদিকে সামরিকস্তরে যেমন আলোচনা চলছিল, তেমনি কূটনৈতিক পথেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বিদেশমন্ত্রী। সমস্যা মেটাতে চিনকেও উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে আহ্বান জানিয়েছিলেন জয়শঙ্কর।