” পাঁচ চাপে বিনামূল্যে টিকা কেন্দ্রের” – আজ আনন্দবাজারে প্রথম পাতায় ডানদিকের হেডলাইন ।
ভুল লেখেনি আনন্দবাজার । সংসদীয় রাজনীতিতে বিরোধীদের চাপ পথ দেখায় শাসককে । শাসক সংশোধনের জায়গা পায় । এটাই গণতন্ত্রের মহত্ব ।
সেই আনন্দবাজারই আবার প্রথম পাতার ডানদিকে হেডলাইন করল – বাতিল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক । লিখল না কার চাপে ।
স্মরণে থাকতে পারে ২৭ মে এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে ঘোষণা করেছিলেন জুলাইয়ের শেষে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে, আগস্ট-এ হবে মাধ্যমিক । নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করবে সংসদ । সেই মোতাবেক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস, মধ্য শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গাঙ্গুলি ২ রা জুন প্রেসের সামনে দিনক্ষণ ঘোষণা করবেন এই আনন্দবাজারই প্রথম পৃষ্ঠায় জানিয়েছিল ।
ঠিক তার আগের দিন ১লা জুন প্রধানমন্ত্রী জানালেন কেন্দ্রীয় বোর্ডের আই এস সি সি বি এস ই র সব পরীক্ষা এ বছরের মত বাতিল । এই ঘটনার প্রেক্ষিতে চাপে পড়ল রাজ্য সরকার । কেন্দ্রের পরীক্ষা বাতিল, রাজ্য নিলে অভিভাবক ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে খারাপ প্রতিক্রিয়া হবে । এবার শুরু হল নাটক । বিশেষজ্ঞ কমিটি, অভিভাবকদের মতামত । এবং সাত দিন বাদে শেষ পর্যন্ত বাতিল ।
প্রশ্ন হল এটা চাপে সিদ্ধান্ত নয় ?
আনন্দবাজার দুটি সংবাদ-এ দু রকম এঙ্গেল নিল একই দিনে, প্রথম পাতায় । যদি সঠিকটা লিখত – চাপে বাতিল মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকও । জাত যেত ?
আনন্দবাজারে কিছু দিন আগে অবসর নেওয়া প্রাক্তন এক প্রবীণ সাংবাদিক ফোনে বলছিলেন – চাপরাশি দিয়ে কাগজ চালালে এরকমই হয় । দু চোখে একই জিনিস দু রকম দেখে ।
মানতে পারলাম না । দেবাশিস ভট্টাচার্যের ক্ষেত্রে এই ইঙ্গিত না হয় মানতে পারি । কিন্তু ঈশানী, শাশ্বতী, গার্গী, সেমন্তী ? এরা যারা আনন্দবাজারের এক একটা দফতর সামলায় তারা ?
এরা আসলে সব দাবার বোড়ে । এরাও যে একই মুখের দু চোখে দু রকম দেখছে, লিখছে, নিজেরাও জানে । এঁদের বাড়ির লোকেরাও হয়তো এদের এই কাজকারবার নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করে । মধ্যিখান থেকে অশোক সরকার, অভীক সরকারের আমল থেকে অনেক নিষ্ঠায় সাধনায় গড়ে ওঠা গৌরব হারায় আনন্দবাজার ।
আজ সত্যি মনে হয় কাগজটা পড়লেই বোধ হয় পিছিয়ে পড়তে হয় ।
সন্ময় বন্দ্যোপধ্যায় (৯৮৩০৪২৬০৭৮)