আট বারের জেতা এক বিধায়ক এবং অধুনা কৃষি মন্ত্রী শোভনদেব চ্যাটার্জি । তাঁর ভোটে জিততে যে বাংলাদেশী নাগরিকের ভোটও দরকার জানলাম আজ । হাতে নাতে বন্দিপুর আইডিয়াল একাডেমিতে ধরা পড়া এক যুবক তাবড় মিডিয়ার সামনে স্বীকার করলেন হ্যাঁ তিনি ঢাকার নাগরিক । এখানে ভোটটা অন্যের হয়ে দিয়েছেন । ভুল করেছেন । আর জীবনে কোনোদিন এই ভুল তিনি করবেন না ।
এবারের নির্বাচনী প্রচারে থাকার সুবাদে অনেকদিন ধরেই জানছিলাম প্রচুর বাংলাদেশী আত্মগোপন করে থাকেন বিলকান্দা, মহিষপোতা, রুইয়া, অপূর্ব নগরের আশেপাশে । প্রচুর তাঁদের অবৈধ ব্যবসা, তৃণমূল মাঝারি নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় তাঁরা বেশ জমিয়ে আসা যাওয়া করেন । স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বোঝাপড়াও বেশ ভালো ।
বেশ কিছু লোকজনের চলা ফেরাতেও কিছুটা বুঝতাম । কথাবার্তায় বাংলাদেশী টান । বেশভূষায় বেশ বিলাসী । দামী গাড়ি করে হুশ করে চলে যেতেন । পেছন পেছন প্রচুর তোষামোদিরা ছুটতেন । নিজের চোখে দেখা । এরা নিজেদের স্থায়ী বাসস্থান রাখেন না । এর ওর বাড়ীতে থাকেন ।
প্রচুর গরীব বাংলাদেশীও এসব এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছেন । এই এলাকাটা বাছার প্রথম কারণ
১. সীমান্ত এবং কলকাতা যাওয়া আসার মাঝামাঝি জায়গায় এলাকাটা
২. এখনকার তৃণমূল নেতারা খুব তাড়াতাড়ি ম্যানেজড হন ।
এরা এখানে অনেক রকম ব্যবসায় টাকা খাটান । ওদেশে এদেশে দুদেশেই ভোটার কার্ড করে রেখেছেন । যখন যেখানে যে কাজে লাগে ।
এসব কাহিনী শুনেছিলাম রুইয়া অঞ্চলের এক ব্যবসায়ীর মুখে ।
আজ এরকমই এক ঢাকা নিবাসী যুবককে হাতে নাতে পাকড়াও করলেন খড়দহের বি জে পি প্রার্থী জয় সাহা । মিডিয়ার সামনে যুবকটি স্বীকারও করলেন হ্যাঁ আমি ঢাকায় থাকি । ভুল করে এখানে ভোট দিয়েছি । আর কোনোদিন দেব না ।
সকাল থেকেই এই অঞ্চলগুলোতে এসব বেপরোয়া চলছিল । প্রচুর খবরও পাচ্ছিলাম । হাতে নাতে প্রমাণ পেলাম বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে । প্রায় অনেক চ্যানেলই ইচ্ছে না থাকা সত্বেও দেখাচ্ছিল ঘটনাটা । এবং স্বাভাবিক ভাবেই বিড়ম্বনা বাড়ছিল তৃণমূলের । সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলোতে কিভাবে কাদের নিয়ে দলটা চলে, কি কি অন্যায় কীর্তিতে এরা জড়িত বেরিয়ে আসে এসব ঘটনা জনসমক্ষে এলে । আজও এল । খড়দহের উপনির্বাচনে ।
আর ঠিক তখনই দৃষ্টি ঘোরানোর খেলায় নামলেন সৌগত রায়, খাদ্যহারা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকরা । জয় যখন বাংলাদেশীকে পাকড়াও করেছে তখন তাকে ছাড়াতে পাঠিয়ে দেওয়া হল তৃণমূল বাহিনীকে । জয়ের সঙ্গে থাকা সিকিওরিটি তাদের জয়ের কাছে ঘেঁষতে দেয়নি । তাতেই নাকি আহত প্রয়াত কাজল সিনহার ১৬ বছরের পুত্র । গল্পটা বাজারে ছেড়ে নাটকে নামলেন বৃদ্ধ সৌগত আর খাদ্যহারা জ্যোতিপ্রিয় । নিউজ ১৮, ২৪ ঘণ্টাকে দিয়ে সেই বানানো গল্প চালানো হল চ্যানেলেও । বাংলাদেশী ভোটার ধরার খবরটাকে যে কোন ভাবে চাপতে । আড়াল করতে । এইসব বেতনভুক চ্যানেলগুলো নির্দেশমত করলোও ঠিক তাই । মানুষের চোখ কিছুটা ঘুরল । তৃণমূলের প্ল্যান কিছুটা success পেল ।
কিন্তু সত্য কি আড়াল হল ? আজ রাতেই খড়দহের প্রার্থী জয় সাহা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে মেল করলেন বাংলাদেশী নাগরিকের ভোট দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আবেদন রেখে । কি হবে তার অগ্রগতি ভবিষ্যৎ বলবে । কিন্তু বিহিত একটা হওয়া দরকার সবাই মানবেন । নেত্রী ভোট চাইতে গোয়া যাবেন আর এই বাংলায় ভোট দিতে বাংলাদেশীরা সক্রিয় থাকবেন । হয় ? এই দ্বিচারিতা বন্ধ হওয়া দরকার । অবিলম্বে ।।
নীচে দিলাম জয় সাহার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে দেওয়া আবেদনের প্রতিলিপি ।
সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় (৯৮৩০৪২৬০৭৮)