পুরুলিয়ার আঞ্চলিক ভাষায় লেখা একটি খুব সুন্দর কবিতা
পাখিপাহাড়ে কইলকাতার বাবুকে
দন্ডবত আইজ্ঞা । কোথা লে আসছেন? কইলকাতা?
পাখি পাহাড় দ্যখার শখে চ্যলে আলেন হামদের মাঠা?
হাতে উটা ফুকনলের পারা কি বঠে? ভিডিও ক্যমরা
ফটোক তুইলবেন? খপর ছাইপবেন? ক্যমন আছি হামরা?
হামি শিরি ছিদাম মাঝি। ঘর বঠে মুনিবেড়া।
বাসি খাঁয়ে বাঁচি আইজ্ঞা, যেমন বাঁচে গরু-ভেড়া।
হুইদিকে ভাইলে দেখুন-মাঠাবুরুর বগল তলে,
পাখিপাহাড় দাঁড়হাই আছে লয়ন ভরা নুন্যা জলে।
ছেনি-হাতড়ি-হাম্বরের ঘায়ে বিদকাই দিয়েছে বুক,
হামদের পাহাড় কঁকা বঠে, কে শুনবেক উয়ার দুখ?
গটা শরীলে দরদ আইজ্ঞা, হাত বুলাবেক কে?
পাহাড় চটাই বাবুরা হামদের পাখি বনাইছে।
গাঁয়ের মাস্টর বইলতেছিল – চিত্তবাবুর বিরাট নাম।
উনি নাকি বেড়ে আটিস – কইলকতাই উনার ধাম।
পাথর চটায় পাখি বনায়ছ্যান – দমে পায়েছেন লোট।
হামদের ববা পাহাড়ের গায়ে দিয়েছেন দমে চোট।
চিনহাপ আছে নকি আইজ্ঞা? টুকু ঘুইরে দিবেন পাঠায়।
পশু-পাহাড় বনাক ইবার হামদের এই পুরুল্যার মাঠায়।
পাহাড়ের দরদ হামরা বুঝি হামরা যারা পাহ্যাড়া বঠি,
পাহাড় ঘিরেই জনম হামদের-পাহাড় ঘিরেই বসি উঠি।
পাহাড় কাটলে হামদের দুখায়-পাহাড়ের কাঁদন হামরা বুঝি
পাহাড়-বনে হামরা বাবু লিতই প্যাটের আহার খুঁজি।
পাখি-পাহাড়ে নাইখ পাখি আছে শুধু রকতধারা,
সুখের পাহাড়ে শখের পাখি বনাল্যো কোন খালভরা?
মানুষ মারলে খুনি বলে ছাগল চটালে কসাই
পাহাড় কাটলে কি বইলবো আইজ্ঞা কইলকাতার ভাষায়?
লেখা : সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়।