আবারও প্রকাশ্যে এল তৃণমূল সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের বিরোধ। এর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজির হয়েছিল তিনি। তাই নিয়ে রাজনৈতিক মহলের বিরাগভাজনও হয়েছিলেন। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। এই ঘটনায় রাজ্যপাল অতি সক্রিয় বলেও মন্তব্য করেছিলেন অনেকে।
তারপর থেকে তৃণমূল সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। যদিও তিনি জানিয়েছিলেন তিনি তাঁর কাজটাই করেছেন আর তাই করতে এসেছেন। তাঁর এই মন্তব্যের ফলে রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালের মধ্যের ঠাণ্ডা লড়াই পরিষ্কার হয়েছিল সাধারণ মানুষের সামনে। এছাড়াও রাজ্যপালের উত্তরবঙ্গ সফর নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত ছিলেন সরকারপক্ষ।
নতুন রাজ্যপাল হিসেবে রাজ্যে আসার পর থেকে যেভাবে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন তাতে ভাঁজ পড়েছিল তৃণমূল সরকারের কপালে। রাজ্যপালের এই সফরকে অসাংবিধানিক বলেও মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূলের অনেকে। এছাড়াও রাশ উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য শান্তিপুর সফরের জন্য হেলিকপ্টার চেয়েছিল রাজ্যপাল। আর তা না-পাওয়াতে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
এছাড়াও দুর্গাপুজোর কার্নিভ্যালে তাঁকে অপমান করা হয়েছিল বলেও জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তবে মুখ্যমন্ত্রীর কালীপুজোর নিমন্ত্রণ রক্ষা করা নিয়ে অনেকেই ভেবেছিলেন রাজ্যপালের সঙ্গে সরকারের বরফ হয়ত গলেছে। কিন্তু তা যে আদপেই হয়নি বোঝা গেল আবারও। বরানগরের গুরুদোয়ারা-তে অনুষ্ঠান উপলক্ষে রাজ্যপালকে এড়িয়ে গেল তৃণমূল। আর এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করাতে তৃণমূল সাংসদ অধ্যাপক সৌগত রায় জানিয়েছেন, রাজ্যপালের আসার বিষয়টি তিনি জানতেন না। দমদমের সাংসদ বলেন, একজন সাংসদ হিসেবে তিনি ওই এলাকাতে অনুষ্ঠানে গিয়েছেন। রাজ্যপাল আসার আগে বেড়িয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে জানান, তিনি তাঁর কাজের মাঝে সময় বার করে বরানগরের অনুষ্ঠানে গিয়েছেন।
রাজ্যপাল চলে যাওয়ার পরে অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তাপস রায়। তিনি উত্তর ২৪ পরগনার বরানগরের বিধায়ক। আর সেই কারণে সেখানে গিয়েছিলেন। রাজ্যপালের যাওয়ার বিষয়ে তিনি সেরকম কিছু জানতেন না। এই প্রসঙ্গে রাজ্যপালকে জিজ্ঞেস করাতে তিনি জানিয়েছেন রাজনৈতিক হিংসা ক্ষতিকর। মানুষের কাছে ভুল বার্তা যায়। অর্থাৎ এর ফলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের মধ্যে দুরত্ব যে কমেনি তা আবার ও সামনে এল।