দরিদ্র এই বীর মুক্তিযোদ্ধা এখন জীবন সংগ্রামেরত – হিন্দু বলেই উপেক্ষিত

বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রতাপ চন্দ্র রায় ১৮ বছর বয়সে একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন এবং লড়াই করেছিলেন স্বাধীনতার জন্য।
দেশের জন্য সংগ্রামে করে স্বাধীনতা আনেন তিনি কিন্তু যেই দেশকে স্বাধীন করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন সেই দেশেই ‘হিন্দু’ বলে উপেক্ষিত তিনি ।
অবাক করার মতো হলেও হত দরিদ্র এই বীর মুক্তিযোদ্ধা এখন জীবন সংগ্রামে রত।

রায় (৬৮) বলেন, “জানি না আমার কি অপরাধ, দেশ তো স্বাধীন হলো কিন্তু আমার কিছু হলো না । প্রতিশ্রুতি মিললেও আজ পর্যন্ত তার কোনো ফল মেলে নি।”

তিনি আরও বলেন, “আমি হিন্দু , বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি। বহু রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন দেশে আমি প্রতিটি মুহূর্ত সংগ্রাম করেই বেঁচে আছি।”

লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের কাজীরচওড়া গ্রামের বাসিন্দা এই বীর মুক্তিযোদ্ধা এখন ফেরিওয়ালা হয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে মসলা বিক্রি করেন।
তিনি বলেন প্রতিদিন সকালে বাইসাইকেল চড়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পরেন, ফেরেন সন্ধ্যায়। মসলা বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনো রকমে চলছে সংসার।

তিনি অসুস্থ স্ত্রী বিমালা রানীকে (৫৮) নিয়ে একটি একচালা টিনের ঘরে বসবাস করছেন। রায় বলেন ঘরটি মেরামতের সামর্থ্যও নেই তার। মসলা বিক্রি করে যা হয় তার অর্ধেক চলে যায় স্ত্রীর চিকিৎসায়।

তিনি একজন একজন সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা যার নাম আছে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় এবং তার ক্রমিক নাম্বার হলো ২০৫৯৪৪। আশ্চর্য্যের ব্যাপার হলো এই যে তালিকায় না থাকা সত্ত্বেও তিনি সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

সূত্রের খবর দিনমজুরি করে আয় করতে আমি দীর্ঘদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান, তাই মুক্তিযোদ্ধার তালিকার কোনো খোঁজখবর রাখতে পারেন নি । যদিও পরে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সব ধরনের কাগজপত্র জোগাড় করেন ।

যুদ্ধকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ সমরে অংশ নিয়েছিলেন তিনি । তাহলে হিন্দু বলেই কি উপেক্ষিত ?

এই ব্যাপারে লালমনিরহাট সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিক কিছু পরিষ্কার ভাবে বলেন নি । শুধু বলেন মুক্তিযোদ্ধা প্রতাপ চন্দ্র রায়ের সব কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে, আশা করা যায় তিনি সাহায্য পাবেন ।
বাংলদেশে রায়ের মতো বহু হিন্দু মুক্তিযোদ্ধা আজ উপেক্ষিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.