করোনা (corona)-পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার (Australia) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথমবারের মতো ‘ভার্চুয়াল সামিট’-এ কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। করোনা-সঙ্কট, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক-সহ অন্যান্য বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। করোনার জেরে ভারত (India)সফরে আসতে পারেননি মরিসন, এই কারণে দুই দেশই ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনের জন্য সম্মত হয়৷ এই প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী কোনও ভার্চুয়াল দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করলেন। এই বৈঠক ভারত-অস্ট্রেলিয়ার সুসম্পর্কের ইঙ্গিত দিয়েছে বলেই মত সংশ্লিষ্ট মহলের। ভার্চুয়াল বৈঠকে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের প্রসঙ্গে বিস্তৃত কাঠামো পর্যালোচনা করার পাশাপাশি করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে দুই দেশের পরিস্থিতি এবং তাঁদের প্রতিক্রিয়াগুলি আলোচনা করেন। এদিন বৈঠক চলাকালীন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী মরিসন বলেন, ‘চাহিদা ও মূল্যবোধের নিরিখে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক খুবই দৃঢ়। আমাদের বন্ধুত্ব আরও মজবুত করার জন্য অপরিসীম সুযোগ রয়েছে। এই সুযোগকে বাস্তবে পরিণত করাটাই চ্যালেঞ্জ। আমাদের সম্পর্ক গোটা রিজিয়নের স্থিতাবস্থায় কার্যকরী ভূমিকা নেবে।’ এদিন মরিসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, এই কঠিন সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় থাকা ভারতীয় সম্প্রদায় ও পড়ুয়াদের উপর নজর রাখার জন্য ধন্যবাদ। তিনি বলেন, ‘শুধু দুটো দেশের জন্য নয়, আমাদের মজবুত সম্পর্ক গোটা রিজিয়নের জন্যই কার্যকরী।’ মোদীকে এদিন মরিসন বললেন, যদি ভারতে যেতে পারতাম, তাহলে কিছুতেই মোদী হাগ মিস করতাম না। পরের বার গুজরাতি খিচুড়ি বানাব। পরের বার দেখা করার আগে রান্নাঘরে এই পদ বানাব। মরিসনের কথা শুনে হেসে মোদী বললেন, ”ভারতে খিচুড়ি সকলেরই খুব পছন্দের পদ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এর বিভিন্ন নাম রয়েছে। গুজরাতবাসী খুবই খুশি হবেন এটা জেনে যে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী গুজরাতি খিচুড়ি সম্পর্কে জানেন”। খানাপিনার পাশাপাশি ২০১৪ সালের নির্বাচনী প্রচারে মোদী যেভাবে হলোগ্রাম ব্য়বহার করেছিলেন, সে ব্য়াপারেও চর্চা করেন মরিসন।এ দিনের বৈঠকে দু’দেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং প্রতিরক্ষা-সহ বেশি কিছু বিষয় উঠে এসেছে। মোদী বলেন, “ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে একটা দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা এই সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে সহায়তা করেছে।” অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল ভারত। দু’দেশের মধ্যে যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে উঠেছে, তা শুধু ভারত-অস্ট্রেলিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলেও এই সম্পর্কের অনেক তাত্পর্য রয়েছে বলেও এ দিন জানিয়েছেন মোদী। তিনি বলেন, “অতিমারির এই সময়ে আমাদের এই স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।” মোদী আরও জানান, এটাই সেরা সময় দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করার। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীও স্কট মরিসনও মোদীকে বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেছেন। শুধু তাই নয়, মোদীকে ‘প্রযুক্তির পথপ্রদর্শক’ হিসেবেও সম্বোধন করেছেন মরিসন। বৈঠক শেষে মরিসন বলেন, “এই কঠিন সময়ে ভারত একটা ইতিবাচক শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে। আমাদের সম্পর্ককে আরও অনেক দূর নিয়ে যেতে হবে। আরও মজবুত করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “প্রযুক্তির পথপ্রদর্শক ভারত। যা আজকের দিনে ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক।” এই বৈঠকে দু’দেশের সমুদ্র বাণিজ্যও প্রসঙ্গও উঠে এসেছে।
2020-06-04