দেশে এই প্রথম সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১২ লক্ষ ছাড়াল, একদিনে আক্রান্ত ১.৬৮ লক্ষ

লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের ধাক্কায় পরিস্থিতি ক্রমেই বেসামাল হচ্ছে দেশে। গত ৬ দিন ধরে টানা এক লক্ষ ছাড়িয়েছে দৈনিক সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৯১২ জন। এক দিনে আক্রান্তের নিরিখে যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ। গত বছর থেকে এখনও অবধি দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৩৫ লক্ষ ২৭ হাজার ৭১৭ জন। সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশের দৈনিক মৃত্যুও বেড়েছে গত কয়েক দিনে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ৯০৪ জনের। গত বছর অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের পর ফের এত জনের মৃত্যু হল এক দিনে। এখনও পর্যন্ত মোট ১ লক্ষ ৭০ হাজার ১৭৯ জনের প্রাণ কেড়েছে এই ভাইরাস।

সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যাকে এক লাফে অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৯৩ হাজার। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে এখন সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১২ লক্ষ ১ হাজার ৯ জন। করোনার প্রথম পর্বেও এত সংখ্যক সক্রিয় রোগী ছিল না দেশে। পাশাপাশি গত কয়েক দিনে বেড়েছে সংক্রমণ হারও।

সংক্রমণের নিরিখে দেশের রাজ্যগুলির মধ্যে সবথেকে ভয়াবহ অবস্থা মহারাষ্ট্রের। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ হাজার ২৯৪ জন। যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ। একদিনে সে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৪৯ জনের। উত্তরপ্রদেশে দৈনিক আক্রান্ত সোমবার ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে। কর্নাটক, দিল্লি এবং ছত্তীসগঢ়েও সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। তামিলনাড়ু এবং কেরলে আক্রান্ত সাড়ে ৬ হাজারের বেশি। গুজরাত এবং মধ্যপ্রদেশে আক্রান্ত সাড়ে পাঁচ থেকে ছ’হাজারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। রাজস্থানে তা পাঁচ হাজারের আশপাশে। পশ্চিমবঙ্গেও গত ক’দিনে দৈনিক আক্রান্ত বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন চার হাজারেরও বেশি। অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানা, বিহার, পঞ্জাবে দৈনিক আক্রান্ত তিন থেকে সাড়ে তিন হাজারের আশপাশে। ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড এবং ওড়িশাতেও দৈনিক আক্রান্ত গত কয়েকদিনে বেড়েছে। হিমাচল প্রদেশ, গোয়াতেও ৫০০-র আশপাশে রয়েছে দৈনিক সংক্রমণ। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে করোনা দ্বিতীয় ঢেউয়ের রেশ তেমন নেই। সিকিমেও সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গত ক’দিনে সেখানে ২০-২৫ জন করে আক্রান্ত হচ্ছিল। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ জন।

দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ফের ঘুম উড়েছে প্রশাসনের। মধ্যপ্রদেশে ইতিমধ্যেই সপ্তাহান্তে লকডাউন শুরু হয়েছে। মহারাষ্ট্রেও সপ্তাহান্তে লকডাউনের পাশাপাশি রাত্রিকালীন কার্ফু চলছে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার কোনও লক্ষণ নেই। ১৪ এপ্রিলের পর সম্পূর্ণ লকডাউন জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে সে রাজ্যের প্রশাসন। এই পরিস্থিতির মধ্যেই দেশে চলছে টিকা উৎসব। ৪৫ বছরের বেশি বয়সি সকলে টিকা পাচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে টিকা নিয়েছেন ২৯ লক্ষ ৩৩ হাজার ৪১৮ জন। এ নিয়ে দেশে মোট ১০ কোটি ৪৫ লক্ষ ২৮ হাজার ৫৬৫ কোভিড টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.