কিছুদিন আগে জাল ভ্যাক্সিন কাণ্ডের অপরাধী দেবাঞ্জন দেবে একটি ছবি আমি পোস্ট করেছিলাম। ছবিতে কিছু মহিলারাও ছিল যাদের মধ্যে ওর বোনও বলে ছিল, এই তথ্যটা আমাকে আমার এক ফেসবুকের বন্ধু জানান এবং তিনি অনুরোধ করেন ওনার বোন নিষ্পাপ সুতরাং ছবিটা তুলে নিতে আমিও তার কথা রেখে মহিলাদের মুখ গুলো ঢেকে দি।
তারপর দেখলাম চোদপুরুষ টাইপের একজন মহাপুরুষ ফেসবুকে লিখেছেন যে দেবাঞ্জন আসলে প্রত্যাশা পূরণের অসম দৌড়ে জিতে গিয়ে এই প্রবঞ্চনা শুরু করে ইত্যাদি ইত্যাদি।
আজ দেবাঞ্জনের মা বলছেন দেবাঞ্জন অপরাধী নন, দেবাঞ্জনের উকিল বলছেন দেবাঞ্জন একজন মানসিক রোগী তাই তার শাস্তির বদলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।
আমি বলছি দেবাঞ্জন একজন মানসিক রোগী যখন, তখন তাকে আটকেই রাখাই হোক, কারণ মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে যখন সে IAS সেজে পৌরসভার অফিস খুলে মানুষকে জাল ভ্যাক্সিন দিতে পারে সেক্ষেত্রে ওকে ছেড়ে দিলে আবার যদি নিজের মা-বোনকে যদি খুন করে দেয় তখন আরও বিরম্বনার ব্যাপার।
দেখুন দেবাঞ্জনের ব্যাপারটা নিয়ে শাস্তি, তদন্ত এইসব বিষয় নিয়ে বেশি মাথা ঘামাতে হবেনা কারণ পশ্চিমবঙ্গ এই ব্যাপার গুলো খুবই সাধারণ ঘটনা সুদীপ্ত সেন, সারদা, রোজভ্যালি, পঞ্চায়েতের একশদিনের কাজ শুরু করে টেট হোক বা সিভিক নিয়োগ সব দুর্নীতিতে প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহান ব্যক্তিরা,পুলিশ সবাই জড়িয়ে আছে।এই ট্রাডিশন আজকের না বহু আগের থেকেই পশ্চিমবঙ্গে এই ব্যবস্থাই চলছে।
দেখুন দেবাঞ্জন যে জাল সেটা পুলিশ কিন্তু আগেই জানত আমি নিশ্চিত,কিন্তু কিছু করতে পারেনি তার প্রধান কারণ রাজনৈতিক চাপ। ২০২০ সালের মার্চে দেবাঞ্জনকে বিধান নগর কমিশনারেটের কোন একটি থানায় আটক করে এক ব্যক্তিকে ভুয়া IAS সেজে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা আত্মসাতের অপরাধে।সেইসময় পুলিশ কেবল দেবাঞ্জনের থেকে একটা মুচেলেখা নিয়ে ছেড়ে দেয়, কোন প্রকার তদন্ত না করেই, আমি মনে করি এই পুলিশী উদাসীনতা পেছেনে অবশ্যই রাজনৈতিক চাপ ছিল( আমি এই ব্যাপার গুলো যথেষ্ট বুঝি)।
যদিও এই ঘটনার পরে পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি তবুও বলতে পারি দেবাঞ্জন পুলিশের সার্ভিলেন্সের মধ্যেই ছিল এবং পুলিশও তার জাল পৌরসভার অফিসের কথা জানত তবে রাজনৈতিক কারণ …… ছিঁড়তে পারেনি এবং কসবার যে অঞ্চলে দেবাঞ্জনের জাল পৌরসভার অফিস ছিল সেই অঞ্চলের কাউন্সিলর থেকে শুরু করে সব নেতাই জানত যে ঐ অফিস ও দেবাঞ্জন জাল, কারণ পৌরসভার একটা অফিস যদি কোন অঞ্চলে থাকে তাহলে সেই অঞ্চলের পৌর প্রতিনিধি তার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল থাকবেনা এই ভাবনাটাই চুতিয়া টাইপের। যেমন …… দেবাঞ্জনের পরিবারের নিষ্পাপতা।
সবথেকে আশ্চর্যের ঘটনা ঘটে ২০২১ সালের মে মাসের ৩১ তারিখের, দৈনিক আজকাল পত্রিকার ৭ পাতায়, সেখানে বড় করে ছবি দেওয়া হয় দেবাঞ্জনের দুটি ভেজাল তেলের কারবারি সঙ্গে এবং খবরে উল্লিখিত করে যে কোলকাতা পৌরসভার যুগ্ম কমিশনার দেবাঞ্জন দেবের উদ্যোগে দুজন ভেজাল তেলের কারবারিকে আটক করা হয় এবং পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
আর প্রশ্ন এখানেই দেবাঞ্জন যদি পুলিশের হাতে অপরাধিদের তুলে দেয় সেক্ষেত্রে মূল অভিযোগকারী হিসাবে পৌরসভার ও দেবাঞ্জনের নাম কেস ডাইরিতে থাকবে। সুতরাং পৌরসভাও জানেন তাদের যুগ্ম কমিশনার একটি জাল তেল চক্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশে হাতে তুলে দিয়েছে এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তিও কোলকাতা পুলিশের তরফে পৌরসভার আধিকারিকে পাঠানো হয়েছে যেখানে মূল অভিযোগকারী হিসাবে যুগ্ম কমিশনার দেবাঞ্জনদের নাম উল্লেখ ছিল।আর পুলিশ নিশ্চয় যুগ্ম কমিশনারের পরিচয় যাচাই করেই অভিযোগ নথিভূক্ত করেছিল এবং আজকাল পত্রিকাও নিশ্চয় সবকিছু যাচাই-বাছাই করে রিপোর্টি করে ছিল। যদি না করে সেক্ষেত্রে দায়িত্ব অবহেলার জন্য পুরো-আধিকারিক, পুলিশ-আধিকারিক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন অপদার্থ সংবাদ মাধ্যমটি অবিলম্বে আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত কর্তব্যের অবহেলা করবার জন্য এবং একজন প্রতারকের হয়ে কাজ করবার জন্য।
যদিও পুরোটাই রাজনৈতিক নেতাদের মদতে হয়েছে কিন্তু ওদের ছেঁড়া যাবেনা ঠিক আগের মতোই।
বিরিঞ্চি