হাসপাতালের মর্গে মৃতদেহ রাখার জায়গা নেই৷ বিদেশ বা অন্য কোনও রাজ্যে নয়৷ এই চিত্র বাংলার রাজধানী কলকাতার (Kolkata)৷
করোনা হাসপাতাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ (Kolkata Medical College) ৷ সূত্রের খবর,এই হাসপাতালে গত ৪৮ ঘণ্টায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ ফলে হাসপাতালের মর্গে মৃতদেহ রাখার জায়গা নেই৷ কারণ এই হাসপাতালের মর্গ এবং অ্যানাটমি বিভাগে ৫টি দেহ রাখার ব্যবস্থা আছে৷
এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিষয়টি সামলাতে মৃতদেহ ‘ম্যানেজমেন্ট’-এর দায়িত্বে আনা হল এক অ্যাসিস্টেন্ট সুপারকে৷ এবং মৃতদেহ রাখার বাড়তি ব্যবস্থা করতে আবেদন জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয় স্বাস্থ্য দফতরকে৷ জানা গিয়েছে,সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে৷
এরপরই মৃতদেহ রাখার জন্য ৬টি ডিপ ফ্রিজ বসানোর কাজ শুরু করেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ৷ এছাড়া ৫টি দেহ রাখার ব্যবস্থা আগেই ছিল৷ ফলে বর্তমানে এই হাসপাতলে মোট ১১টি মৃতদেহের জায়গা হল৷
কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল৷ হাসপাতাল সূত্রে খবর, করোনা আবহে বেসরকারী হাসপাতাল এবং অন্য হাসপাতাল থেকে রোগীকে মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হচ্ছে৷ এর অধিকাংশই ভেন্টিলেশন নিয়ে আসছেন৷ আমরা চিকিৎসা শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যে তাদের মৃত্যু ঘটছে। তাই মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। তবে যে শুধু করোনা মৃত্যু হচ্ছে,তা নয়- SARI (Severe Accute Respiratory Infection) এ আক্রান্ত হয়েও মৃত্যু হচ্ছে৷
রাজ্য সরকার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালকে কোভিড-১৯ (Covid-19) আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হবে৷ এই নিয়ে রাজ্যে কোভিড হাসপাতালের সংখ্যা হল ৬৮৷
এদিকে করোনা চিকিৎসার জন্য বিশেষ ফাইট ম্যাপ তৈরি করেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ।কোনও রোগী হাসপাতালে এলে কোথায় কীভাবে তাঁর পরীক্ষা হবে, কোন ওয়ার্ডে তাঁকে ভর্তি করা হবে তার দিক নির্দেশ থাকছে ওই ম্যাপে।
জানা গিয়েছে, করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা হয়নি যাঁদের অথবা সন্দেহ রয়েছে সংক্রামিত এমন রোগীকে প্রথমে টেস্ট করানো হবে। তার জন্য তাঁকে পাঠানো হবে গ্রিন ফার্স্ট ফ্লোরে (দোতলায়)। সেখানে নাক বা গলা থেকে নমুনা, রক্ত বা ডিম্বানু-শুক্রাণু নিয়ে সংক্রমণের পরীক্ষা হবে। রিপোর্ট নেগেটিভ এলে গ্রিন থার্ড বা ফোর্থ ফ্লোরে (চারতলা বা পাঁচতলায়)পর্যবেক্ষণে পাঠানো হবে। যদি দেখা যায় পরবর্তীকালে রোগীর মধ্যে উপসর্গ দেখা গিয়েছে বা অবস্থা গুরুতর তাহলে তাঁকে গ্রিন সেকেন্ড ফ্লোরে সিসিইউ তে ভর্তি করা হবে।
এমনকি কোনও রোগীর ডায়ালিসিস, সিসিইউ বা ভেন্টিলেশনের দরকার হলে তার ব্যবস্থা করা হবে।স্টেন্ট, পেসমেকার বসানো বা বাইপাস সার্জারির ব্যবস্থাও থাকছে ফাইট ম্যাপে। রোগী সুস্থ হওয়ার পর কীভাবে ছুটি পাবেন তাও ম্যাপে উল্লেখ করা রয়েছে।