১৭ বছর বয়সেই ভারতের সর্বকনিষ্ঠ বিজ্ঞানীর শিরোপা বাঙ্গলার অপরূপের

মাত্র ১৭ বছর বয়সেই নিজের পরিচয় একজন বিজ্ঞানী। অবিশ্বাস্য হলেও বাস্তবে এমনই অসম্ভব সম্ভব করেছে দুর্গাপুরের (Durgapur) অপরূপ রায়। নিজের একান্ত প্রচেষ্টায় ভারতের সর্বকনিষ্ঠ বিজ্ঞানীর (Youngest Scientist) শিরোপা অর্জন করে ফেলেছেন অপরূপ রায়। দূষণরোধে প্লাস্টিক ব্যাবহার নিষিদ্ধ করতে যখন গোটা দেশ তোলপাড়, তখন প্লাস্টিককে বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশ্লেষণ করে বায়ো-প্লাস্টিকে রূপান্তরিত করার বিশেষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন তিনি।ফলত বৈজ্ঞানিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন একাদশ শ্রেণির ছাত্র অপরূপ। শুধু তাই নয়, গোবর ব্যবহার করে প্রাকৃতিক উপায়ে স্বল্পমাত্র খরচে মশার কীটনাশক তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন সপ্তদশ বর্ষীয় এই তরুণ। এই দুই অভিনব আবিষ্কারের জন্য দুর্গাপুরের এই তরুণের সঙ্গে কাজের প্রস্তাব দিয়েছে আমেরিকার নাসা (Nasa)।

দুর্গাপুরের (Durgapur) গোপালমাঠ গ্রামের বাসিন্দা অপরূপ রায় দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। বায়ো-প্লাস্টিকের আবিষ্কার সম্পর্কে অপরূপ বলেছেন,প্লাস্টিক ব্যাবহারের ফলে চারদিকে দ্রুতগতিতে দূষণ বাড়ছে এবং নিকাশি ব্যবস্থার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আমি সেদিকটা মাথায় রেখে প্লাস্টিককে বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশ্লেষণ করে বায়ো-প্লাস্টিকে রূপান্তরিত করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছি। এই বায়ো প্লাস্টিক মাত্র ১-২ মাসের মধ্যে মাটির সঙ্গে মিশে যাবে। সরকার যদি এই বায়ো প্লাস্টিক বৃহত্তম ক্ষেত্রে উৎপাদন করে তাহলে ভারত উন্নতির শিখরে পৌঁছে যাবে।

অন্যদিকে, কম খরচে মশা-নিধনের ওষুধ তৈরি সম্পর্কে দুর্গাপুরের তরুণ বলেছেন, গ্রামে থেকে দেখেছি, অনেকে গোবরের ঘুঁটে ইত্যাদি ব্যবহার করে মশা তাড়ায়। সেই ভাবনা থেকে আমি গোবর নিয়ে রিসার্চ করে মশা তাড়ানোর কীটনাশক তৈরি করেছি। ইতিমধ্যে অপরূপের এই রিসার্চ পেপারটি ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ সায়েন্স অফ রিসার্চ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। এরপরই আমেরিকার NASA মেল পাঠিয়ে তাঁর সঙ্গে কাজ করার অফার দিয়েছেন বলে জানান অপরূপ।

তবে কেবলমাত্র দুটি আবিষ্কারেই থেমে নেই অপরূপ। ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য ইতিমধ্যেই সহজভাবে দুটি রসায়ন বই লিখেছেন অপরূপ। বই দুটি হল- ‘প্রবলেমস ইন জেনারেল কেমিস্ট্রি’ এবং ‘মাস্টার আইসিএসই কেমিস্ট্রি সেমেস্টার ১ ও ২’। বই দুটি বিভিন্ন স্কুলে সহায়ক পাঠ্যপুস্তক হিসাবে পড়ানো হবে বলে ভীষণ আশাবাদী দুর্গাপুরের তরুণ। বই দুটি সহকারী পাঠ্য হিসাবেও ছাত্র-ছাত্রীরা ব্যবহার করতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, বই লেখা এবং অঙ্কের দুরূহ সমাধান করে ভারতের সর্বকনিষ্ঠ বিজ্ঞানীর (Youngest Scientist) তকমা পেয়েছেন অপরূপ রায়। গণিতের অত্যন্ত জটিল সমস্যার সহজ সমাধান করার জন্য সাম্মানিক স্বীকৃতি স্বরূপ কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাথামেটিক্যাল গেজেটেও প্রকাশিত হয়েছে তাঁর নাম। এছাড়া হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মিনি PHD প্রোগ্রামে’ গবেষণা করার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন বাংলা তথা ভারতের এই খুদে বিজ্ঞানী। নাসা পরিচালিত ‘ইও ড্যাসবোর্ড হ্যাকাথন’ নামে একটি গবেষণা প্রকল্পে সহকারী গবেষক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি তিনি বিজ্ঞান বিষয়ক প্রতিযোগিতায় বেশ কয়েকটি পদকও লাভ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.