করোনা পরিস্থিতিতে শর্তসাপেক্ষে পুরীতে রথযাত্রায় অনুমতি দিল সুপ্রিম কোর্ট। রথযাত্রার
আগের দিন সোমবার শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, একমাত্র রথের সঙ্গে জড়িত যাঁরা সেই সেবাইত
ও পাণ্ডারা ছাড়া কেউই থাকতে পারবেন না। মানতে হবে করোনা সংক্রান্ত সবরকম স্বাস্থ্যবিধি।
রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রের সমন্বয়ের ভিত্তিতে রথের আয়োজন করা যাবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ
আদালত।
করোনা পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য
ও নাগরিক নিরাপত্তার স্বার্থে এ বছর ওডিশায় রথযাত্রার অনুমতি দেওয়া যাবে না বলে আগেই
জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট । সেই রায় পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে
একাধিক পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল। সোমবার সেই আবেদনের শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান
বিচারপতি এস এ বোবদে, বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী ও বিচারপতি এ এস বোপান্না এই তিন সদস্যের
বেঞ্চে । শুনানিতে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, লোকসমাগম ছাড়া রথে তাদের আপত্তি নেই।
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, রখযাত্রা কোটি কোটি মানুষের বিশ্বাসের জিনিস। এবার
যদি রথ না বেরোয় তবে আগামী ১২ বছর রীতি অনুযায়ী রথ বেরোতে পারবে না। কেবলমাত্র যেসব
লোকের করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ, তাঁরাই রথের কাছে থাকবেন। একই বক্তব্য ওডিশা সরকারেরও।
তারাও নির্দিষ্ট কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে রথযাত্রার পক্ষে। ওডিশা সরকার এও জানিয়েছে,
তাদের সব বিভাগই প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো
তারা কাজ করবে। আবেদনকারী ওডিশা বিকাশ পরিষদ
জানিয়েছে, পুরীর মন্দিরের অন্তত ২৫০০ জন পাণ্ডা রয়েছেন। কেবল যাঁরা রথযাত্রার সঙ্গে
জড়িত তাঁদেরই ঢুকতে দেওয়া হোক।
এরপরই বেশ কিছু শর্তে ওডিশার
পুরীতে রথযাত্রার অনুমতি দিল সুপ্রিম কোর্ট। রথযাত্রার আগের দিন সোমবার শীর্ষ আদালত
জানিয়েছে, একমাত্র রথের সঙ্গে জড়িত যাঁরা সেই সেবাইত ও পাণ্ডারা ছাড়া কেউই থাকতে
পারবেন না। মানতে হবে করোনা সংক্রান্ত সবরকম স্বাস্থ্যবিধি। সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে,
পুরীর জগন্নাথ মন্দির কমিটি, রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে সমন্বয়ে রথযাত্রার
আয়োজন করা যাবে। সেই সঙ্গে এও জানান হয়েছে যে, তাঁরা কেবলমাত্র পুরীর রথ নিয়েই পর্যালোচনা
করছেন, ওডিশার অন্য কোনও রথ নিয়ে নয়।
এর আগে ১৮ জুন এবারের পুরীর রথযাত্রা
স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। যদিও পুরোপুরি স্থগিতাদেশ না দিয়ে রথযাত্রা
জনসমাগমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার আর্জি জানিয়েছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।
কিন্তু প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, ‘রথযাত্রার অনুমতি
দিলে প্রভু জগন্নাথ আমাদের ক্ষমা করবেন না। জনস্বাস্থ্য ও নাগরিক নিরাপত্তার স্বার্থে
এ বছর ওডিশায় রথযাত্রার অনুমতি দেওয়া যাবে না।’ সেই রায় পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানিয়ে
সুপ্রিম কোর্টে একাধিক পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল। রথযাত্রার আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ
হয়েছিল আবেদনকারী ওডিশা বিকাশ পরিষদ সহ একাধিক সংগঠন, যাতে যোগ দিয়েছিল ওডিশা সরকার
। রথযাত্রার আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্রও । যন্ত্রচালিত
রথযাত্রার আবেদন জানিয়েছিলেন পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের প্রধান সেবাইত। শেষ পর্যন্ত সোমবার
কেন্দ্র, রাজ্য সহ সব পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে শর্তসাপেক্ষেপুরীতে রথযাত্রায় অনুমতি
দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ ।