সেই সময়ে পাকিস্তানের দাবিতে গ্ৰেট ক্যালকাটা কিলিং হয়ে গেছে। ধর্মের নামে মুসলমানদের তরবারি কোটি কোটি হিন্দুদের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। সেই হিন্দুবিদ্বেষী আগুন এবার এসে পড়ে বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলায় যেখানে গান্ধীর আগমনে আগুনে ঘি সঙ্চার করে। গোলাম সারোয়ার নামে তত্কালীন একজন এম-এল-এ ঐ জেহাদের ডাক দেন। গোলাম সারোয়ারের ডাকের অনুলিপি পাওয়া যায়নি, কিন্তু জর্জ সিমসন রায়টের যে বিবরণ দিয়েছেন তার এক জায়গায়া আছে- “জোর করিয়া ব্যপক ভাবে দলে দলে হিন্দুদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করিবার বিবরণ প্রত্যেক গ্রামেই পাওয়া গিয়েছে। অনেক স্থানে পুরুষেরা আপত্তি করিলে তাহাদের স্ত্রীদের আটক করিয়া তাহাদেরকে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিতে বাধ্য করা হইয়াছে।” (রমেশচন্দ্র মজুমদার, বাংলাদেশের ইতিহাস, ৩য় খন্ড)
এখন পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি অপর একটি গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংয়ের অবস্থায় উপনীত হয়েছে। ঘটনাটি গত শনিবারের। ঘটনা স্থান দক্ষিণথানা মাকুয়া , পঞ্চানন তলা , বিজেপি বেদী। মোড়ের বাঁকের মুখে একটি দ্রুত ধাবমান একটি ট্যাক্সির সামনে একটি ছোট বালকের সাইকেল এসে পড়ে। এরপর উভয় পক্ষের কিছু কথা কাটাকাটি শুরু হলে, ড্রাইভার এবং তার সাথীরা বালকটিকে মারতে শুরু করে।
প্রসঙ্গত , ছেলেটি ট্যাক্সির ধাক্কায় পড়ে গিয়েছিল। তার উপর যখন মারধর শুরু হয় , তখন স্থানীয় বাসিন্দা লিপিকা নস্কর ( স্বামী বিন্দুনাথ নস্কর) এবং পথচলতি মানুষজন বালকটিকে মারধরের কারণ জিজ্ঞাসা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা উক্ত ঘটনার প্রতিবাদ করতে শুরু করলে ট্যাক্সি চালক ও তার সঙ্গীরা ওই স্থান ত্যাগ করে চলে যায়। স্থানীয়রা আহত বালকটিকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়। আহত বালকটির নাম দিগন্ত সর্দার, পিতা পুলক সর্দার , বয়স ১৪।
উক্ত ঘটনা ঘটার প্রায় ২০ মিনিট সেই ট্যাক্সি ড্রাইভার আরো অধিক লোক জুটিয়ে ওই স্থানে ফিরে আসে এবং এলাকা বাসীসহ হিন্দুদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে এবং বিজেপির বেদীটি ভাঙার চেষ্টা করে। উক্ত প্রত্যেক জনের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল ধারালো অস্ত্র দেখে এলাকাবাসী রা ভয়ে দূরে সরে যায়।
এরপর ওই দুষ্কৃতকারী ট্যাক্সি ড্রাইভার ও তার সঙ্গী সাথীরা মিলে পাশের বাড়িতে ইঁট ছুঁড়তে থাকে। ফলে বাড়ির দরজা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কাঁচ দ্রুত ভেঙে গিয়ে ওই বাড়ির মেয়ের মুখে ও গলায় আঘাত করে , ফলে রক্তাক্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। মেয়েটির মুখে ও গলায় গভীরভাবে আঘাত লাগে। কান্না এবং চিৎকারের আওয়াজ শুনে আশেপাশের লোকজন ছুটে এলে ওই দুষ্কৃতীরা পাশের বস্তিতে পালিয়ে যায়। এই দুষ্কৃতকারীদের একজনকে স্থানীয় মানুষরা চিহ্নিত করেন ওই ছেলেটির নাম শাহনায়াজ। ওই দুষ্কৃতকারীরা প্রত্যেকে মুসলিম বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারা যায়।
ঘটনাটি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয় ।মেডিকেল রিপোর্ট করা হয়। স্থানীয়রা দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য বিক্ষোভ করতে শুরু করে। থানার বড়বাবু এসে স্থানীয়দের রাগ প্রশমিত করেন। উক্ত আহত মেয়েটির মুখে ও গলায় পাঁচটি করে স্টিচ পড়েছে ।
পুলিশের গাড়ি তদন্তে এসে দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দেন । দুষ্কৃতীদের একজনকে অ্যারেস্ট করা হয়। পরেরদিন স্থানীয়রা পুনরায় বিক্ষোভ শুরু করে দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে । এর ফলে আরো একজনকে গ্রেফতার করা হয় । কিন্তু মূল অভিযুক্ত এখনো অধরা।